প্র: মেয়ের সঙ্গে আপনার ভীষণ বন্ডিং। তাও বাইরে পড়তে পাঠালেন কেন?
উ: আমি পাঠাইনি। পুরোটাই মানির সিদ্ধান্ত। মা বলে জোর করে অথরিটি নেব তেমন নয়। ও সাইকোলজি নিয়ে বাইরে কোথাও পড়তে চাইছিল। অনেক জায়গাতেই অ্যাপ্লাই করেছিল। মুম্বইয়ের সোফিয়া কলেজে সুযোগ পেয়ে যাওয়ায় ওটাই বেছে নেয়। দেশের অন্যতম সেরা একটা কলেজ, তাই আমার আপত্তির কোনও কারণ ছিল না।
প্র: তা ছাড়া আপনার মুম্বইয়ে একটা বেসও আছে। সেটাও বড় সুবিধে।
উ: তা আছে। তবে ইন্টারনেটের যুগে জায়গাটা এখন কোনও সমস্যা নয়। আয়রনি হল, যে সময় মানি মুম্বই গেল, ঠিক তখন থেকেই আমার কলকাতায় পরপর কাজ পড়ল। ওর ভর্তির সময়ও আমি থাকতে পারিনি। সবটাই সুমন (মুখোপাধ্যায়) করেছে।
প্র: মুম্বইয়ে কি আপনার কাজের তেমন সুবিধে হল না?
উ: দুটো জায়গার মধ্যে ব্যালান্স করতে গেলে একটু মুশকিল হয়। অনেকগুলো বিজ্ঞাপনের কাজ এসেছিল। কিন্তু এখানকার় ডেটের সঙ্গে ক্ল্যাশ করছিল। তাই ছাড়তে হল। যে মরাঠি ছবিটা করেছি তার পোস্ট প্রোডাকশন চলছে। ওয়েব সিরিজও করেছি। তার পর এখানে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। ‘ব্যোমকেশ ও অগ্নিবাণ’ করলাম। সত্রাজিতের (সেন) ‘মাইকেল’ মুক্তি পাবে সামনে।
প্র: কলকাতার এক প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে ঝামেলা ছিল, সেটা তো মিটিয়ে ফেলেছেন...
উ: আসলে কী ঝামেলা ছিল, নিজেও ঠিক জানি না! কাজের জায়গায় মনোমালিন্য জিইয়ে রেখে কোনও লাভ হয় না। ইন্ডাস্ট্রিতে ১৫-১৬ বছর কাজ করছি। কারও যদি মনে হয়, এই চরিত্রটা স্বস্তিকা ছাড়া আর কেউ করতে পারবে না, তা হলে সে ঠিক আমার কাছেই আসবে। ব্যক্তিগত সমীকরণ যা-ই হোক না কেন।
প্র: স্বস্তিকা কি সব ঝামেলা মিটিয়ে ফেলার মুডে? সম্প্রতি এক পার্টিতে আপনার দুই ‘প্রাক্তন’-এর সঙ্গে দিব্যি খোশগল্প করেছেন...
উ: বুঝেছি কোন পার্টির কথা বলছেন। জিতের সঙ্গে আমার যত বার দেখা হয়েছে, ভাল ভাবেই কথা বলেছি। এ বার ওকে বললাম, আমার চল্লিশ বছর বয়স হওয়ার আগে একটা কমার্শিয়াল ছবি করতে চাই। দিনক্ষণ মেপে বলেও দিয়েছি, ওর হাতে কতটা সময় আছে। ভেবে বলবে, বলেছে। আর এখন তো ও নিজেই প্রযোজক।
আরও পড়ুন:'উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাত্রা পাল্টে ফেলেছি'
প্র: আর এক প্রাক্তনের সঙ্গেও তো খুব গল্প করেছেন। ছবিতে কাজ করবেন বলেও শোনা যাচ্ছে।
উ: পার্টিতে অনেক লোক ছিল। কেউ যদি যেচে এসে কথা বলে, কিছু করার নেই। কারও সঙ্গে সম্পর্ক ওয়র্ক করেনি মানে আর কথা বলব না, এমনও নয়। আমি একটা কমিটেড সম্পর্কে রয়েছি। আর কিছু ভাবতে চাই না। (একটু থেমে) ব্যক্তিগত সম্পর্কের জায়গায় যে নামগুলো উঠে আসে, সেগুলো নিয়ে ক্ল্যারিফাই করেও লাভ হয় না। সত্যি বলেও লাভ নেই। যাদের যেটা নিয়ে গসিপ করতে ভাল লাগে, তারা সেটাই করবে। ডিপ্লোম্যাটিক হতে পারব না। তবে আমার সাক্ষাৎকারে অন্য কাউকে প্রচার দিতে চাই না।
প্র: হাতে গোনা যে ক’জন শিল্পী ডিপ্লোম্যাসির ধার ধারেন না, আপনি তাঁদের মধ্যে অন্যতম...
উ: আমার আলাদা ইমেজ রক্ষার দায় নেই। বাইরের লোকের সঙ্গেও যেমন, বাড়ির লোকের সঙ্গেও তেমন। কোনও দিন নিজের ব্যক্তিগত সম্পর্ক লুকোইনি। ‘উই আর জাস্ট ফ্রেন্ডস’ বলে নাটকও করিনি। তা সত্ত্বেও দেখেছি, যেটা লোকেদের বেচতে সুবিধে হয়, তারা সেটাই করে। তাই মৈনাক ভৌমিকের সঙ্গে আমাকে জড়িয়ে কোনও গসিপ হয়নি। মৈনাক আর আমার প্রেমের গল্পটা ঠিক বেচা যাবে না। গেলে এত দিনে আমাদের চারটে বাচ্চা হয়ে যেত! একটা পার্টিতে সাত-আট জন মিলে গল্প করছি, সেখানে আমার অতীতের কেউও আছে। গসিপ করার সময় বাকি সকলে মাইনাস হয়ে যাবে, ওই বিশেষ লোকটাকে নিয়েই আলোচনা চলবে। আর ধাপে ধাপে এই গসিপগুলোয় রং চড়তে থাকবে।
প্র: সুমন মুখোপাধ্যায়ে সঙ্গে আপনার সম্পর্ক আছে না নেই, তা নিয়েও চর্চা চলছে কিন্তু...
উ: (মুখে বিরক্তির ছাপ স্পষ্ট) কাউকে কোনও দিন বলতে শুনলাম না, এরা একে অপরের সঙ্গে খুব ভাল আছে। বরং এরা এত দিন আছে কী করে? কবে ব্রেকআপ হবে? শুধুই শারীরিক সম্পর্ক টিকিয়ে রেখেছে। নয়তো টাকার জন্য আছে...এই সব কথাই বলা হয়। দুটো মানুষ এ সবের বাইরেও যে ভাল থাকতে পারে, সেটা কেউ বিশ্বাস করে না। এটা শুধু মিডিয়া বা ইন্ডাস্ট্রির প্রেক্ষিতে বলছি না। সাধারণ মানুষের মধ্যেও রয়েছে এই জিনিসটা। আমি আর সুমন একসঙ্গে আছি না নেই, তার চর্চাটা চলুক। লোকে যা ইচ্ছে ভাবুক। আমি আর কিচ্ছু বলব না। আগে এ সব কথায় খুব রেগেমেগে উত্তর দিতাম। এখন আর দিই না।
প্র: আপনি কিন্তু আগের চেয়ে এখন অনেক কম আক্রমণাত্মক...
উ: (হাসি) আর ভাল লাগে না। এখন নিজের কান দুটো সত্যিই বন্ধ করে দিয়েছি। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা ছবি দিলে বলবে, আপনার মুখে বয়সের ছাপ পড়েছে। আরে ছাপ পড়াটাই তো স্বাভাবিক। আবার অনেকে বলে, এত বড় মেয়ে আছে, তা বোঝা যায় না। আসল বয়সের তুলনায় কমবয়সি দেখতে লাগা তো ক্রেডিট। এখন আমার যা চেহারা, তাতে অনেক ম্যাচিওর্ড চরিত্র পাচ্ছি। সেটা ভাল দিক।
প্র: আর কী কাজ করছেন?
উ: কিছু ছবির কথা হচ্ছে। দেখা যাক।একটু বেছে কাজ না করলে মুশকিল। মাঝপথে ছবি বন্ধ হয়ে যাওয়া তো আশ্চর্যের নয়!
প্র: বিশেষ কোনও ছবির কথা বলছেন?
উ: নাম করে আর কী বলব! প্রযোজক-পরিচালক কারও কোনও দায়িত্ব নেই। সব দায় অভিনেতাদের। ছবির জন্য চুল কাটতে হবে, রং করতে হবে, তার পর সেই কাজটাই আর হবে না! পয়সাও পাওয়া যাবে না। আগে শুনতাম, যার কিছু হয় না, সে অভিনেতা হয়। এখন আধখানা শর্ট ফিল্ম করেই সব পরিচালক হয়ে যাচ্ছে। এ বার অন্য একটা ব্যবসার কথা ভাবতে হবে, যেখান থেকে টাকাটা অন্তত আসবে। একটা প্ল্যান চলছে...বলব আপনাদের।
ছবি: সোমনাথ রায়; মেকআপ: নবীন দাস; পোশাক: সায়ন্তন সরকার
জুয়েলারি: সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডস; স্টাইলিং: অজপা মুখোপাধ্যায়
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy