Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

রাজেশ খন্নার জন্যই কি ক্ষতি হয়েছিল?

ছোট পরদায় অভিনয়, পছন্দ-অপছন্দ ও রাজেশ খন্না প্রসঙ্গে কথা বললেন অঞ্জু মহেন্দ্রুছোট পরদায় অভিনয়, পছন্দ-অপছন্দ ও রাজেশ খন্না প্রসঙ্গে কথা বললেন অঞ্জু মহেন্দ্রু

অঞ্জু মহেন্দ্রু।

অঞ্জু মহেন্দ্রু।

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী
শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৭ ০১:২৩
Share: Save:

তাঁর বয়স এখন ৬৯ বছর। বাসু ভট্টাচার্যের হিন্দি ছবি ‘উসকি কহানি’তে (১৯৬৬)নায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন অঞ্জু মহেন্দ্রু। তবে ছবির নায়িকা হওয়ায় কোনও দিনই নাকি নজর ছিল না বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর। নব্বইয়ের দশক থেকে ধারাবাহিক ভাবে তিনি ছোট পরদার পরিচিত মুখ। জনপ্রিয় সিরিয়াল ‘স্বভিমান’, ‘কসৌটি জিন্দেগি কী’, ‘কুছ তো লোগ কহেঙ্গে’, ‘ইয়ে হ্যায় মহব্বতেঁ’ হয়ে হালফিলে স্টার প্লাসের ধারাবাহিক ‘রিস্তো কা চক্রব্যূহ’... অঞ্জুর গতি অপ্রতিরোধ্য।

এত বছর ধরে কাজ করার পরেও নিজেকে উজ্জীবিত রাখেন কী ভাবে? ‘‘আমি একদম একা মানুষ। সারা দিন যদি ঘরের কাজকর্মে নিজেকে আটকে রাখি, তবে খুব তাড়াতাড়ি বার্ধক্য গ্রাস করবে। আমি বৃদ্ধা হতে চাই না’’, স্পষ্ট জবাব অঞ্জুর। ‘‘আর এই একটা কাজই আমি ভাল জানি। তাই সব সময় মনের জানালা খুলে রাখি। নতুন শেখার চেষ্টা করি।’’

এই ধারাবাহিকে নতুনত্ব কী পেলেন? ‘‘এর গল্প গতে বাঁধা শাশুড়ি-বউমার কাহিনি নয়। আমার চরিত্রটাও বেশ অন্য রকম। গল্পের বুনন মজবুত। সব মিলিয়ে এই ধারাবাহিক পছন্দ হয়েছে’’, বললেন ‘রিস্তো কা...’র গায়ত্রী বিক্রম সিংহ। কাজের ধারায় কি কোনও পরিবর্তন এসেছে? ‘‘অভিনয়ের ব্যাপারটা তো একই রকম রয়ে গিয়েছে। কিছু বদলালে, সেটা হল টেকনিক্যাল বিষয়। ক্যামেরার মান উন্নত হয়েছে। তবে এর বেশি কিছু চোখে পড়ে না।’’

টেলিভিশনে কাজ করার আগে অঞ্জু কিন্তু পরপর অনেক ছবিতে অভিনয় করেছেন। ‘জুয়েল থিফ’, (১৯৬৭), ‘বন্ধন’ (১৯৬৯), ‘দস্তক’ (১৯৭০)...। তবে কোনও দিনই সে ভাবে মুখ্য চরিত্রে দেখা যায়নি তাঁকে। অভিনেত্রীর কথায়, ‘‘সে বিষয়ে আমার কোনও ক্ষোভ নেই। কারণ ছবির জন্য আমি নই। এমনকী এখনও ‘পেজ থ্রি’, ‘দ্য ডার্টি পিকচার’-এর মতো যে ছবিগুলো করেছি, তা শুধু প্রস্তাব এসেছিল বলেই। ছবির কাজ আমি উপভোগ করি না। টেলিভিশনই আমার সব।’’

আরও পড়ুন:‘অভিনয় আমার জীবনের একটা অংশ মাত্র’

রাজেশ খন্না ও অঞ্জুর প্রেমপর্ব নিয়ে এক সময়ে ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক চর্চা হয়েছে। সেই প্রেম পরিণয়ে পরিণতি না পেলেও রাজেশের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় ছিল অঞ্জুর। এমনকী রাজেশের শেষের বছরগুলিতে হাসপাতাল-চিকিৎসকের দায়িত্ব নিয়েছিলেন তাঁর সাত বছরের লিভ-ইন পার্টনার। রাজেশের শেষযাত্রায় অঞ্জুর বাঁধ-না-মানা চোখের জল নজর কেড়েছিল সংবাদমাধ্যমের। তবে শোনা যায়, সেই রাজেশের জন্যই নাকি তাঁর কেরিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল? অঞ্জুর কথায়, ‘‘এটা ঠিক কথা নয়। আসলে আমি কোনও দিনই উচ্চাকাঙ্ক্ষী নই। জীবন যেমন খাতে চলে, আমিও সেই ধারার সঙ্গে বয়ে যাই। যদি আমি উচ্চাকাঙ্ক্ষী হতাম, তবে গল্পটা অন্য রকম হতো।’’ কিংবদন্তি ক্রিকেটার গ্যারি সোবার্সের সঙ্গেও তাঁর সম্পর্কের কথা বিশ্ববিদিত।

অঞ্জুর এগারো বছরের দাম্পত্যে দাঁড়ি পড়ে সেই ১৯৮৫ সালে। তার পর কখনও বিয়ের কথা ভাবেননি? ‘‘একদম নয়। এই বেশ ভাল। কাউকে কোনও জবাবদিহির বালাই নেই। নিজের মতো থাকি-চলি। আমি হ্যাপিলি ইনডিপেন্ডেন্ট।’’

অঞ্জুর অবসর কাটে রাস্তার পশুদের সেবা-যত্ন করে। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে রাস্তার কুকুর, বেড়াল, গরুদের খাওয়ান তিনি। এ ছাড়া শখ আছে বাগান সাজানোরও। নতুন প্রজন্মের অভিনেত্রীদের মধ্যে নারায়ণী শাস্ত্রী, মানসী সালভি আর উর্বশী ঢোলাকিয়া তাঁর পছন্দের।

বয়স তাঁর সৌন্দর্য এখনও কেড়ে নিতে পারেনি। তবে ফ্যাশন, খাওয়াদাওয়া, ছবি— কোনও কিছু নিয়েই মাথাব্যথা নেই একাকী অভিনেত্রীর। যাঁর ভাষায়, ‘‘বোকাসোকা, সাধারণ হয়ে থাকাতেই আমার আনন্দ।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE