রাজের কাছে মুম্বইতে সন্ধেবেলা ফোনটা এসেছিল। ‘‘কনগ্র্যাটস্, শুনলাম অনন্যা প্রেগন্যান্ট!’’
এক বছর তাঁর হাতে কাজ নেই। পার্টিতে বা প্রিমিয়ারেও তাঁর দেখা মেলে না। অনন্যা নিশ্চই প্রেগন্যান্ট। কে যেন রটিয়ে দিল। তার পর থেকেই ঘন ঘন ফোন। ইন্ডাস্ট্রিতে দুইয়ে দুইয়ে চার করা খুব সহজ। ‘‘আমার বর রাজও শেষে ফোনটা পেয়ে আমায় কনগ্র্যাচুলেট করেছিল,’’ প্রচণ্ড হেসে মা হওয়ার গুজব ওড়ালেন অনন্যা।
ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘আবহমান’ ছবিতে জাতীয় পুরস্কার পাওয়া অভিনেত্রী তা হলে এখন গেলেন কোথায়? ‘‘আমি কলকাতাতেই আছি। এখনকার পরিচালক বা প্রযোজকরা আমায় ডাকেন না। মজার কথা, সকলেই বলেন আমি অভিনয়টা জানি। তাও যদি না ডাকেন আমি কী করব?’’ পাল্টা প্রশ্ন করে বসলেন অনন্যা। নিজের ঢাক নিজে পেটানোর যুগে তিনি মনে করেন, আগের মতোই তাঁর বাড়ি এসে লোকে অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়ে যাবে। ‘‘আমরা প্রত্যেকেই ছোটবেলায় কিছু মূল্যবোধ নিয়ে বড় হয়েছি, সেগুলো থেকে আমি অন্তত বেরিয়ে আসতে পারব না। সৃজিতের সঙ্গে পার্টিতে দেখা হলে মজা করি। কিন্তু ও আমার বন্ধু বলেই তো ওকে বলব না, তোর ছবিতে কাজ দে।’’ সাফ জবাব অনন্যার। বন্ধুদেরও কি ভুলে গেছেন তিনি? চান্দ্রেয়ী, শ্রীলেখা, সুদীপ্তা… ‘‘অনেক আগে সিরিয়াল করা থেকে শুরু। সব পাশাপাশি ফ্লোরে কাজ হতো আমাদের। তবে শ্রীলেখা আর চান্দ্রেয়ী আলাদা করে দুজনেই বন্ধু’’, বললেন ‘মেঘে ঢাকা তারা’র দুর্গা।
বিয়ের পর বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর ‘টোপ’ নিয়ে ফিরছেন তিনি। এক পরাজিত রাজার রানির চরিত্রে। রাজার সঙ্গেও কোনও যোগ নেই তার। তার মনের কথা শুধুই এক দূরবিনের সঙ্গে। বিশ্বাস করেন ওখান থেকেই একদিন দেখা পাবেন মনের মানুষের। ‘‘খুব লিরিক্যাল একটা ছবি আর মনের মতো চরিত্র। বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর সঙ্গে কাজ করাই একটা অভিজ্ঞতা,’’ বললেন অনন্যা।
ফেসবুকে তাঁর ফ্যান পেজেও প্রায় নিয়মিতই ফ্যানেদের বক্তব্য, ‘কবে ছবি করছেন?’ সে দিকে বিশেষ মন না দিয়ে বললেন, ‘‘আমার ছবি যাঁরা দেখতে চান, তাঁদের হাতে ক্ষমতা নেই। আর যাঁদের হাতে ছবি তৈরির ক্ষমতা, তাঁরা হয়তো আমায় চান না।’’ আসলে ‘আবহমান’ –এর ‘শিখা’ বাইরে নয়, নিজের মধ্যেই জ্বলে ওঠেন, ‘‘আমি তো একজন শিল্পী। আমার মন মেজাজ মর্জি এ সব থাকবে না? আমি তো ১০টা-৫টার সরকারি চাকুরে নই। তাই সোজা কথা মুখের ওপর বলি বলেও হয়তো লোকে সেটা মানতে পারে না!’’
সিনেমার চেয়ে বইয়ের পাতায় নিজের শান্তি খুঁজে পেয়েছেন অনন্যা। কিন্ডেল তাঁর সারাক্ষণের সঙ্গী। ভাবছেন অন্য মাধ্যমে কাজ করার। সেটা জানতে চাইলে আবার আড়ষ্ট হলেন। পরে অবশ্য জানালেন একটা মিউজিক্যাল করার কথা ভাবছেন। স্বপ্ন দেখছেন অনন্যা। জানেন এখন কিছু পূরণ করতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। চলছে নানা ভাবনা চিন্তা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy