Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

‘অভিনয় আমার জীবনের একটা অংশ মাত্র’

কেরিয়ার, বন্ধুত্ব আর ইন্ডাস্ট্রির গল্প নিয়ে আনন্দ প্লাসের মুখোমুখি তব্বু

তব্বু।

তব্বু।

শ্রাবন্তী চক্রবর্তী
মুম্বই শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৭ ০০:২৩
Share: Save:

তব্বু মানেই শুধু ‘চাঁদনি বার’, ‘অস্তিত্ব’, ‘মাচিস’-এর মতো ছবি নয়। একই সঙ্গে তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ‘হেরাফেরি’, ‘বিবি নম্বর ওয়ান’-এর মতো কমেডি ছবিও। আজ মুক্তি পাচ্ছে রোহিত শেট্টির পরিচালনায় ‘গোলমাল এগেন’। নিজেই স্বীকার করলেন যে, বাকি নায়িকাদের মতো রাখঢাক করে জবাব দেওয়া তাঁর না-পসন্দ। তাই সোজাসাপটা তব্বু...

প্র: ‘গোলমাল এগেন’-এ আপনার মতো সিরিয়াস অভিনেত্রী!

উ: হ্যাঁ। কেন নয় বলুন তো? এই ছবিতে আমার বিপরীতে কিন্তু কোনও হিরো নেই। আর চরিত্রটা ভাল না লাগলে ছবিটাই করতাম না। ‘গোলমাল’-এর ফ্রাঞ্চচাইজি খুব পুরনো আর মজবুত। এ রকম একটা ছবিতে ভাল চরিত্র পাওয়াটাই বড় ব্যাপার। তাই না বলিনি।

প্র: ২০ বছর ইন্ডাস্ট্রিতে কাটিয়ে দিলেন। নিজের মধ্যে কোনও বড় পরিবর্তন চোখে পড়ে?

উ: আমার গোটা কেরিয়ারে অনেক পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছি। অ্যাং লি, গুলজারসাব থেকে প্রিয়দর্শন— প্রত্যেকেই অত্যন্ত বড় মাপের নির্দেশক। এঁদের সকলের সঙ্গে কাজ করলে মনের জানালা খুলে যায়, নিজের মানসিকতার পরিবর্তন আসে। তবে যাঁরা ছবির সঙ্গে যুক্ত নন, তাঁদের কাছ থেকেও জীবনে অনেক কিছু শিখেছি। আমি বেড়াতে ভীষণ ভালবাসি। আমার প্যাশন বলতে পারেন। সেটাও আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। এক পরিবেশে থাকলে আমার দম বন্ধ হয়ে যায়। তাই সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়ি। চেষ্টা করব, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গোটা পৃথিবী ঘুরে দেখতে। প্রথমে আমি এয়ার হস্টেস হতে চেয়েছিলাম। ভাল হাইটের জন্য সুযোগও পেয়েছিলাম। যখন আমি প্রথম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে আসি, তখন এই জায়গাটা সম্পর্কে কোনও জ্ঞানই ছিল না। ছবি করার সুযোগটাও এসেছিল হঠাৎ করে। তবে বাবা-মায়ের শর্ত ছিল যে, একটা ছবিতে অভিনয় করার পরে পড়াশোনা শেষ করতে হবে। আমি এবং আমার দিদি ফরহা দু’জনেই ফার্স্ট জেনারেশন অ্যাক্টর। মা ছিলেন শিক্ষিকা। ফার্স্ট জেনারেশন অভিনেতাদের সব সময়ে বেশি স্ট্রাগল করতে হয়। তাই আমার জার্নিটা খুব কঠিন ছিল। কোনও কোনও সময় হয়তো চুটিয়ে মজা করেছি, কখনও আবার খারাপ সময়ের মধ্য দিয়েও গিয়েছি। তবে আমার আলাদা একটা ব্যক্তিত্ব আছে, যার জন্য আমি গর্বিত। আমার কাজের কারণেই অনেকের ভালবাসা আর শ্রদ্ধা পেয়েছি, যা অমূল্য।

প্র: নিজের অভিনয় করা ছবিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কঠিন চরিত্র কোনটা মনে হয়েছে?

উ: আমার অভিনীত কোনও চরিত্রই সহজ নয়। ভগবান আমাকে সহজে পাওয়া যায় বা করা যায়, এমন কিছু দেননি। হয়তো আমি আমার পথটাও সে ভাবেই বেছে নিয়েছি। তাই সব সময় চেষ্টা করেছি নতুন-নতুন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করার। আর যদি সেটা না পেয়ে থাকি, তা হলে ছবিতে ইন্টারেস্টিং অন্য কিছু খুঁজি। সেটা পেলে, তবেই এগোই।

প্র: ‘গোলমাল এগেন’-এর শ্যুটিংয়ে তো তুষার কপূরের ছেলে লক্ষ্যর সঙ্গে আপনার দারুণ ভাব জমে গিয়েছিল!

উ: লক্ষ্য ভীষণ মিষ্টি একটা বাচ্চা। ওর সঙ্গে আমার ভীষণ ভাব হয়ে গিয়েছিল। সারাদিন শ্যুটিংয়ের পর যখন ওকে দেখতাম, ওর সঙ্গে খেলা, আদর... সমস্ত ক্লান্তি দূর হয়ে যেত। যখন জানতে পেরেছিলাম, শ্যুটিংয়ের সময় লক্ষ্য হায়দরাবাদে আসবে তুষারের সঙ্গে, খুব খুশি হয়েছিলাম। এখন তো ওকে ভীষণ মিস করি।

প্র: হায়দরাবাদের মানুষেরা তো সাধারণত ফুডি হন। আপনি খেতে কতটা ভালোবাসেন?

উ: ভীষণ ভালোবাসি। হ্যাঁ, এটা আলাদা কথা যে, আমি একটা ডিমও সিদ্ধ করতে পারি না (হেসে)। থাই ফুড আমার খুব প্রিয়। ছোটবেলা থেকে বিরিয়ানি দেখে এসেছি বলে, খুব একটা ভালবাসি না। মনে আছে, ছোটবেলায় বুড়ির চুলের (ক্যান্ডি ফ্লস) মেলা বসত। আর কালা খাট্টা (বরফের গোলা) পাওয়া যেত স্কুলের সামনে। সেগুলো খেতে খুব ভালবাসতাম।

প্র: হায়দরাবাদ আর মুম্বই... ভারসাম্য রাখেন কী ভাবে?

উ: হায়দরাবাদ আমার খুব কাছের শহর। প্রিয় শহর। মিস করি ওই জায়গাটাকে। তেলুগু স্কুলে পড়েছি, তাই ভাষাটা আমার খুব ভাল ভাবে জানা। ১২টা তেলুগু ছবিতে কাজও করেছি। মুম্বইয়ে যখন প্রথম আসি, তখন তো হায়দরাবাদকে ভীষণ মিস করতাম। কাজে মন বসাতে সময় লাগত। স্কুলের বন্ধু, নানা-নানি... সকলকে ছেড়ে আসতে হয়েছিল। পরে যখন তামিল-তেলুগু ছবিতে কাজ শুরু করি, তখন বন্ধুরা হায়দরাবাদে আমার নিজের বা়ড়ি বানানোর বুদ্ধি দিয়েছিল। স্বপ্নও ছিল এখানে একটা বাংলো বানানোর। তাই অনেক দিন আগে একটা জমি কিনে রেখেছিলাম। তার পর অনেক বছর ধরে আমার স্বপ্নের বাংলো বানিয়েছি।

প্র: অজয় দেবগণের সঙ্গে আপনার বন্ধুত্ব বহু পুরনো। এত বছর পরও কিন্তু তা অটুট...

উ: অজয় আমার ভাইয়ের বন্ধু। তাই ফিল্মে আসার আগে থেকেই আমাদের বন্ধুত্ব। ছোটবেলায় ভাইয়ের বন্ধুরা
যেমন হয়, অজয়ও আমার ব্যাপারে ঠিক তেমনই প্রোটেক্টিভ ছিল। আমাদের দু’জনের কমফর্ট লেভেল দারুণ। ও আমার পরিবারের অংশ। আর আমার কেরিয়ারের শুরুর দিকে অজয়ের সঙ্গে করা ‘বিজয়পথ’ খুব গুরুত্বপূর্ণ ছবি।

প্র: কখনও নির্দেশনা বা প্রযোজনায় আসার ইচ্ছে আছে?

উ: একদমই না। কোনও ইচ্ছে নেই। শুধু ফিল্ম কেন, যে কোনও বিষয়েই আমাকে কনভিন্স করা খুব কঠিন। এখন যেখানে আছি, খুব খুশি আমি। নিজের পছন্দের লোকেদের সঙ্গে কাজ করতে ভালবাসি। অভিনয় আমার জীবনের একটা ছোট অংশ। এটা ছাড়াও আমার জীবনে করার মতো অনেক কিছু রয়েছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE