মতান্তর: মাঁকড়ীয় আউট নিয়ে দুই মেরুতে অশ্বিন ও পন্টিং (ডান দিকে)।
ভারতীয় তারকা বনাম অস্ট্রেলীয় কোচ। এর আগে এই সংঘাত দেখেছে ভারতীয় ক্রিকেট। গুরু গ্রেগ বনাম সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিতর্কিত সেই অধ্যায় নিশ্চয়ই কেউ ভুলে যাননি এখনও।
নতুন দ্বন্দ্বের নাম কি রিকি পন্টিং বনাম আর অশ্বিন? দিল্লি ক্যাপিটালসের কোচ পন্টিং। আর অশ্বিন তাদের তারকা স্পিনার হিসেবে এ বারই যোগ দিয়েছেন। মাঁকড়ীয় ভঙ্গিতে আউট করা নিয়ে দু’জন দু’মেরুতে রয়েছেন। সরকারি ভাবে যতই তাঁরা দাবি করুন, এ নিয়ে দু’জনেরই সুর একই, প্রশ্ন থাকছেই।
অশ্বিন মাঁকড়ীয় আউট করার পক্ষে। তাঁর প্রশ্ন, ব্যাটসম্যানই বা অন্যায় ভাবে বল করার আগে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়ে সুবিধা নেবেন কেন? পন্টিং বলে রেখেছেন, দিল্লিতে এই আউট তিনি কাউকে করতে দেবেন না। দুবাই থেকে অস্ট্রেলীয় বোর্ডকে পন্টিং এ বার বলেছেন, মাঁকড়ীয় ভঙ্গি ক্রিকেটের স্পিরিট বিরোধী বলে এখনও তিনি মনে করেন। দিল্লি দলের কাউকে এই আউট তিনি করতে দেবেন না। তবে অশ্বিনের পাশে দাঁড়িয়ে এটাও বলেছেন যে, ব্যাটসম্যান যাতে বল করার আগে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়ে সুবিধা না নেয়, সেটাও আম্পায়ারদের দেখা উচিত। নতুন আইনও আনা উচিত বলে অশ্বিনের দাবিকে তিনি সমর্থন করেছেন। তবে বিষয়টির মধ্যে ভবিষ্যৎ তর্কের ইন্ধন থেকেই গেল যে-হেতু অশ্বিনকে মাঁকড়ীয় আউট আপাতত করতে দেবেন না পন্টিং। তাতে ভারতীয় অফস্পিনার আদৌ খুশি হন কি না, দেখার।
অশ্বিন বিতর্কের ঝড়ের মুখে পড়েছিলেন গত আইপিএলে ক্রিজ ছেড়ে এগিয়ে যাওয়া জস বাটলারকে মাঁকড়ীয় ভঙ্গিতে আউট করে। শেন ওয়ার্ন বলেছিলেন, কলঙ্কজনক আউট। মিচেল জনসন মনে করেছিলেন, ব্যাটসম্যান অন্যায় সুবিধা নিচ্ছে আগে থেকে বেরিয়ে গিয়ে। অশ্বিন নিজে কখনও অনুতপ্ত হননি। বরং বরাবর দাবি করে এসেছেন, নিয়মের মধ্যে থেকেই এই আউট তিনি করেছেন। পন্টিং এ দিন এক দিকে অশ্বিনের পক্ষ নিয়ে বলেছেন, ‘‘আউট করা পর্যন্ত ব্যাপারটা যাবেই বা কেন? ব্যাটসম্যানের উচিত নয়, ও ভাবে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া।’’ এর পরে যোগ করেছেন, ‘‘গত বার এই আউটটা হওয়ার পরেই আমাদের টিমের বৈঠক ডেকেছিলাম। সকলে সেখানে ছিল এবং পুরো দল সম্মিলিত ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, আমরা এ ভাবে ক্রিকেট খেলব না। যদি দেখা যায়, ব্যাটসম্যান আগে থেকে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে, তাকে আমরা প্রথমে সতর্ক করে দেব। সরাসরি আউট করে দেব না।’’ অশ্বিনের বিরুদ্ধে কথা উঠেছিল কারণ তিনি সতর্ক না করেই আউট করে দিয়েছিলেন বাটলারকে। যদিও ক্রিকেটের আইন অনুযায়ী, তা করতে বাঁধা নেই। বোলার বল করার আগে নিয়মমাফিক নন-স্ট্রাইকার প্রান্তের ব্যাটসম্যানকে তাঁর ক্রিজের মধ্যেই থাকতে হয়। তিনি ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে গেলে বোলার বল ডেলিভারি না করে হাত ঘুরিয়ে ব্যাটসম্যানকে আউট করে দিতে পারেন। ভারতের কিংবদন্তি প্রয়াত অলরাউন্ডার বিনু মাঁকড় প্রথম এই ধরনের আউট করেছিলেন বলেই নাম রয়ে গিয়েছে ‘মাঁকড়ীয়’।
পন্টিং জানিয়েছেন, অশ্বিনের সঙ্গে তাঁর মাঁকড়ীয় নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। ‘‘ও আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল, ম্যাচের শেষ বলে প্রতিপক্ষ দু’রান করলে জিতবে এমন অবস্থায় যদি নন-স্ট্রাইকার প্রান্তের ব্যাটসম্যান ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে যায়, তুমি আমার থেকে কী আশা করবে? আমি ওকে বলেছি, আশা করব, তুমি বলটা হাতেই ধরে রাখবে, আউটটা করবে না আর ব্যাটসম্যানকে সতর্ক করে দিয়ে দেখবে পরের বলেও একই কাজ করে কি না।’’ প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় অধিনায়কের আরও বক্তব্য, ‘‘ব্যাটসম্যান যাতে ক্রিজ ছেড়ে না বেরিয়ে যায়, সেই নিয়ম আনা উচিত। মাঁকড়ীয় আউটের এই নিয়মটাও থাকা উচিত নয়।’’ অশ্বিন তাঁর আইপিএল কোচের কথা শুনে মাঁকড়ীয় থেকে বিরত থাকবেন? সময়ই বলে দেবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy