কৃত্রিম পা। কাঠের। আর সেটা একটা লোহার রিং দিয়ে শরীরের ওপরের অংশের সঙ্গে আটকানো।
আজকের নয়। ইউরোপে দেড় হাজার বছর আগেকার এক মানুষের সদ্য হদিশ মেলা কঙ্কালে দেখা গিয়েছে, তার বাঁ পা’টি ছিল না। তাই সেই মানুষটি হাঁটত কাঠের পায়ে। এখন যেমন হয়, অবিকল সেই রকমই।
তার মানে, রামায়ণ-মহাভারত লেখার সামান্য সময় পরেই কাঠের পায়ের ব্যবহার শিখে গিয়েছিল মানবসভ্যতা! শিখে গিয়েছিল অঙ্গ প্রতিস্থাপনের কায়দাকানুন। নাই-বা থাকল পা। তখনই কাঠের পা নিয়ে দিব্যি হেঁটে-চলে বেড়াত মানুষ।
আরও পড়ুন- মহাপ্রলয়ে ছিন্নভিন্ন গ্যালাক্সি, বেরচ্ছে গরম গ্যাস, ছিটকে পড়ছে তারা
দক্ষিণ অস্ট্রিয়ার হেমাবার্গে মাটির অনেক নীচে চাপা পড়ে যাওয়া একটি কবর খুঁড়ে ওই কেঠো পায়ের মানুষটির কঙ্কালের সন্ধান পেয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। যাঁদের নেতৃত্বে রয়েছেন অস্ট্রিয়ান আর্কিওলজিক্যাল ইনস্টিটিউটের গবেষক সাবাইন ল্যাডস্ট্যাটার। ইউরোপের ওই মধ্যবয়সী মানুষটির কঙ্কালের রেডিওগ্রাফি ও সিটি-স্ক্যান করেই তাঁরা এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছেন। এই আবিষ্কারটির খবর সামনের সপ্তাহে ছাপা হতে চলেছে ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ প্যালিওপ্যাথোলজি’-তে।
প্রত্নতত্ত্ববিদ সাবাইন জানিয়েছেন, ‘‘এই মানুষটি ষোড়শ শতাব্দীর। বেশ সম্ভ্রান্ত পরিবারের। কারণ, মানুষটিকে কবর দেওয়া হয়েছিল একটি গির্জার পাশে। আর তার কবরের পাশে রাখা ছিল বড় একটি তরবারি। পরীক্ষানিরীক্ষার পর আমাদের মনে হয়েছে, দুর্ঘটনায় বা অন্য কোনও ভাবে ওই মানুষটি তার বাঁ পা’টি হারিয়েছিল। তার পর তার শরীরে ওই কাঠের পা’টি বসানো হয়। আর সেটি লোহার রিং দিয়ে তার শরীরের ওপরের অংশের সঙ্গে আটকে রাখা হয়। তবে ওই পা প্রতিস্থাপনের পর মানুষটি দু’বছরের বেশি বেঁচে ছিল বলে মনে হচ্ছে না। কারণ, ওই পা প্রতিস্থাপনের সময় তার শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে রক্তক্ষরণ হয়েছিল। মানুষটির পায়ের শিরা বা ধমনী কিছুটা ছিঁড়ে গিয়েছিল বলেও মনে হচ্ছে। প্রতিস্থাপনের পর তার জটিল সংক্রমণ হয়েছিল বলেও আমাদের মনে হচ্ছে।’’
তবে তার আগেও কৃত্রিম অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ঘটনা প্রাচীন মিশর ও গ্রেকো-রোমান সভ্যতায় ঘটেছিল বলে গবেষকেরা জানিয়েছেন। যদিও তার কোনও প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ এখনও দাখিল করা সম্ভব হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy