নিজের তৈরি রকেটের সামনে মাইক হিউজ। ছবি: এপি।
পৃথিবীটা নাকি চ্যাপ্টা! জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও মহাকাশচারীরা চক্রান্ত করে যুগ-যুগ ধরে মানুষকে বোকা বানিয়ে আসছেন! ইতিহাসের কেউ নন, এই দাবি করেছেন ক্যালিফোর্নিয়ার স্বঘোষিত বিজ্ঞানী মাইক হিউজ। ঘোষণা করেছেন, হাতেকলমে তিনি বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দেবেন, মোটেও গোল নয় পৃথিবী!
কী ভাবে? মাইক জানিয়েছেন, কালই তিনি রকেটে পাড়ি দেবেন ‘গোল’ পৃথিবীর ভাঁওতা ফাঁস করতে। রকেট পেলেন কোথায়? বছর একষট্টির এই লিমোচালকের দাবি, নিজের গ্যারেজে ছাঁট লোহা দিয়ে তিনিইই বানিয়েছেন বাষ্পচালিত রকেট। এটা তাঁর ‘ফ্ল্যাট আর্থ স্পেস প্রোগ্রাম’-এর প্রথম দফা। এর জন্য অর্থ সংগ্রহের একটি ভিডিওয় মাইক স্পষ্ট জানিয়েছেন, ‘‘আমি বিজ্ঞানে বিশ্বাস করি না। আমার এই প্রয়াস চিরকালের জন্য গোল পৃথিবীর তত্ত্বটাকে একেবারে গুঁড়িয়ে দেবে।’’
বিজ্ঞানে বিশ্বাস নেই, মহাকাশ ও উৎক্ষেপণ নিয়ে কোনও প্রশিক্ষণও নেই, কী ভাবে বানালেন রকেট?
মাইকের বক্তব্য, ‘‘বায়ুগতিবিজ্ঞান ও তরলগতিবিজ্ঞান সম্বন্ধে আমার জানা রয়েছে। হাওয়া দিয়ে কোনও জিনিস কী ভাবে এক জায়গা থেকে অন্যত্র যাবে, সেই বিষয়ে ধারণাও রয়েছে। আর রকেটের মুখের মাপও আমি জানি। এগুলোর কোনওটাই বিজ্ঞান নয়। শুধু একটা সূত্র মাত্র!’’
কিন্তু কী ভাবে পৃথিবীকে চ্যাপ্টা প্রমাণ করবেন তিনি? মাইক জানাচ্ছেন, ক্যালিফোর্নিয়ার ‘ভূতুড়ে’ শহর অ্যামবয় থেকে কাল নিজের তৈরি রকেটে চেপে পাড়ি দেবেন তিনি। রকেট উৎক্ষেপণের আগে কাল সকালেই বড় একটি স্টিলের ট্যাঙ্কে প্রায় ৭০ গ্যালন জল গরম করবেন। এর পর বাষ্পের চাপকে কাজে লাগিয়ে ছিটকে উঠবেন তিনি। মাইল খানেক উড়ে খুলবেন দু’টি প্যারাস্যুট। স্থানীয় সময় দুপুর দু’টো থেকে তিনটের মধ্যে এই গোটা ঘটনা মাইকের ইউটিউব চ্যানেলে লাইভ দেখানো হবে। মাইকের ধারণা, ক্যামেরায় দেখা যাবে, মোজাভে মরুভূমির উপর দিয়ে ঘণ্টায় ৮০০ কিলোমিটার বেগে উড়ে যাচ্ছেন তিনি। উদ্দেশ্য, ১০ মাইল উচ্চতায় ওঠা, যাতে নাকি প্রমাণ হয়ে যাবে যে, পৃথিবীটা আকারে একটা চাকতির মতো।
আরও পড়ুন: মনোজের খুনি ধরতে অভিযান ভিন্ রাজ্যে
উড়ান কাল। মাইকের এখন তাই দম ফেলার সময় নেই। রকেটের সব ঠিকঠাক আছে কি না, দিনভর সেই সব দেখাশোনা করেছেন। পুষ্যি চারটে বিড়ালের জন্য জমিয়ে রেখেছেন পর্যাপ্ত খাবারদাবার। পৃথিবী নিয়ে মাইকের এই আজব তত্ত্ব মনে করিয়ে দিচ্ছে কে সি পালের কথা। কলকাতা-হাওড়ার পথের পাশে যিনি লিখে রাখতেন, সূর্য পাক খায় পৃথিবীকে। চল্লিশ বছর ধরে এই প্রচার চালিয়ে নিঃস্ব এখন বাংলার এই স্বঘোষিত ‘বিজ্ঞানী’টি। মাইক কেন এমন কাণ্ডে মেতেছেন? জবাবে বললেন, ‘‘কেউই তো চিরকাল বাঁচব না। তাই অসাধারণ কিছু করতে চাই, যা অন্য কেউ করতে পারবে না। এক জন নিজেই নকশা ও রকেট বানিয়ে নিজেকেই উৎক্ষেপণ করছেন, এমন ঘটনা তো মানবজাতির ইতিহাসে আগে কখনওই ঘটেনি!’’
মাইকের পরের লক্ষ্য, ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর হওয়া! তাঁর বন্ধু-বান্ধবের চিন্তা, কাল বেঁচেবর্তে ফিরুক পাগলটা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy