Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Science News

অসাধারণ অনুভূতিপ্রবণ ‘প্রেমিক’ ছিল টিরানোসরাস রেক্স, বলছেন বিজ্ঞানীরা

জুরাসিক পার্কের পর্দায় তাদের সঙ্গে কম বেশি আলাপ পরিচয় আছে সিনেপ্রেমীদের। বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং হিংস্র মাংসাশী প্রাণী ছিল তারাই। টিরানোসরাস রেক্স। নাম শুনলেই পিলে চমকে ওঠে কিছুটা।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৭ ১১:১০
Share: Save:

জুরাসিক পার্কের পর্দায় তাদের সঙ্গে কম বেশি আলাপ পরিচয় আছে সিনেপ্রেমীদের। বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং হিংস্র মাংসাশী প্রাণী ছিল তারাই। টিরানোসরাস রেক্স। নাম শুনলেই পিলে চমকে ওঠে কিছুটা। কিন্তু তারাই নাকি আবার নাম লিখিয়েছে ‘সেরা’ প্রেমিকের দলে! নতুন গবেষণা দাবি করছে এমনটাই।

সম্প্রতি আমেরিকার মন্টানায় খোঁজ মিলেছে টিরানোসরাস রেক্স বা টি রেক্সের নতুন একটি প্রজাতির। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ডাসপ্লেটোরাস হর্নেরি বা ডি হর্নেরি নামে টি রেক্সের এই আদিমতম এই প্রজাতি একদিকে যেমন ছিল হিংস্র, অন্যদিকে তেমনই ছিল অনুভূতিপ্রবণ। ডি হর্নেরি যুগলের প্রেমে বিশেষ ভূমিকা নিত তাদের ‘সেনসিটিভ’ নাক।

শুধু তাই নয়, এই নাক দিয়ে নাকি ডিমের রক্ষণাবেক্ষণ, শাবকদের আদর করা, বাসা বানানোর মতো যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজ করত তারা। ‘সাইন্টিফিক রিপোর্ট’ নামক জার্নালে গবেষকরা জানাচ্ছেন, মিলনের সময় স্ত্রী-পুরুষ একে অপরের সঙ্গে নাক এবং মুখ ঘষত। এদের মুখের অনুভূতিপ্রবণ ত্বকই মিলনের সময় উদ্দীপনা তৈরি করত।

আজ থেকে প্রায় সাড়ে সাত কোটি বছর আগে পৃথিবীতে রাজত্ব করত ডি হর্নেরি প্রজাতির ডাইনোসররা। এদের জীবাশ্ম থেকে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন হর্নেরি প্রজাতির ডাইনোসররা লম্বায় ছিল প্রায় ২৯.৫ ফুট।

আরও পড়ুন: রক্তপাত বন্ধ হবে দেড় মিনিটে, সাড়া ফেললেন দুই ভারতীয় বিজ্ঞানী

এই নাকের ত্বকেই ছিল অনুভূতিপ্রবণ স্নায়ু

বহুদিন ধরেই টি রেক্স প্রজাতির ডাইনোসরদের দৈহিক গঠন নিয়ে গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের দাবি, ডাইনোসরদের সমস্ত প্রজাতির মুখেই মুখোশের মতো চ্যাপ্টা বর্মের আকারের ত্বক থাকে। যা তাদের মূলত চোয়াল এবং নাককে ঘিরে রাখত। সম্প্রতি ডি হর্নেরির ত্বকের রহস্য ভেদ করে গবেষকরা জানাচ্ছেন, এদের মুখ ও নাকের ত্বকে স্নায়ুর পরিমাণ অত্যধিক থাকাই অনুভূতিপ্রবণতার একমাত্র কারণ। ডি হর্নেরির মুখের ত্বকের এই স্নায়ুপথকে ফোরামিনা বলে। যা আজকের অ্যালিগেটর গোত্রের মধ্যেও দেখা যায়। যাকে বলে ইন্টিগুমেন্টারি সেনসরি অর্গ্যান।

২০১১ সালের ইয়েলে পিবডি মিউজিয়ামের ন্যাচরাল হিস্ট্রি ইন কানেকটিকাটের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছিল, ইন্টিগুমেন্টারি সেনসরি অর্গ্যান আসলে এক ধরনের নার্ভ বাম্পস। এই বাম্পসগুলি খুবই সেনসিটিভ। সঙ্গমের আগে মুখের ত্বকে ঘষা লাগায় এই স্নায়ুগুলিই উত্তেজিত হয়ে ওঠে।

এই গবেষণার প্রধান এবং উইসকনসিনের কার্টহেগ কলেজের বিজ্ঞানী থমাস কারের মতে, টি রেক্সের প্রতিটি ফোরামিনার আকার সমান। ফলে এদের ত্বক ছিল মারাত্মক সেনসিটিভ। আর এটাই প্রমাণ করে এরা কতটা অনুভূতিপ্রবণ ‘প্রেমিক’ ছিল।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, একেক প্রজাতির প্রাণীর ক্ষেত্রে অনুভূতির ক্ষেত্রটা আলাদা। কুমীর, কিছু প্রজাতির পাখি, স্তন্যপায়ী, সরীসৃপের মধ্যে ট্রাইজেমিনাল নার্ভ মেটিংয়ের আগে উদ্দীপনা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। কোনও কোনও প্রাণীর ক্ষেত্রে তাদের গোঁফ খুবই অনুভূতিপ্রবণ হয়। বেশ কিছু পরীযায়ী পাখি সঙ্গমের আগে ম্যাগনেটিক ফিল্ডকে অনুভব করতে পারে। কুমীর সাধারণত ট্রাইজেমিনাল নার্ভ দিয়ে জলের কম্পন অনুভব করে।

(ছবি: সংগৃহীত)

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE