Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

আর নয় চিপ বা কার্ড, ডেটা রাখবে জিন!

সমাধান হাতের কাছেই। আরও ঠিক করে বললে, নিজের ভিতরেই!ছবি, গান, তথ্য ও আরও অজস্র পথে নিরন্তর যত ডেটা আমরা তৈরি করে চলেছি, কম্পিউটারের হার্ড ড্রাইভে তা এঁটে উঠছে না। ফলে কত কম জায়গায় কত বেশি ডেটা রাখা যায়, তা নিয়ে বিজ্ঞানী-প্রযুক্তিবিদদের ভাবনার অন্ত নেই।

জিন-বাজি: ইয়ানিভ। নিউ ইয়র্ক জিনোম সেন্টারে। ফাইল চিত্র

জিন-বাজি: ইয়ানিভ। নিউ ইয়র্ক জিনোম সেন্টারে। ফাইল চিত্র

সংবাদ সংস্থা
নিউ ইয়র্ক শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৭ ০২:৫৫
Share: Save:

সমাধান হাতের কাছেই। আরও ঠিক করে বললে, নিজের ভিতরেই!

ছবি, গান, তথ্য ও আরও অজস্র পথে নিরন্তর যত ডেটা আমরা তৈরি করে চলেছি, কম্পিউটারের হার্ড ড্রাইভে তা এঁটে উঠছে না। ফলে কত কম জায়গায় কত বেশি ডেটা রাখা যায়, তা নিয়ে বিজ্ঞানী-প্রযুক্তিবিদদের ভাবনার অন্ত নেই। চলছে নিত্য নতুন গবেষণা। বেরোচ্ছে নিত্য-নতুন উদ্ভাবন। তবু কুলোচ্ছে না। অথচ আমাদের জিনের মধ্যেই কত না তথ্য জমিয়ে রাখা আছে! যুগ যুগ ধরে এক প্রজন্ম থেকে পরের প্রজন্মে যা আমরা বয়ে নিয়ে চলেছি। ডিএনএ-তে ভরা ওই সব তথ্যই ঠিক করে দিচ্ছে কেমন হবে কার চেহারা ও বৈশিষ্ট্য।

এই ডিএনএ-র মধ্যেই এ বার ডিজিটাল তথ্য রাখার ব্যবস্থা করে ফেলেছেন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই বিজ্ঞানী ইয়ানিভ এরলিখ ও ডিনা জিএলিস্কি এবং নিউ ইয়র্ক জিনোম সেন্টারের বিজ্ঞানীরা। মাত্র এক গ্রাম ডিএনএ-র মধ্যেই তাঁরা ভরে দিয়েছেন একটি কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম ও একটি ভাইরাস প্রোগ্রাম, ৮ এমএম-এর একটি গোটা ফিল্ম, একটি সংস্থার ডিজিটাল গিফট কার্ড, আরও বেশ কিছু ডেটা। অণু-পরমাণু-সৌরজগতের কাঠামো আর এক নারী ও পুরুষের ছবি ও তথ্য ভরা যে ‘পাওনিয়ার প্লেক’ অতীতে গভীর মহাকাশে পাঠানো হয়েছে অজানা কোনও বুদ্ধিমান জীবের উদ্দেশ্যে— তেমন একটির ডেটাও ভরা হয়েছে। মোট ২১৫ পেটাবাইট। অর্থাৎ ১ গ্রাম ডিএনএ-তে ২১.৫ কোটি জিবি ডেটা!

ডিএনএ-তে তথ্য রাখার চেষ্টা অবশ্য আগেও হয়েছে এবং এখন তা চলছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। তফাৎ এটাই যে সেই ডিএনএ থেকে যখন ওই সব ডিজিটাল ডেটা ফেরত নেওয়া হয়েছে, দেখা গিয়েছে সবটা ফিরে পাওয়া যাচ্ছে না। কিছু কিছু অংশ বাদ থেকে যাচ্ছে। বা বিচ্যুতি আসছে। ইয়ানিভরা জানাচ্ছেন, তথ্য ভরা ডিএনএ তাঁরা এনজাইমের মাধ্যমে বারবার ‘কপি’ করেছেন। নিখুঁত ডেটা ফেরত পেয়েছেন মোট ন’বার কপি করার পরেও! এটা আগে ঘটেনি। ‘সায়েন্স’ পত্রিকায় আজ ইয়ানিভদের সাফল্যের বিবরণ প্রকাশিত হয়েছে।

তবে জিনের জোগান অঢেল হলেও এই প্রক্রিয়াটির খরচ যথেষ্ট। ডেটা রাখতে ৭ হাজার ডলার ও তা ফেরত পেতে আরও ২ হাজার ডলার খরচ পড়েছে ইয়ানিভদের। তবে গবেষকরা বলছেন, তথ্য রাখার পক্ষে ডিএনএ হচ্ছে প্রকতির তৈরি আদর্শ পাত্র। যাতে সব চেয়ে কম জায়গায় সব চেয়ে বেশি তথ্য থাকে। কয়েক হাজার বছর সংরক্ষণ করা যায়।

অল্প জায়গায় বিপুল ডেটা রাখা শুধু নয়, বারবার তা নিখুঁত ভাবে ফেরত পাওয়াটাও জরুরি। একটি সিডি থেকে আর একটি, তার থেকে আর একটি— এ ভাবে কয়েক বার কপি করার পরে ফাইলের অনেক তথ্য হারিয়ে যায়। ইয়ানিভরা সেই সমস্যার সমাধান করেছেন ডিএনএ-কে ‘পড়ার’ আধুনিক পদ্ধতির মাধ্যমে। ইয়ানিভের কথায়, ‘‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্যাসেট বা সিডি-তে রাখা তথ্যের যে ক্ষয় হয়, ডিএনএ-তে তা হয় না। ক্যাসেট-সিডি-র মতো অচল হয়ে পড়ারও সম্ভাবনাও নেই এর।’’

ডিএনএ-ও যদি অচল হয়ে পড়ে? ইয়ানিভের মন্তব্য, ‘‘ডেটা রাখার চেয়ে সেটা আমাদের কাছে ঢের বড় বিপদ।’’

অন্য বিষয়গুলি:

New York Genome Center DNA Cheap Memory Card
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy