Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪
Science

বিশ্বে এই প্রথম, জন্মাল মানুষ ও শুয়োরের সংকর প্রাণী

মানুষের কোষ দিয়ে এ বার বানিয়ে ফেলা হল সম্ভব হল শুয়োরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ। শুয়োরের ভ্রূণের মধ্যেই। বিশ্বে এই প্রথম। তার ফলে, মানুষ আর শুয়োরের ‘সঙ্কর’ প্রজাতির প্রাণীরও জন্ম হল, এই প্রথম।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৭ ১৮:০৩
Share: Save:

মানুষের কোষ দিয়ে এ বার বানিয়ে ফেলা হল সম্ভব হল শুয়োরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ। শুয়োরের ভ্রূণের মধ্যেই। বিশ্বে এই প্রথম।

তার ফলে, মানুষ আর শুয়োরের ‘সঙ্কর’ প্রজাতির প্রাণীরও জন্ম হল, এই প্রথম। যে ‘শঙ্কর প্রাণী’কে ‘শিমেরা’ বলা হয়।

বিশ্বে এই প্রথম এমন একটি ভ্রূণ বানাতে পারলেন বিজ্ঞানীরা, যার কোষের অনেকটা শুয়োরের হলেও, বাকিটা মানুষের! শুয়োরের ভ্রূণে বাইরে থেকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল মানুষের শরীরের (গায়ের চামড়া থেকে নেওয়া) প্লুরিপোটেন্ট স্টেম সেল। যে স্টেম সেল থেকে মানবশরীরের যে কোনও এলাকা বা অঙ্গের কোষ, কলা তৈরি করা যায়।


শুয়োরের ভ্রূণে ঢোকানো হচ্ছে মানুষের প্লুরিপোটেন্ট স্টেম সেল (লাল ‘ক্রস’)

বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে গিয়ে দেখেছেন, মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তৈরি করতে পারে এমন কোষগুলি দিয়ে শুয়োরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ গড়ে উঠেছে, শুয়োরের ভ্রূণেই! মানুষের শরীরের প্লুরিপোটেন্ট স্টেম সেলগুলি শুয়োরের ভ্রূণের মধ্যে বেড়ে উঠে শুয়োরের ভ্রূণের বেশ কয়েকটি কলা তৈরি করেছিল। ২৮ দিন পরেই শুয়োরের ভ্রূণ থেকে মানুষের শরীরের প্লুরিপোটেন্ট স্টেম সেলগুলিকে বের করে নিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। তাই মানুষের কোষ থেকে যে ধরনের কলা তৈরি হয়, সেগুলি খুব বেশি পরিমাণে গড়ে ও বেড়ে উঠতে পারেনি শুয়োরের ভ্রূণে।

কী ভাবে হল সেই মানুষ আর শুয়োরের সংকর প্রাণী’। দেখুন ভিডিও।

এর ফলে, বিশ্বে এই প্রথম মানুষ ও শুয়োরের ‘সংকর প্রাণী’-র জন্ম হয়েছে। তবে তার চেয়েও যেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তা হল- এর ফলে, এক দিন শুয়োর বা অন্য কোনও প্রাণীর ভ্রূণের মধ্যেই মানুষের শরীরের কোষ, কলা দিয়ে কৃত্রিম অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বানিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। যা আগামী দিনে মানুষের শরীরে প্রতিস্থাপনের জন্য পর্যাপ্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গের অভাব মেটাতে পারবে বলে বিজ্ঞানীদের আশা। প্রতিস্থাপনের জন্য পর্যাপ্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গের অভাবে এখন ব্রিটেনে ফি-বছর তিন জন আর আমেরিকায় প্রতি বছরে ১২ জনের মৃত্যু হয়।


ইঁদুরের স্টেম সেল থেকে জন্মানো সংকর প্রাণী’। গায়ের বাদামি ‘পশম’ ইঁদুরের

সম্প্রতি গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘সেল’-এ। বায়োলজিস্ট ইঝপিসুয়া বেলমঁতের নেতৃত্বে আমেরিকার সান দিয়েগোর ‘সাল্ক ইনস্টিটিউট অফ বায়োলজিক্যাল স্টাডিজ’ ও স্পেনের ‘ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটি অফ মার্সিয়া’র একটি গবেষকদল এই অভূতপূর্ব গবেষণাটি করেছেন। গবেষণায় ব্যবহৃত হয়েছিল দেড় হাজারটি শুয়োরের ভ্রূণ। নেওয়া হয়েছিল ৪০ জন মানুষের শরীরের প্লুরিপোটেন্ট স্টেম সেল। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মানুষের ভ্রূণের চেয়ে তিন গুণ দ্রুত হারে বাড়ে শুয়োরের ভ্রূণ।
আরও পড়ুন- চাঁদে পা-ই রাখেননি নিল আর্মস্ট্রং, বলছে এ বার আমেরিকাই!


বহু ধরনের স্টেম সেল নিয়ে পরীক্ষা চালানো হয়। সাফল্য আসে তৃতীয় ধাপে

যদিও এই গবেষণাটি জন্ম দিয়েছে একটি বিতর্কের। তা হল, এই ভাবে যদি অনেক বেশি পরিমাণে মানুষের শরীরের ডিএনএ শুয়োরের ভ্রূণে ঢোকে, তা হলে বহু বহু দূর ভবিষ্যতে তো এমন শুয়োরের জন্ম হতে পারে, যার মগজ বা মস্তিষ্কটা হবে ঠিক মানুষের মতোই উন্নত! অতটা যদি সম্ভব না-ও হয়, তা হলে হয়তো এক দিন ওই ভাবে শুয়োর জন্মাবে মানুষের মুখের আদল নিয়েই! তাই ‘হিউম্যান জেনেটিক্স অ্যালার্ট’-এর অধিকর্তা ডেভিড কিং বলেছেন, ‘‘এই গবেষণার ফলাফলে খুবই বিব্রত বোধ করছি। উদ্বিগ্ন বোধ করছি। অশনি সংকেত দেখতে পাচ্ছি।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy