ভূপতিত: বুলডোজার চালিয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে লেনিনের এই মূর্তি। ত্রিপুরার বিলোনিয়ায়। ছবি: পিটিআই।
বুলডোজারের ধাক্কায় মুখ থুবড়ে পড়তে পারেন। কিন্তু মিলিয়ে দিলেন লেনিন!
প্রতিবাদে মুখ খুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মনে করালেন, মূর্তিভাঙা গণতন্ত্রে নির্বাচিত দলের কাজ নয়। আর একই কারণে কলকাতার রাজপথে মিছিল করলেন সীতারাম ইয়েচুরি, প্রকাশ কারাট, বৃন্দা কারাট, বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্রেরা। ধর্মতলার লেনিনের কাছে এসেই তাঁদের দাবি, ফ্যাসিস্ত শক্তি দাঁত-নখ বার করেছে। সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে এই তাণ্ডব রুখে দিতে হবে।
ত্রিপুরায় ২৫ বছর পরে সরকার বদলেছে। বাম জমানা ফুরনোর সঙ্গে সঙ্গেই সে রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে অভিযোগ আসছে গেরুয়া তাণ্ডবের। দক্ষিণ ত্রিপুরার বিলোনিয়ায় বুলডোজার দিয়ে লেনিনের মূর্তি ভাঙার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে দেশ জুড়়ে ঝড় তুলেছে। তার সূত্র ধরেই মঙ্গলবার বাঁকুড়ার পাত্রসায়রে প্রশাসনিক জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেছেন, ‘‘সরকারের কাজ নয় কারও উপরে হামলা করা। কোনও মনীষীর মূর্তি ভেঙে দেওয়া!’’ তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘যদি মনে করেন, ক্ষমতায় এসেছেন বলে মার্ক্স, লেনিন বা গাঁধীজি, নেতাজির মূর্তি ভাঙবেন, এটা আমরা মেনে নেব না!’’
তৃণমূল নেত্রীর মুখে লেনিন মূর্তি ভাঙার নিন্দা শুনে অনেকে বিষম খেতে পারেন আন্দাজ করে মমতাই ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ‘‘আমি সিপিএমের পক্ষে নই, বিরুদ্ধে। মার্ক্স বা লেনিন আমার নেতা নন। কিন্তু রাশিয়ায় লেনিন, মার্ক্স একটা ব্যক্তিত্ব। গণতন্ত্র মানে জবরদখল নয়!’’
আরও পড়ুন: ত্রিপুরায় হিংসা থামান, মোদীকে চিঠি সিপিএমের
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবই, জিষ্ণু হচ্ছেন উপমুখ্যমন্ত্রী
সিপিএমের পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী যদিও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, এ রাজ্যে পরিবর্তনের পরেই গড়বেতা, যাদবপুরের মতো জায়গায় ভাঙা পড়েছিল লেনিন-মার্ক্সের মূর্তি। দলের সাধারণ সম্পাদক ইয়েচুরির মন্তব্য, ‘‘কাজেকর্মে তৃণমূল আর বিজেপি দু’টো দলই সমান। ভয় পেয়ে ওরা মূর্তি ভাঙতে পারে কিন্তু তাতে আদর্শ বা অনুপ্রেরণা ভাঙা পড়ে না!’’
মূর্তি ভেঙে আদর্শ গুঁড়িয়ে দেওয়া যায় না, এই স্লোগান দিয়েই কলকাতায় পথে নেমেছিল সিপিএম, লিবারেশন, এসইউসি-সহ সব ধরনের বাম দল। সিপিএমের রাজ্য সম্মেলন ঘণ্টাদেড়েকের মতো মুলতবি রেখে মিছিল করে প্রতিবাদে বেরিয়েছিলেন প্রতিনিধিরা। পক্ষান্তরে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘‘মূর্তি ভাঙা সমর্থন করি না। ওখানে ২৫ বছর ধরে বামেরা যা অত্যাচার করেছে, তাতে জনরোষে এমন ঘটনা ঘটতেই পারে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy