Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
National News

আমরা যৌনকর্মী নই…বাবা, মায়ের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করুন…

বুকে দৃঢ় ভাবে ধরা রয়েছে দুটো প্ল্যাকার্ড। একটাতে লেখা, ‘‘আমরা যৌনকর্মী নই, মাদকাসক্তও নই।’’ অন্যটায়, ‘‘মাননীয় বম্বে হাইকোর্ট, আমরা আক্রান্ত, বিচার চাই।’’ বম্বে হাইকোর্ট থেকে মেরিন ড্রাইভ পর্যন্ত এই ভাবেই বুকে প্ল্যাকার্ড ধরে হাঁটলেন দুই বোন।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৭ ১৩:৫৪
Share: Save:

বুকে দৃঢ় ভাবে ধরা রয়েছে দুটো প্ল্যাকার্ড। একটাতে লেখা, ‘‘আমরা যৌনকর্মী নই, মাদকাসক্তও নই।’’ অন্যটায়, ‘‘মাননীয় বম্বে হাইকোর্ট, আমরা আক্রান্ত, বিচার চাই।’’ বম্বে হাইকোর্ট থেকে মেরিন ড্রাইভ পর্যন্ত এই ভাবেই বুকে প্ল্যাকার্ড ধরে হাঁটলেন দুই বোন। ২৩ বছরের শিবাঙ্গী সুলে ও ২১ বছরের সমীরা সুলে। কেন এ ভাবে প্রতিবাদ জানাতে বাধ্য হলেন তাঁরা?

শিবাঙ্গীদের দাবি, তাঁরা যৌনকর্মী এবং মাদকাসক্ত বলে নালিশ করে মালাড থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন তাঁদের বাবা, মা। পুলিশ কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় বম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শিবাঙ্গীদের বাবা-মা। কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় বম্বে হাইকোর্ট মালাড পুলিশের তিরস্কার করে।

শিবাঙ্গী ও সমীরার অভিয়োগ, স্বাধীন ভাবে বাঁচতে চাওয়ায় বাবা, মা তাঁদের অত্যাচার করতেন ও ঘরে আটকে রাখতেন। গত ২৪ ডিসেম্বর শিফু সংস্কৃতির প্রতিষ্ঠাতা সুনীল কুলকার্নি ও মালাড পুলিশের সহায়তায় তাঁদের বন্ধুরা শিবাঙ্গী ও সমীরাকে উদ্ধার করেন। এরপর মালাড পুলিশের কাছে বাবা, মায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে চাইলেও পুলিশ তা নিতে অস্বীকার করে বলে দাবি করে দুই বোন। উপরন্তু তাঁদের বসিয়ে নীতি শিক্ষার ক্লাস দেওয়া হয় বলে জানান সুনীল। এরপর বুধবার শিবাঙ্গী-সমীরার বাবা, মায়ের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ বম্বে হাইকোর্টকে জানায়, সুনীল কুলকার্নি এবং তাঁর শিফু সংস্কৃতি সেক্স ও মাদক চক্রের সঙ্গে জড়িত। এরপরই আদালত মালাড পুলিশকে বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্ব না দেওয়ার জন্য তিরস্কার করে।

দুই বোনের প্ল্যাকার্ডেই লেখা ছিল, #SaveUsFromOurParents (বাবা, মায়ের থেকে আমাদের রক্ষা করো)। কেন বাবা, মায়ের হাত থেকে বাঁচতে চাইছেন তাঁরা? সমীরা বলেন, ‘‘আমরা শুধু স্বাধীন ভাবে, নিজেদের মতো করে বাঁচতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বাবা, মা আমাদের বিরুদ্ধে কুত্সা রটাচ্ছেন। ওঁরা বলছেন আমরা সেক্স ও মাদক চক্রের সঙ্গে জড়িত। শিফু সংস্কৃতির বিরুদ্ধে বম্বে হাইকোর্টকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। শিফু সংস্কৃতি শেখায় কী ভাবে নিজের শরীর ও মনকে নেতিবাচক চিন্তা-ভাবনা থেকে মুক্ত করতে হবে।’’

আরও পড়ুন: মণিপুরে রয়্যাল বেঙ্গল কেটে খেলেন গ্রামবাসীরা, ছবি আপলোড হল ফেসবুকেও!

যদিও সম্পূর্ণ ভিন্ন কথা বলছেন শিবাঙ্গী, সমীরার বাবা আইনজীবী সন্দেশ পাতিল। তাঁর বক্তব্য, বড় মেয়ে শিবাঙ্গী পেশায় আইনজীবী, ছোট মেয়ে সমীরা আর্কিটেকচারের শেষ বর্ষে পড়াশোনা ছেড়ে কুলকার্নির শিফু সংস্কৃতিতে যোগদান করেছেন। নিজেদের গতিবিধি সম্পর্কে তাঁরা বাড়িতে ক্রমাগত মিথ্যা বলে চলেছেন। প্রশ্ন করা হলে বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে তাঁদের নির্যাতন করার অভিযোগ এনে বাড়ি ছাড়েন দুই মেয়ে।

শিবাঙ্গী বলেন, ‘‘আমাদের পিছনে গুন্ডারা ধাওয়া করছে। পুলিশ যখন তখন আমাদের তলব করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা হেনস্থা করছে। আমরা আক্রান্ত। বম্বে হাইকোর্টকে অনুরোধ করছি আমাদের বাবা, মায়ের হাত থেকে রক্ষা করুন।’’ অন্য দিকে সুনীল কুলকার্নি বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা আভিযোগ আনা হচ্ছে। আমার অপরাধ আমি পুলিশের সাহায্যে ওদের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে এনেছিলাম। এখন ওঁদের অভিভাবকরা অভিযোগ করছেন, আমি ওদের হিপনোটাইজ করে যৌন হেনস্থা করেছি। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।’’

মালাড পুলিশের সিনিয়র ইনস্পেক্টর সুধীর মহাদিকের কথায়, আদালত এখনও নির্দির্ষ্ট কোনও নির্দেশ দেয়নি। ওই দুই তরুণীর বিরুদ্ধে প্রাথমিক ভাবে বেআইনি কিছু করার প্রমাণ মেলেনি। আদালতের নির্দেশ পেলে এই বিষয়ে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Drug Racket Bombay High Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE