কিংফিশার অফিসের বাইরে বিক্ষোভ কর্মীদের। বুধবার মুম্বইয়ে।-পিটিআই
ইতিমধ্যেই ভারত ছেড়েছেন বিজয় মাল্য।
বুধবার সুপ্রিম কোর্টে ঋণদাতা ব্যাঙ্কগুলির পক্ষ থেকে এ কথা জানিয়েছেন ভারত সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহাতগি। এ দিন শীর্ষ আদালতে তিনি বলেন, সিবিআইয়ের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাই জানিয়েছে, গত ২ মার্চ ভারত ছেড়েছেন কিংফিশার কর্তা। সম্ভবত গিয়েছেন লন্ডনে। এর পরই এ দিন মাল্যের বিরুদ্ধে নোটিস জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। দু’সপ্তাহের মধ্যে যার উত্তর দিতে বলেছে তাঁকে। মাল্যের রাজ্যসভার ই-মেল আইডি, লন্ডনে ভারতীয় দূতাবাস এবং তাঁর আইনজীবী ও সংস্থার মাধ্যমে ওই নোটিস পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে শীর্ষ আদালত।
বিতর্ক অবশ্য এখানেই থেমে থাকেনি। সিবিআই সূত্রের দাবি, ইতিমধ্যেই আইডিবিআই ব্যাঙ্কের ৯০০ কোটি টাকা ঋণখেলাপির মামলায় মাল্যের বিরুদ্ধে লুক-আউট নোটিস জারি করেছে তদন্তকারী সংস্থাটি। উল্লেখ্য, কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত চললে তিনি যাতে দেশ ছাড়তে না-পারেন, এবং প্রয়োজনে যাতে তাঁকে গ্রেফতার করা যায়, তার জন্যই জারি করা হয় এই নোটিস। দেশ থেকে বেরোনোর সব পথেই তা পাঠানো হয়। আইন মেনে মাল্যের বিরুদ্ধেও সব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছে সিবিআই। কিন্তু তা সত্ত্বেও দেশ ছাড়তে রাজ্যসভার এই সাংসদের কোনও অসুবিধা হয়নি। উল্লেখ্য, রাজ্যসভায় তাঁর সদস্য থাকার মেয়াদ ফুরোচ্ছে ৩০ জুন। একই সঙ্গে আইডিবিআই ব্যাঙ্কের মতো কিংফিশারের অন্য ঋণদাতা ব্যাঙ্কগুলিও যাতে মাল্যকে দেওয়া ধারকে জালিয়াতি বলে চিহ্নিত করতে বলেছে সিবিআই। প্রসঙ্গত, বিজয় মাল্য যাতে ভারত ছেড়ে যেতে না-পারেন, সে জন্য মঙ্গলবারই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল বন্ধ কিংফিশার এয়ারলাইন্সের ঋণদাতা ১৩টি ব্যাঙ্ক।
এ দিকে আগামী শুক্রবার মাল্যের বিরুদ্ধে দায়ের করা পরিষেবা কর বিভাগের মামলার শুনানিতে রাজি হয়েছে বম্বে হাইকোর্ট। ওই বিভাগের অভিযোগ ছিল, কিংফিশারের যাত্রীদের থেকে পরিষেবা কর নিলেও, সেই টাকা কেন্দ্রের ঘরে জমা করেনি সংস্থা। যার পরিমাণ প্রায় ৫৩৫ কোটি টাকা। এ নিয়ে এর আগে নিম্ন আদালতে মামলা করলেও, সেখানে জামিন হয় কিংফিশার কর্তার। তার পরই হাইকোর্টে যায় কর বিভাগ। একই সঙ্গে এ দিন মাল্যর পাসপোর্ট বাজেয়াপ্তের আবেদনও জানিয়েছে তারা। পাশাপাশি, বিদেশে বিজ্ঞাপনের জন্য অর্থ লেনদেনে অনিয়মের অভিযোগে বহু বার তাঁকে নোটিস পাঠানোর পরেও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের সামনে (ইডি) হাজিরা দেননি মাল্য। যে কারণে শেষ পর্যন্ত দিল্লি হাইকোর্টে তাঁর বিরুদ্ধে বিদেশি মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন ভাঙার অভিযোগে মামলা করে ইডি। ২৪ এপ্রিল তার শুনানি হওয়ার কথা।
বুধবার ফের প্রাক্তন কিংফিশার কর্মীরা মুম্বইয়ের কিংফিশার হাউসের সামনে বিক্ষোভে সামিল হন। তাঁদের অভিযোগ, ২০১২-র অক্টোবরে সংস্থা বন্ধ হওয়ার পর থেকে তাঁরা বেতন পাননি। অথচ উৎসে কর কেটেছে সংস্থা, যা জমা পড়েনি কেন্দ্রের ঘরে। এর জেরেই এখন কর বিভাগের নোটিসের মুখে পড়ছেন কর্মীরা।
এ দিন সুপ্রিম কোর্টে অবশ্য প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় ঋণদাতাদেরও। রোহাতগি বলেন, বিদেশে স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি মিলিয়ে মাল্যর সম্পদের অঙ্ক ভারতে ঋণের পরিমাণের তুলনায় অনেক বেশি। তার পরই ব্যাঙ্কগুলিকে শীর্ষ আদালতের প্রশ্ন, এ কথা জানা সত্ত্বেও কেন তাঁকে ও তাঁর সংস্থাকে ঋণ দিয়েছিল ব্যাঙ্কগুলি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy