Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

মার্কিন মুলুকে মোদীর জনসভা, প্রস্তুতি তুঙ্গে

গুজরাত দাঙ্গাকে সামনে রেখে যে আমেরিকা এত দিন তাঁকে ভিসা পর্যন্ত দেয়নি, সেই আমেরিকাই এ বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। সরকারি স্তরে এ নিয়ে প্রস্তুতিও প্রায় চূড়ান্ত। মোদী নিজেও এ মাসের শেষ দিকে তাঁর প্রথম মার্কিন সফরেই সাড়া ফেলে দিতে চাইছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের অধিবেশনে বক্তৃতা বা মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে বৈঠকের মতো বিষয়গুলি তো আছেই, নিউ ইয়র্কে প্রায় হাজার কুড়ি দর্শকের সামনে একটি সভাও করার কথা আছে তাঁর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:৪৪
Share: Save:

গুজরাত দাঙ্গাকে সামনে রেখে যে আমেরিকা এত দিন তাঁকে ভিসা পর্যন্ত দেয়নি, সেই আমেরিকাই এ বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। সরকারি স্তরে এ নিয়ে প্রস্তুতিও প্রায় চূড়ান্ত। মোদী নিজেও এ মাসের শেষ দিকে তাঁর প্রথম মার্কিন সফরেই সাড়া ফেলে দিতে চাইছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের অধিবেশনে বক্তৃতা বা মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে বৈঠকের মতো বিষয়গুলি তো আছেই, নিউ ইয়র্কে প্রায় হাজার কুড়ি দর্শকের সামনে একটি সভাও করার কথা আছে তাঁর।

আর এই সভাটি ঘিরেই সরগরম নিউদিল্লি থেকে নিউ ইয়র্ক। বিজেপির অনাবাসী ভারতীয় শাখার নেতা বিজয় জলি, সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব ইতিমধ্যেই আমেরিকায় গিয়ে এক দফা প্রস্তুতি সেরে ফেলেছেন। তৈরি হয়েছে ‘ইন্ডিয়ান-আমেরিকান কমিউনিটি ফাউন্ডেশন’ নামে একটি সংস্থাও। তাঁদের দাবি, নিউ ইয়র্কের বুকে কোনও ভিন্ দেশি রাষ্ট্রপ্রধানের এত বড় সভার আয়োজন সাম্প্রতিক অতীতে হয়নি। এই সভার জন্য কুড়ি হাজার আসন বিশিষ্ট ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনকে বেছে নেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পাওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন নেওয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। উদ্যোক্তাদের দাবি, এই সভা ঘিরে বিপুল উন্মাদনা দেখা গিয়েছে স্থানীয় ভারতীয়দের মধ্যে। এখনই কুড়ি হাজারের বেশি আবেদন জমা পড়েছে। তাই স্থির হয়েছে, লটারির মাধ্যমে আমন্ত্রিতদের বেছে নেওয়া হবে।

নিউ ইয়র্কেই মোদী প্রথম বক্তৃতা দেবেন, রাষ্ট্রপুঞ্জের অধিবেশনে। রাষ্ট্রপুঞ্জের অধিবেশনে বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধানের বক্তৃতার সময় ক্ষোভ-বিক্ষোভের ছবি নিউ ইয়র্কে নতুন নয়। অতীতে ফিদেল কাস্ত্রো বা ইরানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মেহমুদ আহমেদিনেজাদের বক্তৃতার সময় মার্কিন জনতা বিক্ষোভও দেখিয়েছে রাস্তায়। যে কারণে প্রতি বারই নিউ ইয়র্কের সদর দফতরে রাষ্ট্রপুঞ্জের অধিবেশনের সময় কিছুটা দূরে প্রতিবাদ সমাবেশের জন্য একটি জায়গা বেঁধে দেওয়া হয়। মোদীর সভার উদ্যোক্তারা বলছেন, রাষ্ট্রপুঞ্জের অধিবেশনের সময় জমায়েত এ বারেও হবে। তবে তা সম্পূর্ণ ভিন্ন কারণে। বিজয় জলির কথায়, “মোদীকে ঘিরে প্রবল আগ্রহ রয়েছে গোটা দুনিয়ায়। সে কারণে তাঁর সফরের সময় বড় বড় কাটআউট লাগানো হবে শহর জুড়ে। আর ম্যাডিসন স্কোয়ারের অনুষ্ঠানে যে ভাবে এখন থেকেই সাড়া পাওয়া যাচ্ছে, তা অভাবনীয়। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকবেন তাঁর বক্তৃতা শুনতে।”

যে হেতু ‘ইন্ডিয়ান-আমেরিকান কমিউনিটি ফাউন্ডেশনের’ ব্যানারে এই অনুষ্ঠান হচ্ছে, তাই সরকার সরাসরি এতে সামিল হচ্ছে না। কিন্তু আমেরিকায় নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত এস জয়শঙ্কর নিয়মিত এই অনুষ্ঠানের তদারকি করছেন। মার্কিন সেনেটর ও কংগ্রেসম্যানদেরও এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। মার্কিন সরকার তাঁকে ভিসা না দিলেও মোদী নিজে কিন্তু গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে বহু দিন ধরেই আমেরিকায় বসবাসকারী গুজরাতিদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে এসেছেন। গুজরাতে তাঁদের বিনিয়োগেও সামিল করেছেন। এ বারে অবশ্য মোদী জানিয়েছেন, শুধু গুজরাতি নয়, আমেরিকায় বসবাসকারী সব ভারতীয়কে অনুষ্ঠানে আসতে অনুপ্রাণিত করা হোক।

বিজেপি নেতারা বলছেন, সম্প্রতি জাপান সফরে গিয়ে মোদী বুঝিয়ে দিয়েছেন, পূর্বসূরিদের মতো শুধু বৈঠক করেই তিনি ক্ষান্ত হবেন না। এমন কিছু নজরকাড়া পদক্ষেপ করবেন, যাতে সে দেশের মানুষ আন্দোলিত হন। জাপানে গিয়ে মোদী সে দেশের সংস্কৃতিকে যেমন ছুঁতে চেয়েছেন, তেমনই সেখানে বসবাসকারী ভারতীয়দের জড়ো করে তাঁদের সামনে উন্নত ভারতের স্বপ্নও ফিরি করেছেন। বিজেপির এক শীর্ষ নেতার কথায়, “শপথের দিন প্রতিবেশী দেশগুলির রাষ্ট্রপ্রধানদের আমন্ত্রণ জানিয়ে মোদী স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তাঁর সরকারের বিদেশ নীতিকে তিনি এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চান। সে কথা মাথায় রেখেই জাপানের পর এ বারে আমেরিকাও মাত করতে চাইছেন মোদী।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE