Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
National News

মরাঠা সংরক্ষণের দাবিতে বেনজির জমায়েত, গোটা মুম্বই অবরুদ্ধ

মরাঠাদের জন্য সরকারি চাকরি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসন সংরক্ষণের দাবিতে বিপুল জমায়েত মুম্বইতে। অবরুদ্ধ হয়ে পড়ল দেশের গোটা বাণিজ্যিক রাজধানী।

সংরক্ষণের দাবিতে বুধবার যে বিপুল সংখ্যক মানুষ জড়ো হলেন মুম্বইতে, তা বেনজির। বলছে প্রশাসনই। ছবি: রয়টার্স।

সংরক্ষণের দাবিতে বুধবার যে বিপুল সংখ্যক মানুষ জড়ো হলেন মুম্বইতে, তা বেনজির। বলছে প্রশাসনই। ছবি: রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
মুম্বই শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৭ ১৮:৪৭
Share: Save:

বিপুল এবং বেনজির মরাঠা জমায়েতে অচল হয়ে গেল প্রায় গোটা মুম্বই। শিক্ষা এবং সরকারি চাকরিতে মহারাষ্ট্রের সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায় মরাঠাদের জন্য সংরক্ষণের দাবি তুলে গত এক বছর ধরেই মিটিং-মিছিল চলছিল রাজ্যের বিভিন্ন অংশে। বুধবার মুম্বইতে কেন্দ্রীয় জমায়েত হল। গোটা মহারাষ্ট্র থেকে মুম্বইতে জড়ো হওয়া লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড়ে মুম্বইয়ের রাস্তাঘাট অবরুদ্ধ তো হলই। প্রভাব পড়ল মুম্বইয়ের রেল পরিষেবাতেও। মহারাষ্ট্র বিধানসভাও এ দিন উত্তাল হয়েছে মরাঠা সংরক্ষণের দাবিতে। মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস জানিয়েছেন, তাঁর সরকার মরাঠাদের জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করার পক্ষে।

প্রায় ৯ লক্ষ আন্দোলনকারী মহারাষ্ট্রের নানা প্রান্ত থেকে এ দিন মুম্বইতে জড়ো হয়েছিলেন বলে মুম্বই পুলিশ হিসেব দিয়েছে। বাইকালার জিজামাতা উদ্যান থেকে দক্ষিণ মুম্বইয়ের আজাদ ময়দান পর্যন্ত মৌন মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল ‘সকল মরাঠা সমাজ’ নামে একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে। মহারাষ্ট্রের সরকারি চাকরিতে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মরাঠা সম্প্রদায়ের জন্য আসন সংরক্ষণের দাবিতে এই মৌন মিছিলের ডাক দিয়েছিল সংগঠনটি। গত এক বছর ধরেই সকল মরাঠা সমাজের ডাকে এই আন্দোলন চলছিল। রাজ্যের বিভিন্ন অংশে এর আগেই ৫৭টি মিছিল করেছেন মরাঠা সম্প্রদায়ের মানুষ। বুধবার ছিল ৫৮তম তথা চূড়ান্ত মিছিল। গোটা রাজ্য থেকেই যে লোকজন এই মিছিলে যোগ দিতে আসবেন, তা প্রশাসন আঁচ করেছিল। তাই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ১০ হাজার পুলিশ কর্মী এ দিন রাস্তায় নেমেছিলেন। কিন্তু জমায়েত যে এত বড় আকার নেবে, তা প্রশাসনও আঁচ করেনি।

মুম্বইয়ের আজাদ ময়দানে বুধবার ৯ লক্ষের কাছাকাছি আন্দোলনকারী সমবেত হয়েছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। ছবি: পিটিআই।

ছাত্র-ছাত্রী, তরুণ প্রজন্ম, প্রবীণ নাগরিক— মরাঠা সমাজের সব অংশের প্রতিনিধিত্ব ছিল এ দিনের মিছিলে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে দক্ষিণ মুম্বইয়ের অধিকাংশ স্কুল-কলেজ এ দিন বন্ধ রাখা হয়েছিল। কিন্তু জিজামাতা উদ্যান থেকে শুরু হওয়া মিছিলের আকার এবং বিভিন্ন জেলা থেকে শহরে ঢুকতে থাকা মানুষের ঢল দেখে বেশ কিছু রাস্তায় যান চলাচলও বন্ধ করে দেয় পুলিশ। গেরুয়া টুপি, গেরুয়া পাগড়ি, গেরুয়া পতাকায় প্রায় গোটা মুম্বইয়ের রং-ই গেরুয়া হয়ে গিয়েছিল এ দিন।

আরও পড়ুন: গুয়াহাটির গাঁধী মণ্ডপে গাঁধী মূর্তি সরানো নিয়ে বিতর্ক

দেশের বাণিজ্যিক রাজধানীর রাস্তায় যখন এই বিপুল মরাঠা মিছিল, তখন মহারাষ্ট্র বিধানসভার অন্দরেও কিন্তু উত্তেজনা ছিল যথেষ্টই। শাসক-বিরোধী নির্বিশেষে সব দলের মরাঠা বিধায়করা এ দিন বিধানসভার ওয়েলে নেমে সংরক্ষণের দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস জানিয়েছেন, তিনি আন্দোলনকারীদের দাবির সঙ্গে সহমত। মরাঠা সম্প্রদায়কে সংরক্ষণের সুযোগ দেওয়া উচিত, সে কথা ইতিমধ্যেই বম্বে হাইকোর্টকে জানিয়েছে তাঁর সরকার।

আরও পড়ুন: আপনারা কি পাকিস্তানের সমর্থক? সাংবাদিকদের প্রশ্ন বিহারের মন্ত্রীর

মরাঠারা সংরক্ষণ পাবেন কি না, সে বিষয়টি এখন বম্বে হাইকোর্টের বিচারাধীন। আইন অনুযায়ী সরকারি চাকরিতে বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫০ শতাংশের বেশি আসনকে বর্ণভিত্তিক সংরক্ষণের আওতায় আনা যায় না। জাত-পাত বা বর্ণের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্রে ৫০ শতাংশ সংরক্ষণ রয়েছে। তাই মরাঠাদের জন্য নতুন করে বর্ণভিত্তিক সংরক্ষণ দেওয়া সম্ভব নয়। এর আগে কংগ্রেস-এনসিপি সরকারের আমলে মরাঠা সম্প্রদায়ের জন্য চাকরিতে এবং শিক্ষায় ১৬ শতাংশ সংরক্ষণ দেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছিল। মরাঠাদের অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণি হিসেবে ঘোষণা করে ওই সংরক্ষণের ব্যবস্থা করার চেষ্টা হয়েছিল। দেবেন্দ্র ফডণবীসের সরকার সেই পথেই মরাঠা সংরক্ষণ ঘোষণা করার কথা ভাবছে। তবে তার আগে বম্বে হাইকোর্টের অনুমতি নিতে হবে সরকারকে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE