Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

খতম দুই জঙ্গি, সংঘর্ষ শেষ হল শ্রীনগরে

আজ সকালে জঙ্গিদের খতম করতে চূড়ান্ত অভিযান শুরু করে সিআরপিএফ ও পুলিশ। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের আইজি এস পি পানি জানান, জঙ্গিদের এক জন ওই পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে বেরিয়ে পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করে। তখনই খতম হয় সে। অন্য জনকে বাড়ির ভিতরে ঢুকে খতম করেন জওয়ানেরা।

সতর্ক সেনা। ছবি: পিটিআই।

সতর্ক সেনা। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীনগর শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪৫
Share: Save:

দুই জঙ্গি খতম হওয়ায় আজ শেষ হল শ্রীনগরের বুকে সংঘর্ষ। কিন্তু সে দিনই জম্মুর দোমানায় সেনা শিবিরে আক্রমণের চেষ্টা বুঝিয়ে দিল আপাতত রাজ্যে শান্তি ফেরার সম্ভাবনা কম। অন্য দিকে জম্মুর সুঞ্জওয়ান ঘাঁটি থেকে আজ আরও এক জওয়ানের দেহ উদ্ধার করেছে বাহিনী।

গতকাল শ্রীনগরের কর্ণনগরে সিআরপিএফের শিবিরে হামলা চালায় জঙ্গিরা। তবে শিবিরে ঢুকতে পারেনি তারা। রক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষের পরে ওই জঙ্গিরা শ্রীনগর মেডিক্যাল কলেজের কাছে এক পরিত্যক্ত বাড়িতে আশ্রয় নেয়। শিবিরের কাছে সংঘর্ষে নিহত হন এক সিআরপিএফ জওয়ান।

আজ সকালে জঙ্গিদের খতম করতে চূড়ান্ত অভিযান শুরু করে সিআরপিএফ ও পুলিশ। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের আইজি এস পি পানি জানান, জঙ্গিদের এক জন ওই পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে বেরিয়ে পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করে। তখনই খতম হয় সে। অন্য জনকে বাড়ির ভিতরে ঢুকে খতম করেন জওয়ানেরা। এক সিআরপিএফ জওয়ান সামান্য আহত হয়েছেন। ইদ্রিস ও শুকুর নামে ওই দুই জঙ্গিই লস্কর ই তইবার সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ। গত কালই এই হামলার দায় নিয়েছিল লস্কর।

শ্রীনগরে সংঘর্ষ শেষ হওয়ার আগেই আজ ভোরে জম্মুর দোমানায় সেনা ঘাঁটি লক্ষ করে গুলি চালায় জঙ্গিরা। সেনা জানিয়েছে, দুই মোটরবাইক আরোহী জঙ্গি শিবিরের মূল ফটকের দিকে এগোলে তাদের থামতে বলেন রক্ষীরা। তখনই গুলি চালায় জঙ্গিরা। রক্ষীরা পাল্টা গুলি চালালে তারা পালায়। জঙ্গিদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে বাহিনী।

আজ শেষকৃত্যের জন্য বাড়িতে পৌঁছয় সুঞ্জওয়ানে নিহত সেনা ইকবাল শেখ, মহম্মদ আশরফ, হাবিবুল্লা কুরেশি ও মনজুর আহমেদের দেহ। জঙ্গি নেতা বুরহান ওয়ানির জন্মস্থান ত্রালে বাড়ি ইকবাল শেখের। সুঞ্জওয়ানের ঘাঁটিতে হামলায় ইকবালের সঙ্গে নিহত হয়েছেন তাঁর বাবা গুলাম মহম্মদ শেখও। আজ তাঁরও শেষকৃত্য হয়। ভিড় জমান শ’য়ে শ’য়ে মানুষ। কুপওয়ারা ও কুলগামে মহম্মদ আশরফ, হাবিবুল্লা কুরেশি ও মনজুর আহমেদের শেষকৃত্যেও একই চিত্র দেখা গিয়েছে।

জঙ্গি নেতা নিহত হলে উত্তাল হয় যে ত্রাল, সেখানে সেনার গাড়িতে তেরঙা পতাকা মোড়া জওয়ানের দেহ ঘিরেও প্রায় একই আবেগ বার বার দেখেছে কাশ্মীর। বস্তুত ত্রালে ইকবাল শেখের বাড়ি থেকে বুরহান ওয়ানির বাড়ির দূরত্ব এক কিলোমিটারও নয়। ইকবালের গ্রাম রেশিপোরার সরপ়ঞ্চ মহম্মদ মকবুল, স্থানীয় চিকিৎসক মুদাসির আহমেদরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, মারা গিয়েছেন তাঁদের ঘরের ছেলেই। মুদাসিরের প্রশ্ন, ‘‘কবে এই রক্তপাত থামবে বলতে পারেন?’’ মকবুল জানিয়েছেন, ত্রালের বাসিন্দারা অনেকেই সেনাবাহিনীতে কাজ করেন। বুরহান ওয়ানির মতো জঙ্গিরাই ত্রালের একমাত্র প্রতিনিধি নয়। তাঁর কথায়, ‘‘রাজনৈতিক আদর্শ ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু অনেক স্থানীয় যুবকই সেনায় কাজ করতে আগ্রহী। তবে কাশ্মীরে পরিস্থিতি ক্রমশই খারাপ হচ্ছে।’’

সুঞ্জওয়ান ঘাঁটি থেকে আজ আরও এক জওয়ানের দেহ উদ্ধার করেছে সেনা। তাঁর পরিচয় এখনও প্রকাশ করা হয়নি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE