স্বামী প্রেমশঙ্করের সঙ্গে খাবারের দোকানে স্নেহা। ছবি: ফেসবুক।
নিয়ম করে রোজ ভোরে ঘুম থেকে ওঠা। কাকভোর থেকে শুরু হয় পড়াশোনা। সকাল গড়িয়ে সূর্য ওঠে মাথার উপর। বইপত্র ছেড়ে ওঠেন স্নেহা লিম্বগাওমকরও। লেগে পড়েন ময়দা মাখা, তরকারি কাটা থেকে শুরু করে মশলা বাটার কাজে। শেষ নয় এখানেই। সন্ধ্যা নামে। প্রতিদিন সন্ধেয় কেরলের কারিয়াভাত্তোমে টেকনোপার্কের কাছেই রাস্তার উপরেই স্বামী প্রেমশঙ্কর মান্ডালের অস্থায়ী খাবারের দোকানে পৌঁছে যান স্নেহা। অনেকটা রাত পর্যন্ত স্বামী-স্ত্রীতে মিলে লেগে থাকেন ওমলেট, পরোটা, দোসা তৈরিতে। ক্রেতাদের খাইয়ে দাইয়ে ফের বাড়ি ফিরে পড়াশোনা। এ ভাবেই চলে সারাটা দিন। ভোর থেকে রাত অবধি অমানুষিক ধকল আর মালুল হয় না সোনালি স্বপ্নের জাল বুনতে বুনতে।
মনের ভিতরে এক অদম্য জেদ। যে করেই হোক শেষ করতে হবে পিএইচডি-র পড়াশোনা। আর তাই সকালে পড়াশোনা করে রাতে স্বামীর সঙ্গে পরোটা বিক্রি করেন মহারাষ্ট্রের স্নেহা লিম্বগাওমকর।
আরও পড়ুন: অরুণাচলে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢোকার চেষ্টা চিনা ফৌজের, দেখুন ভিডিও
সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট অরকুটে প্রথম আলাপ। সেখানে থেকেই প্রেম। কিন্ত বাধ সাধেন স্নেহার বাবা-মা। পছন্দ নয় পাত্র। বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে ভালোবাসার মানুষকে বিয়ে করেন স্নেহা। কিন্তু পড়াশোনাটা কোনও ভাবেই ছাড়তে চাননি স্নেহা। ডক্টোরাল রিসার্চ ফেলোশিপ নিয়ে চলে আসেন কেরল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে। তখন ক্যাগ(সিএজি)-এ চাকরি করতেন প্রেমশঙ্কর। স্নেহা থাকতে শুরু করেছেন দিল্লিতে। সেই অবস্থায় স্ত্রীর সঙ্গে থাকতে দিল্লির সেই কাজ ছেড়ে করলে চলে আসেন প্রেমশঙ্কর। কোনও কাজ নেই। কিন্তু স্নেহার স্কলারশিপের টাকায় পড়াশোনা এবং সংসার চালানো দায়। সেই অবস্থায় স্বামী-স্ত্রী দু’জনে মিলে শুরু করেন এই ছোট্ট ব্যবসা। এখন তাঁদের লক্ষ্য পিএইচডি শেষ করে জার্মানি পাড়ি দেওয়া। ভবিষ্যতে নিজের রেস্তোরাঁ খোলারও স্বপ্ন দেখেন দম্পতি। প্রতিদিন সন্ধ্যের মধ্যে পড়াশোনা শেষ করে দু’জনে মিলে চালান পরোটার দোকান। অল্পদিনের মধ্যে স্নেহা-প্রেমশঙ্করের ছোট্ট খাবারের দোকান রীতিমতো হিট। তাঁদের দোকানের কোনও একজন ক্রেতা স্নেহা-প্রেমশঙ্করের এই কাহিনি ফেসবুক পোস্ট করে দেন। তারপর থেকে তাঁদের কঠিন লড়াই সোশ্যাল মিডিয়ায় জোর চর্চায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy