এস জয়শঙ্কর
গত জুনে তৎকালীন বিদেশসচিব জয়শঙ্করের নেতৃত্বে চেষ্টাটা শুরু হয়েছিল।
ঠিক আট মাস পরে গত কাল যখন মুম্বই হামলার মূল মস্তিষ্ক হাফিজ সইদকে জঙ্গি ঘোষণা করল পাকিস্তান, তখন অবশ্য জয়শঙ্কর অবসর নিয়েছেন। তবে বিদেশ মন্ত্রকের একটা বড় অংশ মনে করছে, পাকিস্তান প্রশ্নে সাম্প্রতিক অতীতে এত বড় সাফল্য আর পাওয়া যায়নি। যার নেপথ্য নায়ক এস জয়শঙ্করই। আর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানাচ্ছে, নয়াদিল্লির কূটনৈতিক প্রয়াস ছিল ঠিকই। কিন্তু আন্তর্জাতিক (মার্কিন) চাপ তৈরি না হলে এত বড় সিদ্ধান্ত নিতে কিছুতেই বাধ্য করা যেত না ইসলামাবাদকে।
বিদেশ মন্ত্রক জানাচ্ছে, গত বছর জুনে স্পেনের ভ্যালেন্সিয়ায় কূটনৈতিক যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। সন্ত্রাসে আর্থিক মদত রুখতে গঠিত ১৯৮টি দেশের ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ)-এর বৈঠকের জন্য বিস্তারিত একটি রিপোর্ট তৈরি করেছিলেন জয়শঙ্কর। তাতে তথ্য এবং পরিসংখ্যান দিয়ে দেখানো হয়, জামাত-উদ-দাওয়া, জইশ ই মহম্মদের মত জঙ্গি সংগঠনগুলিকে পাকিস্তান কী ভাবে বছরের পর বছর আর্থিক সহায়তা করে চলেছে। ওই রিপোর্টটির ভিত্তিতে পাকিস্তানকে কারণ দর্শাতে বলে এফএটিএফ। এ মাসের ১৮ তারিখ থেকে প্যারিসে ফের বসতে চলেছে এফএটিএফের সমাবেশ। সেখানে পাকিস্তানের কোণঠাসা হওয়ার সম্ভাবনা ছিল ১০০ শতাংশ। এই সংস্থার প্রস্তাব মেনে বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে আর্থিক নিষেধাজ্ঞাও জারি হতে পারে— এমন খবরও ইসলামাবাদের কাছে ছিল। তাই হাফিজের জন্য দরজা বন্ধ করা ছাড়া উপায় ছিল না।
ভারত এফএটিএফ-কে যে রিপোর্টটি দেয়, সেখানে স্পষ্ট বলা হয়, গত ১৫ বছরে জঙ্গি নেতা হাফিজ সইদের জেইউডি-র মুখ্য শাখা সংগঠন ফালাহ-ই-ইনসানিয়াৎ-এর ৬৯টি অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছে ইসলামাবাদ, যা নেহাতই লোকদেখানো। নামে-বেনামে তাদের অন্তত হাজারটি অ্যাকাউন্ট চালু রয়েছে, যেখানে নিয়মিত ভাবে টাকা জমা পড়ে। বারবার বলা সত্ত্বেও জঙ্গি সংগঠনটির টাকার জোগান বন্ধে উদ্যোগ নেওয়া তো দূর, বরং তাদের শ্রীবৃদ্ধির জন্য আরও বেশি করে টাকা জোগানের ব্যবস্থা করে গিয়েছেন পাক রাজনৈতিক নেতৃত্বের একটি অংশ!
ডোভাল শিবিরের বক্তব্য, আমেরিকার ভূমিকাও এখানে বিরাট ভবে গুরুত্বপূর্ণ। মাস দুয়েক আগে আফগান-নীতি ঘোষণার পর থেকেই পাক মদতপ্রাপ্ত সন্ত্রাস নিয়ে সরব হয় হোয়াউট হাউস। পাকিস্তানকে আর্থিক সাহায্য বন্ধ করে দেওয়া থেকে শুরু করে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলতেও ছাড়েননি ট্রাম্প। সেটা ছিল ইসলামাবাদকে সবক শেখানোর একটা কৌশল মাত্র। কারণ পাকিস্তানকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে যে আফগানিস্তান-জট কাটানো সম্ভব নয়, এটা ওয়াশিংটন জানে। সেই কৌশলেরই পরবর্তী ধাপ হিসেবে গত কাল আমেরিকার বাজেটে সামরিক খাতে পাকিস্তানের জন্য ৮ কোটি ডলার রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প। ডোভাল শিবির মনে করছে, হাফিজ সইদ তথা পাক জঙ্গি সংগঠনগুলিকে নিষিদ্ধ করা নিয়ে ইসলামাবাদের সঙ্গে আমেরিকার একটা বোঝাপড়া আগেই হয়ে গিয়েছিল। আর তারই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে মার্কিন বাজেটে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy