বিহারে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফার্স্ট গার্লের উত্তরে মুখ পুড়েছে সরকারের। প্রশ্ন উঠেছে রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থার মান নিয়ে। প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্য শিক্ষা দফতরের মান বাঁচাতে তড়িঘড়ি ফের ১৪ জন ছাত্রছাত্রীর পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ওই ছাত্রছাত্রীদের হাতের লেখাও খতিয়ে দেখা হবে। তাঁরা কি আদৌ পরীক্ষায় বসেছিলেন, না কি অন্য কেউ তাঁদের হয়ে পরীক্ষায় বসেছে, এই নিয়ে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
উচ্চ মাধ্যমিক টপার রুবি রাই ও সৌরভ শ্রেষ্ঠ-র একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছিল স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যম। পলিটিক্যাল সায়েন্স কী তা নিয়ে রুবিকে প্রশ্ন করা হলে যা উত্তর তাঁর কাছে থেকে পাওয়া গিয়েছে সেটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরই বিহারের শিক্ষাব্যবস্থার ফোঁকর সামনে চলে এসেছে।
বিহারের শিক্ষা ব্যবস্থার আসল চিত্রটি কেমন, এক সমীক্ষায় তা উঠে এসেছে। বিহারে পরীক্ষার কথা উঠলেই গত বছরের একটি দৃশ্য ভেসে ওঠে। দৃশ্যটি ছিল এক পরীক্ষাকেন্দ্রের। দেখা যায়, ছাত্রছাত্রীদের নকল করতে বন্ধু, আত্মীয় এমনকী মা-বাবারাও সাহায্য করছেন। পরীক্ষার হলের জানলা দিয়ে নকল সরবরাহ চলছে। আর এ সবই ঘটছে পরীক্ষকদের সামনে! বিহারের এই ছবিটা খুব একটা অস্বাভাবিক নয়। সব থেকে চমকপ্রদ এবং আশঙ্কার বিষয়টি হল, প্রশ্নপত্র থেকে উত্তরপত্র, এমনকী সব থেকে বেশি নম্বরের জন্য টাকা নিয়ে দর কষাকষি হয়। কেমন সেই দর? ফার্স্ট ডিভিশনের জন্য দর ওঠে ৪০-৫০ হাজার এবং সব থেকে বেশি নম্বর পাওয়ার জন্য এক লক্ষ টাকা। আবার পরীক্ষা দেওয়ার জন্য রাজ্যজুড়ে বেশ কিছু শিক্ষকও রয়েছেন যাঁরা বেশ সক্রিয়। দু’দশক আগেও শিক্ষকেরা পরীক্ষার উত্তর ব্ল্যাকবোর্ডে লিখে দিতেন। তবে এখন অবাধে নকল করতে সাহায্য করেন এক শ্রেণির শিক্ষকই।
কেন এই অবস্থা?
সমীক্ষা বলছে রাজ্যে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে, কিন্তু শিক্ষার গুণগত মান একেবারে তলানিতে। স্কুল-কলেজগুলিতে ছাত্রছাত্রীরা এলেও, শিক্ষকদের অনুপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। শিক্ষকদের অবস্থাও তথৈবচ। কেউ শেক্সপীয়রকে উচ্চারণ করছেন স্যাক্সপীয়ার, কেউ আবার ম্যাথামেটিক্সকে বলছেন ম্যাথমেটস।
প্রতি বছরই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ৭০-৮০ শতাংশ পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হন। কিন্তু এ বছরে যেই না নকলের উপর কড়াকড়ি করা হয়, অমনি পাশের হার নেমে দাঁড়িয়েছে এক ধাক্কায় ৫০-৬০ শতাংশে।
আরও পড়ুন...
রাষ্ট্রবিজ্ঞান রান্না শেখায়, ফার্স্ট গার্লের উত্তরে লজ্জায় পড়ে গেছে বিহার
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy