উল্লাস: বিজয়ী সুনীল জাখড়কে ঘিরে সিধু ও সমর্থকেরা। গুরদাসপুরে। ছবি: পিটিআই।
আবার জয়ের স্বাদ! মাস ছয় আগে পঞ্জাবে পালাবদল ঘটিয়ে ক্ষমতায় আসার পরে কংগ্রেস ফের বিপুল জয় পেল এ রাজ্যের গুরদাসপুরে। বিজেপির স্বর্ণ সিংহ সালারিয়াকে বিপুল ভোটে হারিয়ে এই লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জিতলেন কংগ্রেসের সুনীল জাখড়। গত ২৭ এপ্রিল বিজেপি সাংসদ বিনোদ খন্নার মৃত্যুতে শূন্য হয়েছিল আসনটি।
স্বাভাবিক ভাবেই উচ্ছ্বসিত মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহ ও তাঁর দল। কংগ্রেসের অধিকাংশ নেতার মতেই এটা দলের ‘পুনরুজ্জীবনের বার্তা’। কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে বলেছেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদীর কাজ না করে শুধু কথা বলার নীতিতে বীতশ্রদ্ধ মানুষ ফের কংগ্রেসের নীতি ও আদর্শে আস্থা রেখেছেন। বিজেপি-অকালির দাদাগিরি ও গুন্ডামির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেস যে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, সেটা বুঝেই ঢেলে ভোট দিয়েছেন মানুষ।’’
মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র একে মোদী ও বিজেপির কু-নীতির বিরুদ্ধে ‘কংগ্রেসের জয়যাত্রার সূচনা’ হিসেবে দেখছেন। তাঁর মতে, ‘‘এটা ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের জয়ের সংকেত।’’ ‘‘গুরদাসপুরের ফল রাহুল গাঁধীর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ভিত গড়ে দিল,’’ বলেও মন্তব্য করেছেন ক্যাপ্টেন। এই জয় ক্রিকেট-স্মৃতি উস্কে দিয়েছে ক্যাপ্টেনের মন্ত্রিসভার অভিনেতা-সদস্য নভজ্যোত সিংহ সিধুর। তাঁর কথায়, ‘‘এটা টেস্ট ম্যাচে ইনিংস জয়।’’ ‘দীপাবলির সুন্দর উপহার’ রাহুলের উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন সিধু।
আরও পড়ুন:উপহার-ডালি নিয়ে কাঠমান্ডু যাচ্ছেন মোদী
এত দিন গুরদাসপুরে জয়ের ব্যবধানের রেকর্ড ছিল কংগ্রেসেরই। ১৯৮০-তে ১.৫১ লক্ষ ভোটে প্রতিপক্ষকে হারিয়েছিলেন সুখবংশ কৌর ভিন্দার। সেই রেকর্ড ছাপিয়ে গেলেন জাখড়। পেয়েছেন ৪,৯৯,৭৫২টি ভোট, বিজেপির সালারিয়া ৩,০৬,৫৫৩টি এবং আপের সুরেশ খাজুরিয়া সাকুল্যে ২৩,৫৭৯টি।
গুরদাসপুরে ২০১৪-তে ভোট পড়েছিল ৭০%। কংগ্রেসের প্রতাপসিংহ বাজওয়াকে ১.৩৬ লক্ষ ভোটে হারান বিনোদ। এ বারে ভোট পড়েছে মাত্র ৫৬%। এত কম ভোট পড়া সত্ত্বেও ১.৯৩ লক্ষের বেশি ভোটে জেতায় কংগ্রেসের মনোবল বেড়েছে আরও। এই লোকসভা কেন্দ্রের সব বিধানসভা এলাকাতেই জিতেছেন জাখড়। রাহুল নিজে টুইট না করলেও দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে টুইটারে জাখড় ও পঞ্জাবের কংগ্রেস কর্মীদের এবং সেই সঙ্গে কেরলে বেঙ্গারা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জয় আনার জন্য দলীয় কর্মীদের অভিনন্দন জানানো হয়েছে।
বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্র গুরদাসপুরে বেধড়ক হারকে ‘ছোট বিষয়’ আখ্যা দিলেও পঞ্জাবের নেতারা বলছেন মূলত ৬টি কারণের কথা। সেগুলি হলো: ১) রাজ্যে কংগ্রেস ক্ষমতায় ফেরার পরে প্রথম ভোট। প্রশাসনকে পুরোদস্তুর কাজে লাগিয়েছে সরকার। ২) প্রদেশ সভাপতি প্রার্থী বলে কংগ্রেস একজোট হয়ে লড়েছে। ৩) বিজেপির প্রার্থী বাছাই ঠিক হয়নি। প্রার্থী ও অকালি নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ওঠায় মামলা বিগড়ে গিয়েছে আরও। ৪) জিএসটি চালু হওয়ার পর থেকে নানা রকম সমস্যার মুখে পড়ে ব্যবসায়ীরা বিরূপ হয়েছেন। ৫) গত বিধানসভা ভোটে বিজেপি ২৩টি আসনে লড়ে জিতেছিল মাত্র ৩টিতে। ছ’মাসেই ঘুরে দাঁড়ানোর তেমন আশাও ছিল না। ৬) অতীতে আম আদমি পার্টির জোরালো উপস্থিতি লড়াইকে তিন-মুখী করে তোলায় সুবিধে পেয়েছিলেন বিনোদ। এ বারে আপ প্রার্থীর জামানতই বাজেয়াপ্ত হয়ে গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy