কংগ্রেসকেই ‘কংগ্রেস-মুক্ত’ হওয়ার দাওয়াই দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ তার পাল্টা দিল কংগ্রেস ও বিরোধীরা। সেটি হল, বিজেপিরই উচিত ‘বিজেপি-মুক্ত’ হওয়া। এখানেই শেষ নয়, মোদীকে খোঁচা দিয়ে এনডিএ শরিক শিবসেনাও বলল, কংগ্রেস ছিল এবং থাকবে।
এক বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী মোদী গত কাল বলেছিলেন, গত লোকসভা ভোটের সময়ে তিনি ‘কংগ্রেস-মুক্ত’ হওয়ার স্লোগান দিয়েছিলেন। তবে এর পিছনে মূল ভাবনা ছিল গোটা দেশকে কংগ্রেসের সংস্কৃতি থেকে মুক্তি দেওয়ার।
আজ এআইসিসি দফতরে দলীয় মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি পাল্টা প্রশ্ন তোলেন, বিভাজন, সাম্প্রদায়িকতা, অসহিষ্ণুতা, অবৈজ্ঞানিক তত্ত্ব, ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের মতো বিজেপি-রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের সংস্কৃতি থেকেই মুক্তি চাইছে জনতা। জওহরলাল নেহরুর সময় থেকেই ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র, স্বাধীন বিদেশ নীতি, সকলকে নিয়ে চলা থেকে শুরু করে মনমোহন সিংহের জমানায় আধার, তথ্য জানার অধিকার, একশো দিনের কাজ, আর্থিক বৃদ্ধিই কংগ্রেসের সংস্কৃতি। এর মধ্যে কোনটি বাদ দিতে চান প্রধানমন্ত্রী?
শরদ যাদবের মতো নেতাও বলেন, ‘‘কোন মুখে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলছেন? হিন্দু-মুসলিম (ভেদাভেদের) সংস্কৃতি তো তাঁদেরই তৈরি করা। কংগ্রেসের সংস্কৃতি না দেখে নিজেদের ঘরের দিকেই নজর দিন প্রধানমন্ত্রী!’’ কংগ্রেস নেতা আহমেদ পটেলও বলেন, ‘‘যাঁরা শতাব্দী-প্রাচীন কংগ্রেসের সংস্কৃতি নিয়ে জ্ঞান দিচ্ছেন, তাঁরা আগে নিজেদের বিভাজনের রাজনীতি থেকে মুক্ত হন। বিজেপিরই উচিত বিজেপি-মুক্ত হওয়া।’’
তবে এ কথা বললেও প্রতিক্রিয়ার সুরকে উচ্চগ্রামে নিয়ে যেতে চাইছে না কংগ্রেস। দলের নেতাদের মতে, কংগ্রেসকে এ ভাবে বিঁধলে তা নিয়ে যে বিতর্ক হবে, সেটি বিলক্ষণ জানেন প্রধানমন্ত্রী। আর তিনি সেটাই চান। আলোচনার অভিমুখটা নিজের সরকারের থেকে কৌশলে কংগ্রেসের দিকে ঘুরিয়ে দিতে চান তিনি। তাই পাল্টা সংযম দেখাচ্ছে কংগ্রেস।
কিন্তু এরই মধ্যে মোদীকে কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে শিবসেনা। দলের নেতা সঞ্জয় রাউত বলেছেন, ‘‘কংগ্রেস একটি ইতিহাস। কারও কথায় তাদের এ ভাবে নির্মূল করা যায় না। অতীতেও তারা ছিল। এখনও আছে। ভবিষ্যতেও থাকবে।’’
ঘরে-বাইরে খোঁচা খেয়েও কিন্তু বিতর্ককে জিইয়ে রাখতে চাইছে বিজেপি। তাই প্রধানমন্ত্রীর সুরে সুর মেলাতে আজ দলের নেতাদেরও আসরে নামিয়ে দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী বিদেশে পাড়ি দিলেও কংগ্রেসের ‘কংগ্রেস-মুক্তি’ নিয়ে গলা চড়াতে নেমে পড়েন তাঁর মন্ত্রীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy