স্বাগত: ভারত সফরে এসেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার দিল্লি বিমানবন্দরে তাঁকে অভ্যর্থনা নরেন্দ্র মোদীর। ছবি: পিটিআই।
তিস্তা জট ছাড়াতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে চলতি সফরে আলাদা করে বসতে চাইছেন শেখ হাসিনা। এবং সম্ভব হলে সেটা কাল সন্ধ্যায়ই। আজ একান্ত কথাবার্তায় নিজেই এ কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিমান নয়াদিল্লির টারম্যাক ছোঁয়ার ঠিক আগে শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে এসে পৌঁছন চানক্যপুরীতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের একটি অনুষ্ঠানে। সেখানেই একান্ত ভাবে কিছু ক্ষণ কথা বলেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী যে অল্প ক্ষণের মধ্যেই দিল্লি পৌঁছচ্ছেন— এই তথ্য তাঁকে জানানোর সঙ্গে সঙ্গে হাসিনা ব্যগ্র ভাবে জানতে চান— ঠিক ক’টার ফ্লাইটে আসছেন মমতা? সময় বলার পর জানতে চাওয়া হয়, কী বার্তা তিনি মমতাকে দিতে চান? তৎক্ষণাৎ জবাব দেন মুজিব কন্যা, ‘‘মমতার জন্য সব সময়ই শুভেচ্ছা রয়েছে। তবে এ বার আমি ওঁর সঙ্গে আলাদা ভাবে বসতে চাই। কথা বলতে চাই। কাল রাতেই চেষ্টা করব ওঁর সঙ্গে আলাদা করে বসার।’’ তিস্তা নিয়ে কী বলবেন মমতাকে? কতটা আশাবাদী তিনি? বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর জবাব, ‘‘আমি সব সময়েই আশাবাদী। এ বারে তো মমতাও আসছেন। দেখা যাক কী হয়। আমি যতটা সম্ভব এ নিয়ে ওঁকে বুঝিয়ে বলব।’’
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে কাল সন্ধ্যায় মমতা বা শেখ হাসিনা কারওরই কোনও পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি নেই। কাল দুপুরে হায়দরাবাদ হাউসে নরেন্দ্র মোদীর দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে মমতা-হাসিনা দু’জনেই উপস্থিত থাকছেন। সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রণববাবুর সঙ্গে ঘরোয়া নৈশাহার করার কথা হাসিনার। আবার পরশু রাতে হাসিনার সম্মানে রাষ্ট্রপতি ভবনে যে বিশেষ ভোজসভা, সেখানেও থাকবেন মমতা। সাত বছর আগে হাসিনা যখন ভারতে এসেছিলেন তখনও মমতা হোটেলে এসেছিলেন দেখা করতে। তবে সেই সাক্ষাৎকার ছিল নেহাতই সৌজন্যের।
ঢাকা-দিল্লি ৩০ চুক্তির এক ডজন
• ঢাকাকে ৫০০কোটি ডলার ঋণ
• অস্ত্র কিনতে আরও ৫০কোটি ডলার
• প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় সমঝোতাপত্র
• অসামরিক পরমাণু ক্ষেত্রে সাহায্য
• কলকাতা-খুলনা বাস
• কলকাতা-খুলনা মৈত্রী এক্সপ্রেস
• সীমান্ত হাটের সংস্কার ও সংখ্যা বৃদ্ধি
• বিশাখাপত্তনম-চট্টগ্রাম যাত্রী-জাহাজ
• ত্রিপুরা থেকে বাড়তি বিদ্যুৎ
• যৌথ উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধের তথ্যচিত্র
• বিচারবিভাগীয় ক্ষেত্রে সহযোগিতা
• পণ্য পরিবহণে জলপথের উন্নয়ন
কূটনৈতিক সূত্রের মতে, এর আগে মমতার সঙ্গে দৌত্যে যে ভুল বাংলাদেশ এবং ভারত বারবার করেছে, আর তা করতে চান না হাসিনা। পাঁচ বছর আগে কলকাতায় গিয়ে তিস্তা চুক্তি নিয়ে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েছিলেন বাংলাদেশের তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী দীপু মণি। আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনালে যাওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন। পরিণামে মমতার চোয়াল আরও শক্ত হয়, শেখ হাসিনা অসন্তুষ্ট হন এবং মন্ত্রিত্ব খোয়ান দীপু মণি। এ বারের সফরে মমতার সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত রসায়নেই যে ভরসা করছেন হাসিনা, তা আজ স্পষ্ট হয়ে গেল।
আরও পড়ুন: সিট নিয়ে বিরোধে বিমান ২০ মিনিট দেরি, এ বার বিতর্কে দোলা সেন
ঠিক একুশ বছর পরে ফের রাষ্ট্রপতি ভবনে উঠলেন হাসিনা। মুজিব কন্যা বলেন, ‘‘১৯৯৬ সালে এখানে থেকেছি। এখন যেন আরও সুন্দর হয়েছে।’’ বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এ দিন রাষ্ট্রপতি ভবনে এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। সুষমার স্বাস্থ্যের খুঁটিয়ে খোঁজ নেন হাসিনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy