Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

‘আমি এখন মুক্ত’, প্রকাশ্যে বিচ্ছেদ ঘোষণা শাজাদার

মুসলিম আইনে পুরুষ যেমন স্ত্রী-কে তালাক দিতে পারেন, তেমনি স্ত্রীও ‘খুলা’-র মাধ্যমে বৈবাহিক চুক্তি থেকে মুক্তি পেতে পারেন। কিন্তু শাস্ত্র সুযোগ দিলেও বাস্তবে প্রায়শ তা ঘটে না বলেই মনে করেন শিক্ষাবিদ মীরাতুন নাহার।

শাজাদা খাতুন

শাজাদা খাতুন

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:৪৯
Share: Save:

তিন তালাককে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে গিয়েছিলেন মুসলিম মহিলারা। শীর্ষ আদালত তাৎক্ষণিক তিন তালাক প্রথাকে অবৈধ ঘোষণা করার পরে এ বার এক আলোড়ন ফেলে দেওয়া ঘটনার সাক্ষী রইল হিন্দি বলয়ের প্রাণকেন্দ্র লখনউ। শনিবার রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক ডেকে স্বামীর থেকে ‘খুলা’ বা বিচ্ছেদের কথা ঘোষণা করলেন স্কুলশিক্ষিকা শাজাদা খাতুন। তাঁর দাবি, স্বামী জুবের আলির থেকে অনেক দিনই বিচ্ছেদ চাইছিলেন তিনি। ধর্মগুরুদের মাধ্যমেই সেটা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সফল হননি। তাই মুক্তি পেতে এই পথই বেছে নিলেন।

আরও পড়ুন: স্তন্যদানের কক্ষ চাই: আঙুরলতা

শুধু মৌখিক ঘোষণা নয়, সাংবাদিক বৈঠকে খুলা-র জন্য একটি চিঠিতে সই করে সংবাদমাধ্যমকে শাজাদা বলেন, ‘‘আমি সবার সামনে খুলা-য় সই করছি। এটা পাঠাচ্ছি আমার স্বামীকে। আমি এখন মুক্ত।’’ মুসলিম উওম্যান লিগের সাধারণ সম্পাদিকা নইশ হাসান বিচ্ছেদের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যেতে শাজাদাকে সাহায্য করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, স্বামীর অত্যাচার থেকে মুক্তি চাইছিলেন শাজাদা। ১৮ মাস ধরে আলাদাও থাকছিলেন। তার পরেই এই পদক্ষেপ। ঘটনা হল, তিন তালাক, নিকাহ হালালা, বহুবিবাহ ইত্যাদি নিয়ে আপত্তি তুলে মুসলিম মহিলাদের দিক থেকে চাপ বাড়ছেই। আদালতে তাৎক্ষণিক তিন তালাক প্রথা অবৈধ আখ্যা পেেয়ছে। এ বার লখনউয়ের ঘটনা মুসলিম মহিলাদের সামাজিক আন্দোলনে অন্য মাত্রা যোগ করল।

মুসলিম আইনে পুরুষ যেমন স্ত্রী-কে তালাক দিতে পারেন, তেমনি স্ত্রীও ‘খুলা’-র মাধ্যমে বৈবাহিক চুক্তি থেকে মুক্তি পেতে পারেন। কিন্তু শাস্ত্র সুযোগ দিলেও বাস্তবে প্রায়শ তা ঘটে না বলেই মনে করেন শিক্ষাবিদ মীরাতুন নাহার। তাঁর মন্তব্য, ‘‘এমন ঘটনা জীবনে প্রথম শুনলাম। এটা সুসংবাদ। কারণ মুসলিম সমাজে মেয়েরা খুলা-র ব্যাপারটা ঠিক ভাবে জানেনই না। বোঝা যাচ্ছে তাঁরা সচেতন হচ্ছেন।’’

লখনউয়ের ঘটনা নিয়ে মুসলিম সমাজে অবশ্য মতভেদও রয়েছে। অল ইন্ডিয়া মুসলিম উওম্যান পার্সোনাল ল বোর্ডের সভানেত্রী শশিষা অম্বরের মতে, শাজাদা যা করেছেন, তা একেবারে ঠিক কাজ। কিন্তু মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের কার্যনির্বাহী সদস্য মৌলানা খালিদের দাবি, ‘‘যে পদ্ধতিতে খুলা-র কথা জানিয়েছেন শাজাদা, সেটা মোটেই ঠিক রাস্তা নয়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘একটা চিঠি দিয়ে দিলেই খুলা-র প্রক্রিয়া মিটে যায় না। খুলা-র জন্য স্বামীর উদ্দেশে নোটিস দিতে হয়। এমন নোটিস তিন বার পাঠালেও স্বামী যদি জবাব না দেন, তা হলে খুলা গ্রাহ্য হচ্ছে বলেই ধরে নেওয়া হবে।’’

তবে শাজাদা জানিয়েছেন, স্বামীর সঙ্গে থাকার জন্য কেউ তাঁকে জোর করতে পারেন না। যদি কারও অসুবিধা থাকে, তিনি আদালতে যেতে পারেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE