পয়লা মে থেকে আর দেখা যাবে না এই ছবি।
লালবাতির ব্যবহার নিয়ে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। এ বার থেকে কোনও গাড়িতেই আর লালবাতি ব্যবহার করা যাবে না। এমনকী, রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীর গাড়িতেও নয়। বুধবার নেওয়া এই সিদ্ধান্ত আগামী পয়লা মে থেকে কার্যকরী হবে।
তবে, লালবাতি নিষিদ্ধ হলেও আপত্কালীন পরিষেবা ক্ষেত্রের নীল বাতি আগের মতোই ব্যবহার করা যাবে। ওই তালিকায় রয়েছে দমকল, পুলিশ, অ্যাম্বুল্যান্স, সেনাবাহিনীর গাড়ি। রাস্তা ফাঁকা পেতে এবং জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে যাতে কোনও বাধা পেতে না হয়, সেই কারণেই নীল বাতির ব্যবস্থা। এ দিন সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী বলেন, ‘‘মন্ত্রিসভা ঐতিহাসিক এক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী পয়লা মে থেকে জরুরি পরিষেবা ছাড়া অন্য কোনও গাড়িতে বেকন বাতি ব্যবহার করা যাবে না।’’
এ দিনের বৈঠক প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভাপতিত্বে হয়। সেখানেই ঠিক হয়, আগামী মাস পয়লা থেকে আর কোনও গাড়িতেই লালবাতি ব্যবহার করা যাবে না। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী তো বটেই ওই তালিকায় উপ-রাষ্ট্রপতি, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্য সরকারের মন্ত্রী, কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারি আমলা, সুপ্রিম কোর্ট এবং হাইকোর্টের বিচারপতিরাও রয়েছেন। কোনও ব্যক্তি বা পদাধিকারী আর লালবাতিওয়ালা গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন না। তবে রাজ্য সরকারগুলিকে জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে কোন কোন গাড়িতে বাতি ব্যবহার করা যাবে তার নয়া তালিকা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাবরি কাণ্ডে আডবাণী-সহ ২১ জনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের মামলা বহাল
রাজধানীর রাস্তায় লাল বাতির সারি। ফাইল চিত্র
লালবাতি নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘ দিনের। অনেকেই ওই বাতি অপব্যবহার করেন বলে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি পঞ্জাবে ক্ষমতায় ফিরে এসে কংগ্রেসের অমরেন্দ্র সিংহ লালবাতিওয়ালা গাড়ি ছেড়ে দিয়েছিলেন। মন্ত্রীদের জন্যও তা নিষিদ্ধ করেছেন। এর আগে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে লালবাতি বর্জন করেছেন। তাঁকে অনুসরণ করেছেন বেশ কিছু মন্ত্রী। দিল্লিতে আপ সরকারের মন্ত্রীরাও বাতিহীন গাড়ি ব্যবহার করেন।
কিন্তু অধিকাংশ রাজ্যে মন্ত্রী, বড়-ছোট আমলা, সাংসদ, বিধায়ক, এমনকী পঞ্চায়েত প্রধানরাও লালবাতি নিয়ে ঘুরছেন। এত দিন লালবাতি ভারতের ‘ভিআইপি’ সংস্কৃতির প্রতীক হিসাবে গণ্য হত। সাধারণ নাগরিকদের থেকে স্বতন্ত্র থাকতেই এমনটা করেন অনেকে। লালবাতির প্রকৃত প্রয়োজন জরুরি কাজের জন্য যে দ্রুত গতিতে যাওয়ার সঙ্কেত, তা তাঁরা ভুলে যেতেন। কিছু পদাধিকারীকে ‘জরুরি’ বলে চিহ্নিত করাই যেন লালবাতির প্রধান কাজ হয়ে উঠেছিল।
এর আগে সুপ্রিম কোর্ট সাংবিধানিক পদাধিকারীদের জন্য লালবাতি, এবং জরুরি পরিষেবা ও পুলিশের জন্য নীল বাতির ব্যবহারও নির্দিষ্ট করে। বাতির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে রাজ্যগুলিকে নতুন তালিকা তৈরি করতে বলা হয়। কিন্তু, এ বার গোটা বিষয়টাকেই সমূলে বিনাশ করতে তত্পর হল কেন্দ্র। লালবাতির ব্যবহারই বন্ধ করে দেওয়া হল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy