প্রবীণ তোগাড়িয়া
এ যেন পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচনের ছবি।
ভুয়ো ভোটার, ধস্তাধস্তি, দুই শিবিরের সমর্থকদের তাণ্ডব-ভাঙচুর, খণ্ডযুদ্ধ, কড়া নিরাপত্তা, ভিডিওগ্রাফি, বিশেষ বাহিনীর উপস্থিতিতে ভোট- দিল্লির উপকণ্ঠে গুরুগ্রামে, সঙ্ঘের মতো শৃঙ্খলাবদ্ধ সংগঠনের শাখা বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সভাপতি নির্বাচনের ছবিটি ছিল আজ এমনই। ৫৪ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম বার ভোট হল সংগঠনে। যাতে নিজের প্রার্থী রাঘব রেড্ডি হেরে যাওয়ায় আপাতত বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ছেড়ে দিয়ে বিজেপি তথা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন ওই সংগঠনেরই প্রাক্তন প্রধান তথা হিন্দুত্বের মুখ প্রবীণ তোগাড়িয়া।
আজ ভোটের ফল প্রকাশ হলে দেখা যায়, ১৯২ জন সদস্যের মধ্যে তোগাড়িয়া ঘনিষ্ঠ রাঘব রেড্ডি পেয়েছেন মাত্র ৬০টি ভোট। আর হিমাচলের প্রাক্তন রাজ্যপাল বিষ্ণু সদাশিব কোকজে পেয়েছেন ১৬১টি ভোট। একটি ভোট বাতিল হয়। এর আগেও গত ডিসেম্বর মাসে ভুবনেশ্বরের কর্মসমিতির বৈঠকে তোগাড়িয়াকে সরানোর একটি প্রচেষ্টা শুরু হয়। আঁচ করে ভোটে চলে যান তোগাড়িয়া। রাঘব রেড্ডির জেতার মতো পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় সঙ্ঘের সুরেশ ভাইয়াজি জোশী ওই ভোট প্রক্রিয়া বাতিল করে দেন। আজও ভোট বানচাল করার চেষ্টা করেছিলেন তোগাড়িয়া। অভিযোগ তোলেন, অন্তত ৩৭ জন আসল ভোটারকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। যদিও সেই দাবি খারিজ হয়ে যায়। উল্টে জয়ী শিবিরের দাবি, আগের তালিকা মেনেই ভোট হয়েছে।
আজকের পরাজয়ের পিছনে নরেন্দ্র মোদীর হাত রয়েছে বলেই মনে করছে তোগাড়িয়া শিবির। অনেক দিন ধরেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে ব্যক্তিগত তিক্ততা মিটিয়ে নিতে চাইছিলেন তোগাড়িয়া। কিন্তু মোদী রফা তো করেননি, দেখাও পর্যন্ত করেননি। কার্যত উপেক্ষাই করছেন তোগাড়িয়াকে। অভিযোগ, সঞ্জয় জোশীর মতোই এ ক্ষেত্রেও তোগাড়িয়াকে রাজনৈতিক ভাবে শেষ করে দেওয়ার চক্রান্ত করেছেন মোদী। আজ তাই ফলাফল আসার পরেই তোগাড়িয়া সরাসরি আক্রমণ শানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকেই। তিনি বলেন, ‘‘আগামী ১৭ এপ্রিল থেকে আমদাবাদে কেন্দ্রীয় নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করা হবে।’’
আরও পড়ুন: বিহারে এ বার উচ্চবর্ণের নেতা চান কংগ্রেসিরা
তোগাড়িয়া শিবির জানিয়েছে, এ বার সরাসরি রাম মন্দির প্রশ্নে সরকারকে আক্রমণ শানানো হবে। তোগাড়িয়ার অভিযোগ, রামমন্দির আন্দোলনে অনেক হিন্দু প্রাণ হারিয়েছেন। ভোটের আগে মোদী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ক্ষমতায় আসলে রামমন্দির হবে। এখন বিষয়টি আদালতের হাতে ছেড়ে দিয়েছে সরকার। তোগাড়িয়াদের আশঙ্কা, আদালত রামলালার জন্য সামান্য জায়গা দিয়ে বাকিটা ছেড়ে দেবে মসজিদের জন্য। তাতে হিন্দুদের আক্রোশ বাড়বে বলেই মনে করছেন ওই হিন্দু নেতা। সেই ক্ষোভকেই মোদী তথা বিজেপির বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছেন তোগাড়িয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy