দেশদ্রোহিতার অভিযোগে ধৃত ছাত্রনেতা কানহাইয়া কুমারের মুক্তির দাবিতে। ছবি: এপি।
সুপ্রিম কোর্টে ভরা এজলাসের মধ্যেই আওয়াজ উঠল ‘বন্দে মাতরম’। শুনে চমকে উঠলেন বিচারপতিরা। দেখা গেল ওই স্লোগান যিনি দিয়েছেন, তিনি এক জন আইনজীবী। নাম রাজীব তডক।
খাস সুপ্রিম কোর্টের এজলাসে এমন ঘটনায় আশ্চর্য বিচারপতিরা জানিয়েছেন, ‘শীর্ষ আদালতে এমন হলে আমাদের আর কি বলার কিছু বাকি থাকে!’ এই মন্তব্যে আদালতের হতাশ ভাবটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। পরে যদিও স্লোগান দেওয়ার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন ওই আইনজীবী। বিরোধীরা যদিও এই ঘটনায় বিজেপি-কে বিঁধতে ছাড়েনি। তাদের মতে, দেশদ্রোহিতার অভিযোগে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ)-এ ছাত্রনেতাকে গ্রেফতার করে বিজেপি যে উগ্র জাতীয়তাবাদের জিগির তোলার চেষ্টা করছে, এ দিনের ঘটনা তারই একটা অংশ।
দু’দিনের পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শেষে ধৃত ছাত্রনেতা কানহাইয়া কুমারকে গত রবিবার পাতিয়ালা হাউস কোর্টে তোলা হয়েছিল। সেই সময় বিজেপি সমর্থক আইনজীবী এবং সমর্থকদের হাতে আক্রান্ত হন সাংবাদিক-সহ জেএনইউ-এর ছাত্রছাত্রীরা। আদালত চত্বরে নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন তাঁরা। বুধবার সকালে সুপ্রিম কোর্টের এক ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলারই শুনানি চলছিল। শুনানির মাঝখানেই হঠাত্ ‘বন্দে মাতরম’ বলে চিত্কার করে ওঠেন ওই আইনজীবী।
আরও খবর
• আদালত চত্বরেই আক্রান্ত ছাত্রনেতা কানহাইয়া কুমার, পুলিশ দর্শক
সোমবার কানহাইয়া কুমারকে আরও দু’দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। এ দিন সেই মেয়াদ শেষ হওয়ায় ফের তাঁকে আজ পাতিয়ালা হাউস কোর্টে তোলা হবে। সেই সময় আদালত চত্বরের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে দিল্লি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি জেএনইউ-এর ছাত্রছাত্রী, সাংবাদিক এবং ধৃত ছাত্রের পরিবারের সদস্যদের পাতিয়ালা হাউস কোর্টে প্রবেশের ক্ষেত্রে নয়া নির্দেশিকা জারি করেছে শীর্ষ আদালত। এজলাসের ভিতরে পাঁচ জন সাংবাদিক এবং দু’জন ছাত্রছাত্রী-সহ মোট ২০ জনকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আদালত চত্বরে ২৫ জন সাংবাদিকের প্রবেশাধিকার দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এ দিন সকালে আদালত চত্বরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে দিল্লির ডিসিপি পাতিয়ালা হাউস কোর্টে গিয়েছিলেন। বিশাল পুলিশ বাহিনীর পাশাপাশি তিন কোম্পানি সিআপিএফ জওয়ানও মোতায়েন করা হয়েছে আদালত চত্বরের বাইরে।
সূত্রের খবর, জেএনইউতে গত ৯ ফেব্রুয়ারি যে সমস্ত ছাত্রছাত্রী স্লোগান দিয়েছিলেন, তাঁদের খোঁজে পাঁচটি রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এ দিন সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করেন দিল্লির পুলিশ কমিশনার বিএস বাসসি। আদালত চত্বরে ওই দিন দিল্লি পুলিশের ভূমিকায় মোদী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলেও সূত্রের খবর। পাশাপাশি বাসসিও প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, ধৃত ছাত্রনেতা কানহাইয়ার কুমারের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy