Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

জীবনে জেতার অনেক পথ, বোঝাচ্ছে পুলিশ

একের পর এক আত্মহত্যায় নড়েচড়ে বসে পুলিশ-প্রশাসন। কারণ খুঁজতে শুরু করেন পুলিশ আধিকারিকরা। অন্তর্তদন্তে স্পষ্ট হয়, শহরের বিভিন্ন ছাত্রাবাস ও ছাত্রী নিবাসে থেকে সরকারি চাকরি, ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষার প্রস্তুতি নেন ঝাড়খণ্ডের প্রত্যন্ত অনেক এলাকার পড়ুয়ারা।

আর্যভট্ট খান
রাঁচী শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৩৩
Share: Save:

পরীক্ষায় অসফল হলেই থামে না জীবন, খোলা থাকে অন্য অনেক পথ— রাঁচীর বিভিন্ন ছাত্রাবাসে ঘুরে এমনই বার্তা দিচ্ছেন পুলিশ আধিকারিকরা। তাঁদের সঙ্গে থাকছেন মনোবিদও।

কারণ একটাই, গত এক মাসে ঝাড়খণ্ডের রাজধানীতে আত্মঘাতী হয়েছেন ১১ জন। তাঁদের মধ্যে ৭-৮ জন তরুণ-তরুণী। থাকতেন ছাত্রাবাসে। সরকারি চাকরির প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাঁরা এসেছিলেন রাজধানীতে।

একের পর এক আত্মহত্যায় নড়েচড়ে বসে পুলিশ-প্রশাসন। কারণ খুঁজতে শুরু করেন পুলিশ আধিকারিকরা। অন্তর্তদন্তে স্পষ্ট হয়, শহরের বিভিন্ন ছাত্রাবাস ও ছাত্রী নিবাসে থেকে সরকারি চাকরি, ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষার প্রস্তুতি নেন ঝাড়খণ্ডের প্রত্যন্ত অনেক এলাকার পড়ুয়ারা। পড়াশোনা, থাকাখাওয়ার খরচ জোগাতে তাঁদের কারও কারও অভিভাবক বন্ধক রাখেন জমি-বাড়ি। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অসফল হলে ভবিষ্যৎ অন্ধকার হতে পারে— এমন আশঙ্কায় থাকেন ওই পড়ুয়াদের অনেকেই।

আত্মহত্যার পথে এগোনোর অন্যতম কারণ সেটাই বলে মনে করেন পুলিশকর্তারা।

তা মোকাবিলায় ছক কষে পুলিশ। রাঁচীর ডিএসপি-র (নগর) নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল তৈরি করা হয়। আইনশৃঙ্খলার কাজের ফাঁকে ওই দলের সদস্যরা ঘুরছেন শহরের বিভিন্ন ছাত্রাবাসে। ছাত্রছাত্রীদের জানাচ্ছেন অবসাদ থেকে মুক্তির উপায়। ডিএসপি (নগর) রাজকুমার মাহাতে জানিয়েছেন, রাঁচীর লালপুর থানার আইসি রমোদ কুমার সিংহ ও রাঁচীর মহিলা থানার ইনচার্জ দীপিকা প্রসাদ ইতিমধ্যেই লালপুরের কয়েকটি ছাত্রাবাসে গিয়ে কাউন্সেলিং করেছেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন এক মনোবিদও।

শহরের অলিগলিতে রয়েছে কয়েকশো বেসরকারি ছাত্রাবাস। তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে কথা বলতে সে সব জায়গায় যাওয়ার ছক কষেছে পুলিশ। রমোদবাবু বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের বোঝাচ্ছি ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়র বা সরকারি চাকরি ছাড়াও নানা ধরনের পেশা রয়েছে। একটা পরীক্ষায় অসফল হলে জীবন থেমে যায় না। অন্য পথ খোলা থাকে।’’ তবে শুধু পরীক্ষায় সাফল্য না পাওয়াই নয়, প্রেমঘটিত কারণেও আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে রাঁচীতে। তা নিয়েও ভাবছে পুলিশ।

পুলিশের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে রাঁচীর মনোরোগ হাসপাতাল ‘রিনপাস’। ওই সংস্থার চিকিৎসক সিদ্ধার্থ সিনহা বলেন, ‘‘পুলিশকে অনুরোধ জানিয়েছি, কোনও পড়ুয়া মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত মনে হলে তাঁরা যেন দ্রুত আমাদের হাসপাতালে তাঁকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

রাঁচী Suicide Life Police Students
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE