ফাইল চিত্র।
কথাটা বলেই হেসে উঠলেন দিল্লির কংগ্রেস নেতা। মেজাজটা রসিকতার। কিন্তু আড়ালে একটা ‘বাগে পেয়েছি’ গোছের উল্লাস। বললেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী তো বলেছিলেন, সে দিন মণিশঙ্কর আইয়ারের বাড়িতে পাকিস্তানের সাহায্য নিয়ে গুজরাতের ভোটে জেতার ছক কষছিলাম আমরা। আলোচনার তো আরও ব়ড় বিষয় ছিল। এই যে গত কাল নরেন্দ্র মোদী যে সি-প্লেনটায় চড়লেন, সেটা কোথা থেকে এল? পাকিস্তান থেকেই তো!’’
সাবরমতী নদী থেকে সি-প্লেনে উড়ে জনতাকে চমক দিতে চেয়েছিলেন গুজরাত ভোটের প্রচারের শেষ দিনে। কিন্তু ওই উড়ান নিয়ে বিস্তর খোঁচাও হজম করতে হচ্ছে মোদীকে। যেমন পাক-অস্ত্র ব্যুমেরাং হওয়া। ওই ‘কোয়েস্ট-কোডিয়াক ১০০’ সি-প্লেনটির রেজিস্ট্রেশন আদতে আমেরিকার। বিমানের লগবুক বলছে, গত ৩ ডিসেম্বর করাচি থেকে উড়ে মুম্বইয়ে নেমেছিল বিমানটি। সেখান থেকে সোমবার আসে অমদাবাদে। কংগ্রেসের প্রশ্ন, প্রধানমন্ত্রীর বিমানই আসছে করাচি থেকে। তিনি কী করে কংগ্রেসের পাক-যোগের কথা বলেন?
রাহুল গাঁধীরা আগেই বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী পদের ওজন ভুলে যাচ্ছেন মোদী। প্রথম কথা নিরাপত্তা। এক ইঞ্জিনের বিমানে চড়ারই কথা নয় প্রধানমন্ত্রীর। তার উপরে সেটি চালিয়েছেন বিদেশি পাইলট। এটিও নিয়মবিরুদ্ধ। ল্যান্ড করার পরে মোদী যে ভাবে দরজা দিয়ে আধঝুলন্ত অবস্থায় জনতাকে হাত নেড়েছেন, তা-ও যথাযথ মনে হয়নি কংগ্রেসের। গত কাল বিজেপির একাংশ প্রচার করতে থাকে, এ দেশে সি-প্লেনের প্রথম প্যাসেঞ্জার মোদীই। কিন্তু কংগ্রেস পুরনো টিভি কভারেজ তুলে দিয়ে বলে, সাত বছর আগেই পর্যটকদের জন্য সি-প্লেন চালু হয়েছে আন্দামানে। মুম্বই ও লোনাভালার মধ্যেও সি-প্লেন সার্ভিস রয়েছে। আজই অন্ধ্রের বিজয়ওয়াড়ায় কৃষ্ণা নদীর পুন্নামি ঘাট থেকে ওড়া সি-প্লেনে়র মহড়ায় যাত্রী ছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু। তা ছাড়া, বর্তমানে মোদী মন্ত্রিসভার সদস্য নিতিন গডকড়ীই তো অনেক আগে সি-প্লেনে চড়েছেন।
পরিবহণমন্ত্রী গডকড়ী অবশ্য সেই প্রসঙ্গ সযত্নে এড়িয়ে জানিয়েছেন, গঙ্গা-যমুনা থেকে পুরোদস্তুর সি-প্লেন সার্ভিস শুরু করতে চাইছে কেন্দ্র। ‘‘প্রধানমন্ত্রী নিজে ঝুঁকি নিয়ে সি-প্লেনে চড়ে এটিকে জনপ্রিয় করতে চেয়েছেন। আমার সঙ্গে তাঁর কথাও হয়েছিল আগে’’— বলছেন গডকড়ী। তাঁর মন্ত্রক সূত্রে জানা যাচ্ছে, গঙ্গার তীরের নানা গুরুত্বপূর্ণ শহর থেকে সি-প্লেন সার্ভিস চালুর কথা ভাবা হচ্ছে। আবার দিল্লি থেকে উড়ে তাজমহল-লাগোয়া যমুনার জলে সি-প্লেন নামানোর কথাও ভাবা হচ্ছে। এতে আকৃষ্ট হবেন বিদেশিরাও।
তবে কি কলকাতার বাবুঘাট থেকেও একদিন উড়বে সি-প্লেন? উত্তর জানেন গডকড়ী। পরিবেশবিদেরা অবশ্য বলছেন, যমুনায় বিমান নামানোর চেয়ে অনেক বেশি জরুরি হল নদীর জলটাকে পরিষ্কার করা। সে কাজে তো বিশেষ অগ্রগতি চোখে পড়ছে না!
মোদ্দা কথা, নাটক জমেছে। জল-মাটি-আকাশ জুড়ে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy