Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪

সার্জিক্যাল স্ট্রাইক-এর প্রমাণ কোথায়? শুরু বিরোধী রাজনীতি

বলা হচ্ছে বটে। কিন্তু হয়েছে কি? হলে সেই সেনা অভিযানের প্রমাণ কোথায়? বিরোধীদের এই বক্তব্যকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে সরকারের বক্তব্য, উপযুক্ত সময়ে প্রমাণ দেব।

সজাগ দিন-রাত। পাল্লানওয়াল সেক্টরে নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে সেনা টহল। মঙ্গলবার পিটিআইয়ের ছবি।

সজাগ দিন-রাত। পাল্লানওয়াল সেক্টরে নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে সেনা টহল। মঙ্গলবার পিটিআইয়ের ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:৩১
Share: Save:

বলা হচ্ছে বটে। কিন্তু হয়েছে কি? হলে সেই সেনা অভিযানের প্রমাণ কোথায়?

বিরোধীদের এই বক্তব্যকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে সরকারের বক্তব্য, উপযুক্ত সময়ে প্রমাণ দেব।

পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’কে সমর্থন করে প্রথম দিন যে বিরোধীরা একজোট হয়ে সরকার আর সেনার পাশে দাঁড়িয়েছিল, পাঁচ দিন পরে তাদেরই গলায় অন্য সুর। সোমবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল সেনা অভিযানের প্রমাণ চেয়েছিলেন। প্রায় একই সুর ছিল কংগ্রেসের পি চিদম্বরমেরও। আজ সকাল থেকে কংগ্রেসের সঞ্জয় নিরুপম তো সেনা অভিযানকেই ভুয়ো বলে বসেন! পরে অবস্থান কিছুটা নরম করে কংগ্রেস বলে, সেনার সাফল্য নিয়ে কোনও সংশয় নেই। ইউপিএ আমলেও তিন বার ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ চালিয়েছে সেনা। কিন্তু এ বারে ভারত সরকারি ভাবে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’-এর কথা বলার পর থেকে পাকিস্তান যে অপপ্রচার চালাচ্ছে, তা থামাতে প্রমাণ সামনে আনা দরকার।

মধ্যরাতে সেনা অভিযানের কী প্রমাণ আছে, সেটা সরকারই জানে। ঘটনা হল, এ নিয়ে ধোঁয়াশাটা আসলে তারাই তৈরি করেছে। খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেছেন, ‘‘অপেক্ষা করুন, উপযুক্ত সময়ে সব খোলসা হবে।’’ বিরোধীদের কটাক্ষের পরে সরকারের শীর্ষ সূত্রে আজ বলা হয়, ‘‘ক’দিন আগে বলা হচ্ছিল, সেনা অভিযান করার হিম্মত নেই নরেন্দ্র মোদীর। সেটা হওয়ার পরে এখন বলা হচ্ছে, প্রমাণ নেই! প্রমাণ দেওয়া হবে উপযুক্ত সময়ে।’’

সেই উপযুক্ত সময় কোনটা?

বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘উত্তরপ্রদেশে ভোটের আগে যখন উপযুক্ত মনে হবে, তখনই সেনা অভিযানের ভিডিও সামনে আনা হবে। প্রধানমন্ত্রী এ বারে দশেরার দিন লখনউ যাবেন।’’ তা হলে কি তখনই প্রমাণ পেশ করবে সরকার? জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন ওই নেতা। স্বাভাবিক ভাবেই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, সেনা অভিযানকে সব দল সমর্থন করেছে। এ নিয়ে গোটা দেশ একজোট। এটা নিয়ে মোদী রাজনীতি করছেন কেন? কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘কাশ্মীরের ভোটের কথা মাথায় রেখে মোদী গত বার দীপাবলিতে সেখানে গিয়েছিলেন। এ বার কি ভোটের জন্যই দশেরার দিন উত্তরপ্রদেশের সবথেকে পুরনো রামলীলায় যাবেন মোদী?’’

সেনা অভিযান নিয়ে বিরোধীদের মোদী-কটাক্ষের জবাব দিতে বিজেপি আজ দিনভর জাতীয়তাবাদের হাওয়া তুলে পাল্টা হামলা চালিয়েছে। কেজরীবালের বাড়ির সামনে ধর্না দিয়েছে। কেজরীবালের সঙ্গে পাক জঙ্গি হাফিজ সইদের যোগ আছে বলে স্লোগান দিয়েছে। বিজেপির তরফে বলা হয়, কেজরী এক সময় পাকিস্তানের থেকে অর্থ নিয়ে এনজিও চালাতেন। এখন তার প্রতিদান দিচ্ছেন। তাই তাঁর উদ্ধৃতি তুলে সরব হচ্ছে পাক সংবাদমাধ্যম ও শাসকগোষ্ঠী। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের কথায়, ‘‘কেজরীবাল তো পাকিস্তানের সুরে কথা বলছেনই, দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেকেও চিদম্বরম এমন কথা বলেন কী করে? তা হলে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’কে সমর্থন করে সনিয়া ও রাহুল গাঁধী যে বিবৃতি দিয়েছেন, কংগ্রেস কি তার থেকে অবস্থান বদলেছে?’’

রবিশঙ্করের আক্রমণের জবাব দিতে গিয়ে কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার কৌশলী মন্তব্য, ‘‘২০১১, ২০১৩ এবং ২০১৪— তিন বার সেনা অভিযান হয়েছে ইউপিএ আমলে। কিন্তু দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে কংগ্রেস তখন ঢাক পেটায়নি। এ বারে সরকার সেনা অভিযানের কথা প্রকাশ্যে বলার পর পাকিস্তান সেটা নিয়ে অপপ্রচার করছে। ওদের জবাব দিতে তথ্যপ্রমাণ সামনে আনা দরকার।’’

একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘নিরাপত্তার প্রশ্নে সনিয়া ও রাহুল পুরোদস্তুর সমর্থন করেছেন সেনা ও সরকারকে। কিন্তু সরকারের মন্ত্রীরা যে ধরনের রাজনীতি করচেন এবং অপরিনত মন্তব্য করছেন, তাতে কি প্রধানমন্ত্রীর মদত রয়েছে?’’

অন্য বিষয়গুলি:

Surgical Strike Pakistan Soldiers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy