সকাল এগারোটায় ‘হিজ এক্সেলেন্সি’ শব্দটির ব্যবহার বন্ধের কথা বলে সংস্কার আনতে চেয়েছিলেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু। কিন্তু তৃণমূল যেই না রাজ্যপালের হস্তক্ষেপের কথা তুলতে গেল, কথা না শুনেই সটান বেলা দু’টো পর্যন্ত মুলতুবি করে দিলেন রাজ্যসভা। গত কালেও ঠিক এমনই হয়েছিল।
এর পরে যা ঘটল, তা বেনজির। বেলা দু’টোয় কার্যত বেঙ্কাইয়ার প্রতিই অনাস্থা প্রকাশ করে গোটা বিরোধী শিবির গোটা দিনের জন্য বয়কট করল রাজ্যসভা। বেঙ্কাইয়াকে সকলে চিঠি লিখে জানালেন, বিরোধীদের বলতে না দিয়ে গণতন্ত্রের হত্যা করা হচ্ছে। বেগতিক দেখে বিরোধী-শূন্য রাজ্যসভাতেই নিজের বক্তব্য জানাতে এলেন খোদ বেঙ্কাইয়া। বললেন, ‘‘দীর্ঘক্ষণ সভা মুলতুবির পিছনে তাঁর উদ্বেগ ও উষ্মা অনেক সদস্য বুঝতে পারেননি। হাঙ্গামার জন্য ক্ষুণ্ণ হচ্ছে সভার ভাবমূর্তি।’’ এই ভাবমূর্তির বদল চান তিনি। এর পরেই বিরোধীদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘‘নিয়মের আওতায় থেকে সকলকে যে কোনও বিষয় উত্থাপন করতে দিতে আমি বদ্ধপরিকর। এ বিষয়ে কারও সন্দেহ থাকা উচিত নয়।’’
তবে এই বিষয়ে কংগ্রেস, তৃণমূল, বাম, সমাজবাদী পার্টি, আপ, ডিএমকে-র মতো দলগুলি একজোট হওয়ায় অশনিসঙ্কেত দেখছে বিজেপি। পরিস্থিতির রাজনৈতিক মোড় ঘোরাতে শেষে আক্রমণাত্মক হলেন রাজ্যসভার নেতা অরুণ জেটলি। সন্ধেয় তিনি বলেন, ‘‘যেখানে কোনও সমস্যা ছিল না, সেটিকেই সমস্যা বানিয়ে কংগ্রেস ও অন্য দল বেনজির কাণ্ড করেছে। রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা নিয়ে বিতর্কে যে কোনও রাজনৈতিক বিষয় আর বাজেট আলোচনায় যে কোনও অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনার সুযোগ ছিল। কিন্তু রোজ নিয়ম ভেঙে, হাঙ্গামা করে বিরোধীরা স্পষ্ট করে দিল কোনও আলোচনা তারা করতে চায় না।’’
বিজেপি বুঝছে, লোকসভা ভোট যত এগিয়ে আসছে, বিরোধীরা একজোট হতে চাইছে। তাই সংসদের বাইরে এক ছাতার তলায় আসার আগে সংসদের ভিতরে গা ঘামিয়ে নিচ্ছে। বিজেপি নেতৃত্ব তাই গোড়াতেই বিরোধীদের একজোট হওয়ার চেষ্টায় জল ঢালতে চাইছেন। কিন্তু বিরোধীরাও এ বারে এককাট্টা। কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদ বলেন, নানা ভাবে ভয় দেখিয়ে বিরোধীদের মধ্যে বিভাজন তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। বাইরেও বলতে দেওয়া হচ্ছে না। সংসদের ভিতরেও মুখ বন্ধ করা হচ্ছে। চেয়ারম্যানের অধীনে রাজ্যসভা টেলিভিশনেও তো সরকারের প্রচার চলছে। বিরোধীরা কোথায় যাবে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy