আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে মুখ পোড়ার অস্বস্তি ছিলই। দেশের বিরোধী দল এবং আইনজীবীদের একটা বড় অংশ সেটাই আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিল। কুলভূষণ মামলায় পাকিস্তান সরকারকে আজ তুলোধোনা করেছে দেশের সংবাদমাধ্যমও। বিড়ম্বনার মুখে ইসলামাবাদ আজই জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক আদালতে এই মামলা সামলাতে নতুন করে আইনজীবীদের দল গঠন করা হবে। পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের বিদেশ দফতরের উপদেষ্টা সরতাজ আজিজ তেমনই ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, ‘‘পাকিস্তানের নিরাপত্তা আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সেই সঙ্গে আমাদের সার্বভৌমত্বও বজায় রাখতে হবে।’’
কালই দ্য হেগ-এর আন্তর্জাতিক আদালত পাক জেলে বন্দি ভারতীয় কুলভূষণ যাদবের ফাঁসির আদেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছে। পাক সরকার কুলভূষণের বিরুদ্ধে চরবৃত্তির অভিযোগ আনলেও ভারত প্রথম থেকেই তা অস্বীকার করেছে। আন্তর্জাতিক আদালতের রায়কে সাফল্যের একটা বড় ধাপ হিসেবেই দেখছে নয়াদিল্লি। যদিও পাকিস্তানের কারাগারে কুলভূষণ এখন কেমন আছেন, তা ভাবাচ্ছে নয়াদিল্লিকে। ভারতের তরফে কুলভূষণের অবস্থা জানতে চাওয়া হয়েছিল পাক সরকারের কাছে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র গোপাল বাগলে আজ জানিয়েছেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত কুলভূষণের শারীরিক অবস্থা নিয়ে আমাদের কিছুই জানায়নি পাক সরকার। বিষয়টি সত্যিই উদ্বেগের।’’
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে পাক টাকা খুঁজবে এনআইএ
আন্তর্জাতিক আদালতের কালকের রায়ের পরে পাক সরকার নিজের দেশে যথেষ্টই ব্যাকফুটে। যে আইনজীবী আন্তর্জাতিক আদালতে পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন, সেই খাওয়ার কুরেশির তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে দেশ জুড়ে। লন্ডন প্রবাসী এই আইনজীবী মামলাটি ঠিক মতো সাজাতেই পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন দেশের প্রথম সারির আইনজীবীরা। পাক সংবাদমাধ্যমের একাংশের দাবি, পাক অ্যাটর্নি জেনারেল নাকি অন্য আইনজীবীদের পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সরতাজ আজিজ অবশ্য আজ কুরেশির পাশেই দাঁড়িয়ে বলেছেন, ‘‘উনি খুব সাহসের সঙ্গেই কাল মামলা লড়েছেন।’’
আজিজের এই বক্তব্যের সঙ্গে অবশ্য সহমত নন অনেকেই। বিরোধী দলনেতা খুরশিদ শাহের বক্তব্য, খোদ অ্যাটর্নি জেনারেলকেই কুলভূষণের মামলা লড়তে পাঠানো উচিত ছিল পাক সরকারের। ‘‘সরকার যে বিষয়টিকে অবহেলা করেছে, কালকের রায়ই তার প্রমাণ,’’ বলেছেন শাহ। পাক বার কাউন্সিলের প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান ফারোগ নসিমের কথায়, ‘‘পাকিস্তান তো চাইলে কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রসঙ্গ আন্তর্জাতিক আদালতে তুলতেই পারত। কিন্তু ভারত কোনও দিনই বিষয়টি আন্তর্জাতিক আদালতের আওতায় আনতে দেবে না।’’
পাক সংবাদমাধ্যমের একাংশ অবশ্য এ-ও বলছে, কালকের রায় মোটেই পরাজয় নয়। আর ফাঁসির রায়ে স্থগিতাদেশ মানে কুলভূষণের মুক্তির ছাড়পত্রও নয়। নতুন আইনজীবীরা পরবর্তী শুনানি কী ভাবে লড়েন, সে দিকেই তাকিয়ে গোটা দেশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy