Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪

অম্বেডকরে ভর করে দলিতদের নিয়ে টানাটানি

এক দিকে দলিত কাঁটায় কোণঠাসা নরেন্দ্র মোদী সরকার। অন্য দিকে কাঁটার খোঁচায় ক্ষতবিক্ষত আদিবাসী মহিলার পা। আজ দুই কাঁটা মিলল এক বিন্দুতে। অম্বেডকরের জন্মদিনে ছত্তীসগঢ় সরকারের চটি বিতরণ কর্মসূচিতে আদিবাসী মহিলার পায়ে হাত দিয়ে চটি পরিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:০১
Share: Save:

এক দিকে দলিত কাঁটায় কোণঠাসা নরেন্দ্র মোদী সরকার। অন্য দিকে কাঁটার খোঁচায় ক্ষতবিক্ষত আদিবাসী মহিলার পা। আজ দুই কাঁটা মিলল এক বিন্দুতে। অম্বেডকরের জন্মদিনে ছত্তীসগঢ় সরকারের চটি বিতরণ কর্মসূচিতে আদিবাসী মহিলার পায়ে হাত দিয়ে চটি পরিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী। বার্তা স্পষ্ট, তিনি ও তাঁর দল দলিত, আদিবাসী ও পিছিয়ে পড়া সমাজের পাশেই রয়েছেন।

গত চার বছরে দেশ জুড়ে দলিত নিগ্রহ, সংরক্ষণ তোলার হাওয়া, সুপ্রিম কোর্টে আইন লঘু করা— এই রকম নানাবিধ কারণে বিজেপি থেকে মুখ ফেরাতে শুরু করেছে দলিত সমাজ। উত্তরপ্রদেশের উপনির্বাচনের ফলেও তা স্পষ্ট। এরই মধ্যে গত ২ এপ্রিলের ভারত বন্‌ধে ১১ জনের মৃত্যু ও তার পরে বিজেপি শাসিত রাজ্যে দলিত নেতাদের পুলিশি হেনস্থার অভিযোগ করেছেন খোদ বিজেপির দলিত নেতারাই।

তাই অম্বেডকরের জন্মদিবস থেকেই দলিত মন জয়ে একাধিক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে কেন্দ্র। একই নির্দেশ গিয়েছে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির জন্যও। যদিও সরকারের ওই ‘অম্বেডকর ভজনা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে ছাড়েননি দলিত নেত্রী মায়াবতী। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘অম্বেডকরের নামে প্রকল্পের উদ্বোধন করলেই দলিতদের উন্নতি হয় না, এই সরল সত্যটি বুঝতে হবে বিজেপিকে।’’

তবে বিরোধীদের আক্রমণে কান না দিয়ে আজ সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত ছড়িয়ে পড়েন বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও শীর্ষ নেতারা। রাষ্ট্রপতি পৌঁছে যান অম্বেডকরের জন্মস্থান মধ্যপ্রদেশের মউয়ে। অমিত শাহকে দিল্লির দায়িত্বে রেখে প্রধানমন্ত্রী নিজে ছোটেন ভোটমুখী ছত্তীসগঢ়ে। আদিবাসী অধ্যুষিত রাজ্যটিতে এটা প্রধানমন্ত্রীর চতুর্থ সফর। প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, ‘‘একমাত্র অম্বেডকরের জন্যই আমার মতো পিছিয়ে থাকা শ্রেণির গরিব মায়ের সন্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়া সম্ভব হয়েছে ।’’

আরও পড়ুন: চে-ধোনিকে টেক্কা দিচ্ছেন বাবাসাহেব

আজ বিজাপুর থেকেই দেশের আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির জন্য গ্রাম স্বরাজ যোজনা ও আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মোদী। রাজ্যের নকশাল সমস্যা মেটাতে অম্বেডকরকেই হাতিয়ার করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘বাবাসাহেব আমাদের সংবিধান দিয়েছেন। অধিকার সুনিশ্চিত করেছেন। এখন সরকারের দায়িত্ব হল আপনাদের অধিকার সুনিশ্চিত করা। এর জন্য বন্দুক তুলে জীবন নষ্ট করার দরকার নেই।’’

প্রধানমন্ত্রীর ধাঁচেই আজ নিজের রাজ্যে দলিত স্বার্থরক্ষায় সরকারি পদক্ষেপের খতিয়ান তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, দেবেন্দ্র ফডণবীসের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা। পাল্টা আক্রমণে বিজেপির ‘লোক দেখানো’ দলিত প্রেমকে কটাক্ষ করে কংগ্রেস নেত্রী কুমারি শৈলজা বলেন, ‘‘অম্বেডকর সম্পর্কে সঙ্ঘ পরিবারের কেমন নেতিবাচক মনোভাব ছিল, তা আমরা সকলেই জানি। বিজেপি যা বলছে তা কথার কথা।’’

ছোটখাটো ঝামেলাও হয়েছে দেশের নানা অংশে। গ্রেটার নয়ডায় ভাঙচুর হয় অম্বেডকরের মূর্তি। ঝামেলা হয় পঞ্জাবের ফগওয়াড়াতে। গুজরাতের বডোদরাতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মেনকা গাঁধী অম্বেডকরের মূর্তিতে মালা পরানোয় তা অপবিত্র হয়েছে— এই যুক্তিতে ফের তা সাফ করে দেন দলিতেরা। রাষ্ট্রপুঞ্জেও পালিত হয় অম্বেডকরের জন্মদিবস। তবে এ দেশে হওয়া দলিত, মহিলাদের উপর অত্যাচার নিয়ে সেখানে বিক্ষোভ দেখান এক দল শিখ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy