নজির: দেশের পতাকা নিয়ে মুরি লিঙ্গি। —নিজস্ব চিত্র।
চার কন্যার মধ্যে বড় জন সদ্য উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছে। এই বয়সে আর পাঁচ জন মহিলা যখন সংসার সামলাতেই ব্যস্ত, তখনই চল্লিশোর্ধ্ব মুরি লিঙ্গি পিঠে রুকস্যাক, পায়ে কাঁটার জুতো, হাতে তুষার-গাঁইতি নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন শীর্ষতম শিখরের পথে। অরুণাচলের লোয়ার দিবাং ভ্যালি উপত্যকার রোয়িংয়ের বাড়ি থেকে কাঠমাণ্ডুর উদ্দেশে রওনা দেন ৭ এপ্রিল। এক মাস ছয় দিনের মাথায় সেই মহিলাই এভারেস্ট শিখরে!
রোয়িংয়ের বাসিন্দা মুরি রাজ্যে ‘বেটি বচাও, বেটি পড়াও’ অভিযানের অন্যতম উজ্জ্বল মুখ। সেই তিনিই এ বার নিজের মেয়েদের ও গোটা রাজ্যের মুখ উজ্জ্বল করলেন। রাজ্য তথা উত্তর-পূর্বের প্রথম এভারেস্টজয়ী মহিলা তিনে মেনা ও পাঁচবারের ‘এভারেস্ট বিজয়িনী’ আনসু জামসেনপার পরে অরুণাচলের তৃতীয় মহিলা হিসেবে এভারেস্ট আরোহণের কৃতিত্ব অর্জন করলেন মুরি।
মুরি জানান, তিনে মেনাকে দেখেই ২০১৩ সাল থেকে তাঁর পাহাড় চড়া শুরু। মেনার সঙ্গেই পা মিলিয়ে তিনি প্রথমে আনিনি থেকে মালিনি পর্যন্ত অভিযানে যান। এর পর মেনার সঙ্গী হয়ে হিমাচলের মেনথোসা শৃঙ্গ আরোহণ করেন। ‘নিমাস’ ও দার্জিলিংয়ের এইচএমআই থেকে পর্বতারোহণের অ্যাডভান্স কোর্স সেরে ২০১৬ সালে বমডিলার মেয়ে আনসু জানসেমপার সঙ্গে ৬২২২ মিটার উঁচু গোরিচেন অভিযানে যান মুরি। তারপরেই লক্ষ্য স্থির করেন, এভারেস্ট।
তাঁর অভিযানে রাজ্য সরকার ১০ লক্ষ টাকা দিয়েছে। বাকি ১০ লক্ষ টাকা দিয়েছে এনএইচপিসি, সাংসদ মুকুট মিথি ও বিভিন্ন সংগঠন। ১২ এপ্রিল লুকলা থেকে যাত্রা শুরু করে ২০ এপ্রিল তিনি বেস ক্যাম্পে পৌঁছন। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় প্রতিকূল আবহাওয়া। ১০ মে রাত ১টা নাগাদ শীর্ষারোহণের শেষ চড়াই শুরু করেন তিনি। সাধারণত ওই পথ পার করতে পাঁচ দিন লাগে। কিন্তু রাতেও হাঁটা না থামিয়ে এভারেস্টের মাথায় ভারতের পতাকা ওড়ান ১৪ মে, সকাল ৮টায়। ‘সহযাত্রী’র সাফল্যে খুশি তিনে মেনা ও আনসু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy