—ফাইল চিত্র।
ভোটের আর বছরখানেক বাকি। শুধু শহরে নয়, জেলায় জেলায়, গ্রামে-গঞ্জে নরেন্দ্র মোদী সরকারের ঘোষিত প্রকল্পগুলির প্রচার ও প্রসারের কাজ কতটা হচ্ছে তার উপরে নজর রাখতে তৈরি হল সরকারি ফৌজ!
দেশে জেলা মোট ৭১৬টি। স্মৃতি ইরানির তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রক গত কাল প্রত্যেক জেলার জন্য এক জনকে এই কাজের জন্য নিয়োগ করেছে। এঁদের পোশাকি নাম ‘সোশ্যাল মিডিয়া এগ্জিকিউটিভ’। কাজ হবে জেলা স্তরে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় কী প্রকাশ হচ্ছে, সরকারকে তা জানানো। আবার সরকারের প্রকল্পগুলির সুফলের কথা গ্রামের শেষ মানুষটি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া। অর্থাৎ জমির হাল-হকিকত জানতে এই বাহিনীই হবে মোদীর চোখ ও কানের মতো। আবার একই সঙ্গে মোদীর মুখ হয়ে এরা প্রচার করবে সরকারের সাফল্য।
বিজেপিরই একাংশ মনে করছে, গত সাড়ে তিন বছরে সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে, মন্ত্রী-সাংসদেরাই বা গ্রামে গিয়ে কেমন কী কাজ করছেন, তার উপরে নজরদারি চালাবে ওই বাহিনী। তার ভিত্তিতে তৈরি রিপোর্ট কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রকের কাছ থেকে পৌঁছাবে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ে।
আরও পড়ুন: রোজগারের ‘আসল’ হিসেব দেবেন মোদী
স্মৃতির মন্ত্রক অবশ্য জানাচ্ছে খাতায়-কলমে ওই ব্যক্তিদের দায়িত্ব হল, স্থানীয় খবরের কাগজে কী ছাপা হচ্ছে, স্থানীয় চ্যানেলে কী খবর চলছে বা তাদের জেলায় সোশ্যাল মিডিয়ায় কী ‘ট্রেন্ড’ সেই তথ্য নিয়মিত ভাবে সরকারকে জানানো। সরকারের সিদ্ধান্ত মানুষ ইতিবাচক না নেতিবাচক কী ভাবে নিচ্ছেন, তা-ও বিশ্লেষণ করে মন্ত্রককে রিপোর্ট দেবেন ওই ব্যক্তিরা। বিরোধীদের কথায়, ‘‘আসলে গ্রামাঞ্চলে মোদী বিরোধিতার হাওয়া কতটা প্রবল, তার আঁচ পেতেই এই নিয়োগ।’’
প্রধানমন্ত্রী অবশ্য শুরু থেকেই সাংসদদের গ্রামে গিয়ে কাজ করার পরামর্শ দিয়ে এসেছেন। সংসদ বন্ধ থাকার সময়ে সপ্তাহে অন্তত দু’-তিন দিন নিজেদের এলাকায় গিয়ে সরকারি প্রকল্পগুলির সুফল তুলে ধরার জন্য দলীয় বৈঠকে একাধিক বার সরব হয়েছেন তিনি। কিন্তু লোকসভা ভোটের এক বছর আগে তাঁর কাছে যে রিপোর্ট আসছে তাতে স্পষ্ট, অনেক সাংসদই প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করতে পারছেন না। গ্রামে যেতেও অনীহা রয়েছে অনেক সাংসদের। তাই এই নিয়োগ দেখে অনেক বিজেপি নেতার ধারণা, মন্ত্রী-সাংসদেরা সংবাদমাধ্যম, সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ও তৃণমূল স্তরে ভোটারদের সঙ্গে কতটা সক্রিয়— এই সব কিছুর উপরেই নজরদারি চালাবে এই বাহিনী।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক সক্রিয় মূলত রাজধানী দিল্লি, মেট্রো ও বড় শহরগুলিতে। জেলা স্তরে কী হচ্ছে, সেখানে সরকারি প্রকল্পের বিষয়ে মানুষ আদৌও জানতে পারছেন কি না, সে বিষয়ে খুব একটা স্পষ্ট ধারণা নেই মন্ত্রকের। কেন্দ্রের দাবি, নজরদারির পাশাপাশি সে কারণে ওই এগ্জিকিউটিভদের কাজ হবে উভয়মুখী। এক, সরকারের কাজকর্মের সুফল সমাজের নিচু তলা পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া। দুই, স্থানীয় মানুষের চাহিদা, আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা সরকারকে জানানো। যাতে ভবিষ্যতে স্থানীয় সমস্যাগুলির কথা মাথায় রেখেই সরকারি পরিকল্পনা তৈরি করতে পারে সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy