কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বড়সড় সম্প্রাসরণ ঘটালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ১৯ জন নতুন মন্ত্রী ক্যাবিনেটের অন্তর্ভুক্ত হলেন। তবে ইস্তফা দিয়ে মন্ত্রিসভা থেকে সরে যেতে হল পুরনো পাঁচ মন্ত্রীকে। পরিবেশ মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরের পদোন্নতি হল। স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী ছিলেন তিনি। এই সম্প্রসারণ তথা রদবদলে জাভড়েকরকে ক্যাবিনেট মন্ত্রীর মর্যাদা দিলেন মোদী। পশ্চিমবঙ্গ থেকে আরও এক জন ঠাঁই পেলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায়— দার্জিলিং-এর সাংসদ এস এস অবলুওয়ালিয়া।
আগামী বছর এবং পরের বছর বেশ কয়েকটি বড় রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। সে কথা মাথায় রেখে যে এখন থেকেই রাজ্যে রাজ্যে ঘর গোছানো শুরু করে দিল মোদী-শাহ জুটি, তা বেশ স্পষ্ট এই সম্প্রসারণে। উত্তরপ্রদেশ থেকে তিন জনকে মন্ত্রী করা হল। এতে মোদী ক্যাবিনেটে উত্তরপ্রদেশের প্রতিনিধি সংখ্যা পৌঁছে গেল ১০-এ। উত্তরপ্রদেশ থেকে মন্ত্রিসভায় যে তিন জনকে আনা হয়েছে, তাতে বিজেপি-র নতুন সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং খুঁজে পাচ্ছে রাজনৈতিক মহল। ব্রাহ্মণ ভোট ব্যাঙ্ক উত্তরপ্রদেশে বিজেপির জন্য চিরকালই খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই সে রাজ্য থেকে আরও এক ব্রাহ্মণ সাংসদ মন্ত্রিত্ব পেলেন— মহেন্দ্রকুমার পাণ্ডে। আগামী বছরের নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে দলিত নেত্রী মায়াবতী যে বড় ছাপ ফেলতে চলেছেন, তা স্পষ্ট উত্তরপ্রদেশের নানা স্থানীয় নির্বাচন থেকে উঠে আসা আভাসে। কিন্তু দলিত ভোট একা মায়াবতী ঝুলিতে ভরে নিয়ে চলে যান, তা বিজেপি মোটেই চায় না। লখনউ-এর দখল নিতে হলে যে দলিত ভোটব্যাঙ্কে ভাগ বসাতেই হবে, তা মোদী ভালই জানেন। তাই দলিত তথা মহিলা সাংসদ কৃষ্ণা রাজ মন্ত্রিসভায় এলেন। এলেন আরও এক মহিলা মুখ— অনুপ্রিয়া পটেল। তিনি কুর্মি তথা অনগ্রসর সম্প্রদায়ের জনপ্রিয় মুখ। ব্রাহ্মণ, দলিত, অন্যান্য অনগ্রসর— এই নতুন সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-ই বিজেপি তুলে ধরতে চাইছে মুলায়মের যাদব-মুসলিম ভোটব্যাঙ্কের বিপরীতে। রাজনৈতিক মহলে তেমনই জল্পনা।
মধ্যপ্রদেশ থেকে মন্ত্রী হলেন ফগ্গন সিংহ কুলস্তে, অনিল মাধব দাভে, এম জে আকবর। গুজরাত থেকে মন্ত্রী করা হয়েছে পুরুষোত্তম রুপালা, যশবন্তসিন ভাভোর এবং মনসুখভাই মাণ্ডবিয়াকে। রাজস্থানের তিন নেতা অর্জুনরাম মেঘওয়াল, সি আর চৌধুরি এবং পি পি চৌধুরিকে মন্ত্রিসভায় আনা হয়েছে। রাজস্থান থেকে রাজ্যসভায় নির্বাচিত আর এক বিজেপি নেতা বিজয় গোয়েলও ক্যাবিনেটে এলেন। তবে গোয়েল মূলত দিল্লিরই নেতা। মহারাষ্ট্রের বিজেপি সাংসদ থেকে সুভাষ ভামরে মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। সে রাজ্য থেকে আরও এক জনকে মন্ত্রিসভায় ঠাঁই দেওয়া হয়েছে। তিনি জোটসঙ্গী আরপিআই সভাপতি রামদাস আঠাভলে।
আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশে ভোটের ছায়া রদবদলে
পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সাংসদ মাত্র দু’জন। আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় আগেই মন্ত্রী হয়েছিলেন। এ বার দার্জিলিং-এর সাংসদ সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিয়াকেও মন্ত্রিসভার অন্তর্ভুক্ত করে বিজেপি নেতৃত্ব বুঝিয়ে দিল, পশ্চিমবঙ্গকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর সর্বানন্দ সোনোয়াল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। তাই অসম থেকে নগাঁওয়ের সাংসদ রাজেন গোহাইঁকে মন্ত্রী করা হল।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে কর্নাটক থেকে মন্ত্রী করা হয়েছে রমেশ চণ্ডাপ্পা জিগাজিনাগিকে। ২০১৮ সালে বিধানসভা নির্বাচন হবে কর্নাটকে। সে রাজ্যের প্রভাবশালী বিজেপি নেতা বি এস ইয়েদুরাপ্পা ঘুঁটি সাজাতে শুরু করেছেন ফের মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার হওয়ার জন্য। কিন্তু ইয়েদুরাপ্পার সঙ্গে একেবারেই সুসম্পর্ক না থাকা জিগাজিনাগিকে মন্ত্রী করে মোদী-শাহ বুঝিয়ে দিলেন, ইয়েদুরাপ্পাকে হিসেবের বাইরে রেখেই কর্নাটকের ছক সাজানো হচ্ছে।
যে পাঁচ মন্ত্রীকে ক্যাবিনেট থেকে সরিয়ে দিলেন নরেন্দ্র মোদী, তাঁরা হলেন নিহাল চাঁদ, মনসুখভাই ডি ভাসাভা, রামশঙ্কর কাঠেরিয়া, সাঁবরলাল জাঠ এবং এম কে কুন্দরিয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy