তিনি ‘শর্টকাট’-এ মুখ্যমন্ত্রী হতে চাইছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় শশিকলা সম্পর্কে এখন এমন মন্তব্যই ভেসে উঠছে। —ফাইল চিত্র।
এক দিকে চলছে শপথ গ্রহণের প্রস্তুতি। অন্য দিকে শুরু হয়ে গিয়েছে তীব্র বিক্ষোভ। কিন্তু শপথ নেওয়ার আগেই যে তিনি কার্যত মুখ্যমন্ত্রী হয়ে গিয়েছে, তা স্পষ্টই বুঝিয়ে দিচ্ছেন শশিকলা। অপছন্দের আমলাদের সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া আগেই শুরু করেছিলেন। এ বার মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকেও বেশ কয়েক জন শীর্ষ আমলাকে অন্যত্র বদলি করে দেওয়া হল। এঁদের সকলকেই জয়ললিতা বেছে নিয়েছিলেন। কিন্তু এঁরা শশিকলার পছন্দের নন।
কোনও কালে সক্রিয় রাজনীতিই করেননি যিনি, তিনি আচমকা মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন কী ভাবে? এই প্রশ্নকে ঘিরে শোরগোল ক্রমশ বাড়ছে তামিলনাড়ুতে। বিরোধী দল ডিএমকে শশিকলার মুখ্যমন্ত্রিত্বের ঘোর বিরোধিতা শুরু করেছে। ডিএমকে নেতারা বলছেন, এআইএডিএমকে শশিকলাকে মুখ্যমন্ত্রী করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা কোনও ভাবেই গ্রহণয়োগ্য নয়। স্বতঃপ্রণোদিত বিরোধিতা শুরু হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। শশিকলা নটরাজন ‘শর্ট কাটে’ গদি হাসিল করতে চাইছেন— এমন বক্তব্যই ভেসে উঠছে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে। ‘#শর্টকাটশশিকলা’— এই হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ডিং হতে শুরু করেছে। আর চেন্নাইয়ের যে মারিনা বিচ কয়েক সপ্তাহ আগে পর্যন্ত উত্তাল ছিল জাল্লিকাট্টু ফিরিয়ে আনার দাবিতে, সেই মারিনা বিচে ফের জমায়েত শুরু হয়েছে— শশিকলা নটরাজনের মুখ্যমন্ত্রিত্বের বিরোধিতায়। এই বিক্ষোভকারীরা বলছেন, মানুষের রায়কে সম্মান করা উচিত এআইএডিএমকের। তাঁদের কথায়, গত বিধানসভা নির্বাচনে জয়ললিতার দলকে নির্বাচনী জয়ী করেছিলেন তামিলনাড়ুর মানুষ। সে সময় শশিকলা দলের কেউ ছিলেন না। তাই জয়ললিতার অবর্তমানে দলের অন্য কোনও নেতা মুখ্যমন্ত্রী হলেও, শশিকলার কোনও ভাবেই ওই পদ পেতে পারেন না।
নামেই মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন পনীরসেলভম। আসলে শশিকলাই নিয়ন্ত্রণ করছিলেন সব, প্রস্তুত করছিলেন নিজের উত্থানের মঞ্চ। চেন্নাইয়ের রাজনৈতিক মহলে চর্চা এখন এমনই। —ফাইল চিত্র।
এআইএডিএমকে নেতৃত্ব, বিশেষত শশিকলা শিবির অবশ্য অবিচলিত। শপথের প্রস্তুতি জোরকদমে এগোচ্ছে। যে সব আমলা এবং পদস্থ সরকারি কর্তা শশিকলার পছন্দের নন, তাঁদের সরিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। ডিসেম্বরে ও পনীরসেলভম মুখ্যমন্ত্রী পদে বসার পর যাঁকে রাজ্যের গোয়েন্দা প্রধান করেছিলেন, সেই সত্যমূর্তিকে ছুটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যসচিব তথা জয়ললিতার মুখ্য পরামর্শদাতা ছিলেন যে আমলা, সেই শীলা বালকৃষ্ণনকেও ক্ষমতার বৃত্ত থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে অফিসার অন স্পেশ্যাল ডিউটি পদে কর্মরত শান্তা শিলা নায়ারকে অপসারিত করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর সেক্রেটারি পদে ছিলেন যে চার জন, সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁদের দু’জনকেও।
আরও পড়ুন: মামলা-জটে অনিশ্চিত শশীর শপথ
এআইএডিএমকে সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর এবং পরিষদীয় নেত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর শশিকলা একাধিক বার বলেছেন, জয়ললিতার দেখানো পথেই চলবেন তিনি। তা হলে জয়ললিতার পছন্দের আমলাদের আগেভাগেই সরিয়ে দিচ্ছেন কেন? প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে প্রায় সব মহলেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy