প্রতীকী ছবি।
মেয়েটির মনে হচ্ছে, তাঁর কপাল খুব ভাল। কারণ, তিনি কোনও ছাপোষা বাবার মেয়ে নন, আইএএস অফিসারের মেয়ে। তিনি ভাগ্যবতী, কারণ তিনি খুন বা ধর্ষিতা হয়ে কোনও গর্তে পড়ে নেই।
গত শুক্রবার রাতে মদ্যপ দু’টি ছেলে গাড়ি নিয়ে চণ্ডীগড়ের রাস্তায় তাড়া করে বেড়িয়েছে তাঁকে। পুলিশ এসে পড়ায় বেঁচেছেন। তার পরে ফেসবুকে ঘটনাটা লিখে ওই তরুণীর প্রশ্ন, ‘কোনও সাধারণ বাবা কি এই ভিআইপি-দের সঙ্গে লড়ে পারত?’
পুলিশ জানিয়েছে, তরুণীকে ধাওয়া করা গাড়িটি চালাচ্ছিল হরিয়ানা রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুভাষ বারালার ছেলে বিকাশ। সঙ্গে ছিল তার বন্ধু আশিস কুমার। গ্রেফতার করা হয় দু’জনকেই। তবে জামিনও পেয়ে গিয়েছে তারা।
আরও পড়ুন: গুজরাতে মহিলা পুলিশ কনস্টেবলের শ্লীলতাহানি, মারধর
শুক্রবার রাত সওয়া ১২টা নাগাদ চণ্ডীগড়ের সেক্টর ৮ মার্কেট থেকে গাড়ি চালিয়ে ফেরার পথে তরুণী লক্ষ্য করেন, তাঁকে ‘ফলো করছে একটি এসইউভি। এক সময়ে ওভারটেক করে পথ আটকায় সেটি। গাড়িটি থেকে নেমে এগিয়ে আসে আশিস। দ্রুত নিজের গাড়ি ঘুরিয়ে পালাতে পালাতেই পুলিশের ১০০ নম্বর ডায়াল করে গোটা ঘটনার কথা জানান তরুণী। কোন দিকে যাচ্ছেন, জানিয়ে দেন তা-ও।
পিছু-ধাওয়া চলে আরও পাঁচ-ছ’কিলোমিটার। সঙ্গে কটূক্তি। একটা সিগন্যালে থামতেই ফের নেমে এসে তরুণীর গাড়ির দরজা খোলার চেষ্টা করে আশিস। তখনই এসে পড়ে পুলিশের গাড়ি। হাতেনাতে পাকড়াও।
পুলিশকে ধন্যবাদ দিয়েছেন তরুণী। আর বিরোধীদের তোপের মুখে পড়েছেন বিজেপির হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর। প্রশ্ন উঠেছে, বিকাশ-আশিসের বিরুদ্ধে অপহরণের ধারা আনা হল না কেন? সে ক্ষেত্রে হয়তো আদালতে তোলার আগেই এ ভাবে জামিন পেত না তারা। চণ্ডীগড়ের এক পুলিশকর্তার দাবি, ‘‘ওই মহিলার বিবৃতিতে কোথাও বলা হয়নি যে, তাঁকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়েছিল। আমাদের উপরে কোনও রাজনৈতিক চাপ ছিল না।’’
এই যুক্তি মানছেন না সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘অভিযুক্তের মাথায় নিঃসন্দেহে প্রভাবশালী কারও হাত রয়েছে। তাই এত সহজে রেহাই পেয়ে যাচ্ছে সে। প্রধানমন্ত্রী বা বিজেপি সভাপতি কেন চুপ করে আছেন, বুঝতে পারছি না।’ অভিযুক্তদের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে সরব কংগ্রেসও।
বিকাশের বাবা সুভাষকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি তুলেছেন বিরোধীরা। যদিও সেই দাবি উড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী খট্টর বলেছেন, ‘‘ছেলের জন্য বাবাকে কেন শাস্তি দেওয়া হবে? সুভাষ তো কোনও অপরাধ করেননি। ছেলেটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy