প্রতীকী ছবি।
বিগ্রহের শুদ্ধিকরণ করতে হবে। আর সেটা করা হবে ভক্তদের রক্ত দিয়েই!
কেরলের এক কালী মন্দিরে এমনই এক নোটিসকে ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
তিরুঅনন্তপুরমের ভিথুরা গ্রামে রয়েছে দেবীওড়ু কালী মন্দির। সেখানে বাত্সরিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে আগামী ১২ মার্চ। চলবে ২৩ মার্চ পর্যন্ত। ওই অনুষ্ঠান উপলক্ষে ভক্তদের উদ্দেশে একটি নোটিস দেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। সেখানে বলা হয়ছে, দেবীর ‘অভিষেক’ করা হবে। ‘অভিষেক’-এর জন্য রক্ত প্রয়োজন। সেই রক্ত দিতে হবে মন্দিরে পুজো দিতে আসা ভক্তদেরই! সরকার প্রশিক্ষিত মেডিক্যাল স্টাফদের দিয়ে সিরিঞ্জের মাধ্যমে রক্ত নেওয়ারও আয়োজনও করে ফেলেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, খুব সামান্যই রক্ত নেওয়া হবে ভক্তদের কাছ থেকে।
আরও পড়ুন: হিজাব পরা বডি বিল্ডার, জিতলেন মিস্টার কেরল খেতাব
এ প্রসঙ্গে কী বলছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ? কেন এমন ব্যবস্থার আয়োজন করলেন তাঁরা?
মন্দিরের প্রধান পুরোহিত মণিকন্দন জানান, কালীর বিগ্রহকে হলুদ, সিঁদুর এবং রক্ত দিয়ে স্নান করানোর আয়োজন করা হয়েছে। কিন্তু রক্ত কেন? এ প্রসঙ্গে তাঁর যুক্তি, যে সব ভক্তরা রক্ত দেবেন, সেই রক্ত দিয়ে বিগ্রহের অভিষেক করলে রোগ-ব্যাধি থেকে মুক্তি পাবেন তাঁরা!
ভক্তদের কাছ থেকে রক্ত নেওয়ার খবর চাউর হতেই রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী কাদাকামপল্লী সুরেন্দ্রন তীব্র প্রতিবাদ করেন। তিনি বলেন, এ ধরনের প্রাচীন ধর্মীয় রীতিনীতি তাঁরা কোনও ভাবেই সমর্থন করবেন না। এ ধরনের রীতিনীতি রাজ্যের জন্য অসন্মানের। তিনি ইতিমধ্যেই তিরুঅনন্তপুরমের পুলিশ সুপারকে এ বিষয়ে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। তাঁর মন্তব্য, কেরলে বলি প্রথা রেনেসাঁ আন্দোলনের সময় কালেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কিছু মানুষ সেই প্রথাকে আবার রাজ্যে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে রাজ্যের সমস্ত মানুষকে এ ধরনের প্রাচীন প্রথার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছেন সুরেন্দ্রন।
আরও পড়ুন: রোজ বদল সিম, রাতে গোপনে বৈঠক জিজ্ঞেসের
বিষয়টি নিয়ে যখন হইচই পড়ে গিয়েছে, মন্ত্রী যখন নিজে উদ্যোগ নিয়েছেন এই কর্মকাণ্ড বন্ধ করার, মন্দির কর্তৃপক্ষ কার্যত চাপে পড়ে নিজেদের অবস্থান থেকে একটু পিছিয়ে আসেন। মন্দিরের প্রধান পুরোহিত মণিকন্দন বলেন, “এই মন্দির এ ধরনের রীতিনীতিতে আগ্রহী নয়। কিছু ভক্তের দাবি মতোই রক্ত নেওয়ার আয়োজন করা হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, “যদি কোনও ভক্ত রক্ত দিতে চান, তা হলে মন্ত্রীর কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে আসতে হবে। তার পরেই তাঁরা এ ব্যাপারে অগ্রসর হবেন।”
এর পাশাপাশি তিনি যুক্তি দিয়েছেন, এ ধরনের রীতিনীতি পালনের একটা কারণ আছে। এই রীতিনীতি কেন পালন করা হচ্ছে, যদি মন্ত্রী চান পদার্থবিদ্যার বিশেষজ্ঞ এবং মনোবিদদের নিয়ে একটা কমিটি গঠন করে তা তদন্ত করে দেখতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy