Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
National News

চিনকে ধাক্কা দিয়ে ডোকলাম বিতর্কে ভারতের হয়ে মুখ খুলল জাপান

জাপান মুখ খুলল ডোকলাম প্রসঙ্গে। ভারতের অবস্থানকে সমর্থন জানিয়ে জাপানি রাষ্ট্রদূত বললেন, ত্রিদেশীয় সীমান্তে একতরফা আগ্রাসন দেখানো কাম্য নয়। ভারতীয় সেনা ডোকলামে যেতে বাধ্য হয়েছে, এমন ইঙ্গিতও দিলেন জাপানি রাষ্ট্রদূত। একে চিনের জন্য জোর কূটনৈতিক ধাক্কা মনে করছেন অনেকেই।

ভারত-জাপান সুসম্পর্ক দীর্ঘ দিনের। ডোকলাম সঙ্কটেও যে জাপান ভারতের পাশেই থাকবে, তা প্রত্যাশিতই ছিল। —প্রতীকী ছবি।

ভারত-জাপান সুসম্পর্ক দীর্ঘ দিনের। ডোকলাম সঙ্কটেও যে জাপান ভারতের পাশেই থাকবে, তা প্রত্যাশিতই ছিল। —প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৭ ১৬:৩৪
Share: Save:

ডোকলাম বিতর্কে ভারতের পাশে দাঁড়াল জাপান। চিনকে জোর কূটনৈতিক ধাক্কা দিয়ে শুক্রবার নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত জানালেন, ত্রিদেশীয় সীমান্তে যে স্থিতাবস্থা রয়েছে, একতরফা ভাবে এবং বলপূর্বক তা ভাঙার চেষ্টা করা কোনও পক্ষেরই উচিত নয়। ডোকলাম বিতর্কে ভারতের যা অবস্থান, তাকেই পুরোপুরি সমর্থন করল জাপানের এই বিবৃতি। ডোকলাম এলাকাটিকে নিয়ে বিরোধ মূলত চিন এবং ভুটানের মধ্যে হলেও, ভুটানের সঙ্গে ভারতের নিরাপত্তা সংক্রান্ত দ্বিপাক্ষিক চুক্তি থাকায় ভারতকে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। নয়াদিল্লির হয়ে এমন সওয়ালও করেছেন জাপানি রাষ্ট্রদূত কেনজি হিরামাৎসু।

জাপান বলছে

‘‘আমরা মানছি যে ডোকলাম হল চিন এবং ভুটানের মধ্যে বিতর্কিত একটি এলাকা এবং ওই দুই দেশ নিজেদের মধ্যে আলোচনাও চালাচ্ছে’’, মন্তব্য হিরামাৎসুর। কিন্তু এতেই তিনি থামেননি। জাপানি কূটনীতিক আরও বলেছেন, ‘‘আমরা এটাও বুঝি যে ভুটানের সঙ্গে ভারতের চুক্তি রয়েছে, সেই কারণেই ভারতীয় সেনাকে ওই এলাকায় যেতে হয়েছে।’’

খুব স্পষ্ট করেই চিনের অবস্থানের বিরোধিতা করেছেন নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেছেন, ‘‘বিতর্কিত এলাকায় একতরফা বলপ্রয়োগের ভিত্তিতে স্থিতাবস্থা বদলে দেওয়ার চেষ্টা করা কোনও পক্ষেরই উচিত নয়।’’

চিন বলছে

ডোকলাম ভারতের এলাকা নয়, এলাকাটি চিন এবং ভুটানের মধ্যে বিতর্কিত, সুতরাং চিন ও ভুটান নিজেদের মধ্যে আলোচনা করবে, ভারতের নাক গলানোর প্রয়োজন নেই।

চিন হুঁশিয়ারি দিলেই ভারত ডোকলাম থেকে পিছিয়ে আসবে, এমনটা যে হবে না, তা কিন্তু নয়াদিল্লি বুঝিয়ে দিয়েছে। —প্রতীকী ছবি।

ভারত বলছে

ডোকলাম ত্রিদেশীয় সীমান্তে অবস্থিত। ত্রিদেশীয় সীমান্তে যদি কোনও বিতর্ক থাকে, তা হলে তিন পক্ষের আলোচনার ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত হবে, ভারত এবং চিনের মধ্যে এমন চুক্তি রয়েছে। কিন্তু রাস্তা তৈরির নামে একতরফা ভাবে বিতর্কিত এলাকার দখল নেওয়ার চেষ্টা করে চিন সে চুক্তি ভেঙেছে। এতে ভুটানের স্বার্থ তো ক্ষুণ্ণ হচ্ছেই ভারতের নিরাপত্তাও বিঘ্নিত হচ্ছে। অতএব সেনা পাঠিয়ে রাস্তা তৈরির কাজ আটকানো ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না ভারতের।

চিন এবং ভারত ডোকলাম প্রসঙ্গে কী বলছে, তা গোটা বিশ্বের কাছে আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু অন্য কোনও বড় শক্তি এ নিয়ে এত দিন মুখ খোলেনি। জাপানই প্রথম বড় শক্তি, যারা ডোকলাম নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল। টোকিও বুঝিয়ে দিল, ডোকলাম বিতর্কে তারা নয়াদিল্লির পাশেই রয়েছে, বেজিঙের পাশে নয়।

আরও পড়ুন: অক্টোবরেও সেনাবাহিনী থাকতে পারে ডোকলামে

বুধবার মার্কিন বিদেশ দফতরের এক মুখপাত্র বলেন, ‘‘আমরা দু’পক্ষকেই আলোচনায় উৎসাহ দিচ্ছি এবং সরাসরি পরস্পরের সঙ্গে কথা বলতে বলছি।’’ আমেরিকার এই অবস্থানও ভারতের পক্ষেই যাচ্ছে। কারণ ভারত বার বার আলোচনার কথাই বলছে। কিন্তু চিন বলছে, ডোকলাম থেকে ভারত সেনা না সরালে চিন কোনও আলোচনায় বসবে না।

আরও পড়ুন: সংঘর্ষের কথা জানা নেই: সীমান্ত লঙ্ঘন অস্বীকার করে বলল চিন

একতরফা ভাবে সেনা যে প্রত্যাহার করা হবে না, তা ভারত স্পষ্ট করে দিয়েছে। লম্বা সময় ধরে ডোকলামে যে সেনাকে ঘাঁটি গেড়ে থাকতে হতে পারে, সে কথা মাথায় রেখে রসদ সরবরাহের ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হচ্ছে। প্রয়োজনে শীতকালেও ডোকলামে সেনা মোতায়েন রাখবে ভারত, খবর প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE