ডোকলাম নিয়ে স্বতোঃপ্রণোদিত ভাবে মুখ খুলল টোকিও।
ডোকলাম নিয়ে বেজিংয়ের সঙ্গে যুযুধান নয়াদিল্লির পাশে দাঁড়াল টোকিও।
নয়াদিল্লিতে জাপানের রাষ্ট্রদূত কেনজি হিরামাৎসু গতকাল তাৎপর্যপূর্ণভাবে বলেছেন, ‘‘আমরা জানি যে, ভুটান এবং চিনের মধ্যে একটি বিতর্কিত এলাকা হলো ডোকলাম। দু’টি দেশ সীমান্ত নিয়ে কথাবার্তা চালাচ্ছে।
আমরা এটাও জানি যে, ভারতের সঙ্গে ভুটানের চুক্তি রয়েছে। আর সে কারণেই ভারতীয় সেনা এই বিষয়ে মাথা গলিয়েছে।’’ এখানেই না থেমে কার্যত চিনের সমালোচনা করে হিরামিৎসুর বক্তব্য, ‘‘কোনও বিতর্কিত এলাকায় বলপূর্বক স্থিতাবস্থা নষ্ট না-করার বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।’’
টোকিওর এই প্রকাশ্য বিবৃতিতে কিছুটা খুশির হাওয়া সাউথ ব্লকে। কার্যত এই প্রথম কোনও বাইরের দেশ ডোকলাম নিয়ে স্বতোঃপ্রণোদিত ভাবে মুখ খুলল। তবে জাপানের এই বক্তব্যকে অস্ত্র করে চিনের বিরুদ্ধে আজ কোনও কঠোর বার্তা দিতে চায়নি নয়াদিল্লি।
কূটনৈতিক ভাবে যখন প্রাণপণে চিনের সঙ্গে আশু সমস্যা সমাধানের রাস্তা খোঁজা হচ্ছে, তখন মোদী সরকার এমন কিছু করতে চাইছে না যাতে আগুনে ঘৃতাহুতি পড়ে। আজ এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রভিশ কুমার শুধু বলেছেন, ‘‘আমরা জাপানের রাষ্ট্রদূতের বিবৃতি শুনেছি। সেই বিবৃতিটি নিজেই নিজের কথা বলছে।’’
আরও পড়ুন: চিনকে ধাক্কা দিয়ে ডোকলাম বিতর্কে ভারতের হয়ে মুখ খুলল জাপান
কূটনৈতিক সূত্রের খবর, গতকাল জাপানের রাষ্ট্রদূত বিবৃতি দিয়ে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছেন ঠিকই। কিন্তু এই সমর্থন ভারতের কাছে নতুন কিছু নয়। প্রকৃতপক্ষে গত কয়েক বছর ধরে চিনের সঙ্গে বিভিন্ন দ্বৈরথে টোকিওকে সর্বদাই সঙ্গে পেয়েছে নয়াদিল্লি। আগামী মাসের মাঝামাঝি জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ভারত সফরে আসছেন। তার আগে ভারত-জাপান মৈত্রীর সুরটা বাজানোর একটা প্রয়োজন ছিল বলেই মনে করা হচ্ছে।
এর আগে থেকেই অরুণাচল প্রদেশ-সহ দেশের উত্তরপূর্ব সীমান্তে বেজিংয়ের অতিসক্রিয়তা কমাতে জাপানি সহযোগিতাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করে গিয়েছে সাউথ ব্লক। চিন-জাপান সম্পর্ক যে মোটেই মধুর নয়, সে কথা আন্তর্জাতিক মহল ভালই জানে। দক্ষিণ চিন সাগরে জলসীমার দখল নিয়ে দু’দেশের বিবাদ এই তিক্ততার অন্যতম কারণ। প্রযুক্তি এবং অর্থনীতিতে জাপান প্রবল উন্নতি করলেও, সামরিক শক্তিতে তারা চিনের চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে। চিনের মোকাবিলা করতে এবং নিজেদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে দক্ষিণ এশিয়ায় শক্তিশালী দেশ ভারতকে পাশে পাওয়া জাপানের জন্যও খুব জরুরি।
ভারতের কাছ থেকে জাপান যে কূটনৈতিক সমর্থন আশা করছে, নয়াদিল্লিও তা বরাবর দিয়ে এসেছে। গত তিন বছরে দু’দেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা অনেকটাই বেড়েছে। ভারত ও আমেরিকার নৌবাহিনী প্রতি বছর যে যৌথ সামরিক মহড়া আয়োজন করে, তাতে যোগ দিয়েছে জাপানও। আরব সাগরে এই মহড়া নিয়ে চিনও পাল্টা হুঙ্কার ছেড়েছে।
তাই ডোকলাম বিতর্ক সামনে রেখে ভারতের মাটিতে দাঁড়িয়ে চিন-বিরোধিতায় ফের একবার শান দিয়ে নিল টোকিও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy