অভিযুক্ত সেই বায়ুসেনা অফিসার অরুণ মারওয়া। ছবি সৌজন্য: মারওয়ার ফেসবুক থেকে।
ফেসবুকে সুন্দরী মহিলার ছবি দিয়ে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলেছিল পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর দুই এজেন্ট। বন্ধুত্ব পাতিয়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনার এক কর্তার সঙ্গে। সেই ফাঁদে পড়ে তথ্য পাচারের দায়ে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার হতে হল ওই বায়ুসেনা অফিসারকে। দিল্লি পুলিশের হাতে ধৃত অফিসারের নাম অরুণ মারওয়া।
ঘটনার সূত্রপাত মাস কয়েক আগে। ফেসবুকের দুই ফেক প্রোফাইল থেকে ভারতীয় বায়ুসেনা কর্তার সঙ্গে চ্যাটিং শুরু হয়। তার পর হোয়াট্সঅ্যাপেও আদানপ্রাদান চলতে থাকে নিয়মিত। ধীরে ধীরে ঘনিষ্ঠতাও বাড়তে থাকে।
বায়ুসেনা সূত্রে খবর, ওই সেনাকর্তাকে হোয়াট্সঅ্যাপে অশ্লীল ছবি পাঠাত ফেসবুকের ওই দুই ‘মহিলা বন্ধু’। আর সেই ফাঁদে পা দিয়েই দেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শেয়ার করতেন তিনি! প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা মনে করছেন, মারওয়ার কাছ থেকে সাইবার ওয়ারফেয়ার, স্পেস এবং স্পেশাল অপারেশন সংক্রান্ত কিছু তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে ওই আইএসআই এজেন্টরা।
আরও পড়ুন: ভয়াল স্মৃতিটা ভুলতে চান উত্তর কোরিয়ার মহিলা ঘাতক-চর
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত বছর ৫১-র অরুণ মারওয়া দিল্লিতে বায়ুসেনার প্রধান কার্যালয়ে কাজ করতেন। ভারতীয় বায়ুসেনার প্যারা-জাম্পিং ইনস্ট্রাকটর এবং গরুড় কম্যান্ডোর প্রশিক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন মারওয়া। আগামী বছরেই অবসর নেওয়ার কথা রয়েছে তাঁর।
বায়ুসেনা সূত্রে খবর, মারওয়ার বিরুদ্ধে সন্দেহটা দানা বেঁধেছিল কয়েক সপ্তাহ আগে। বায়ুসেনার এক শীর্ষ আধিকারিকের নজরে বিষয়টি আসার পরই শুরু হয় অন্তর্তদন্ত। উঠে আসে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচারের মারাত্মক অভিযোগ। গত ১০ দিন ধরে বায়ুসেনার কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স উইং মারওয়াকে জেরা করে। তার পরই তারা দিল্লি পুলিশের হাতে মামলাটি তুলে দেয়। বৃহস্পতিবার বায়ুসেনার প্রধান কার্যালয় থেকেই মারওয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁকে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে বলে খবর। পুলিশের দাবি, মারওয়াকে যখন গ্রেফতার করা হয়, সে সময় তাঁর কাছে একটা মোবাইল ফোন ছিল, যা বায়ুসেনার কার্যালয়ে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
কার্টুন: অর্ঘ্য মান্না।
আরও পড়ুন: অযোধ্যায় জমিই জট: সুপ্রিম কোর্ট
মারওয়া আইএসআই পরিচালিত কোনও বড় চক্রের সঙ্গে জড়িত আছে কিনা তা জানতে পুলিশের পাশাপাশি বায়ুসেনার কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স উইং-ও তদন্ত চালাচ্ছে!
মারওয়ার বিরুদ্ধে অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্ট-এ মামলা রুজু হয়েছে। এই আইনে তাঁর ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে বলেও সূত্রের খবর। মারওয়ার গ্রেফতারি নিয়ে অবশ্য সরকারি ভাবে কোনও মন্তব্য করেনি বায়ুসেনা।
হানিট্র্যাপের ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগেও আইএসআই এজেন্টরা ভারতীয় সেনাদের ফাঁদে ফেলার জন্য বার বার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সফলও হয়েছে তারা। আবার অনেক ক্ষেত্রে বিষয়টি আঁচ করতে পেরেই নিজেদের সেই ট্র্যাপ থেকে সরিয়ে এনেছেন সেনা অফিসাররা।
যেমন, ২০১০-এ তরুণ আইএসআই আধিকারিকের প্রেমে পড়ে তথ্য পাচারের অভিযোগ উঠেছিল ভারতীয় হাইকমিশনের প্রেস ডিভিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারি মাধুরী গুপ্তর বিরুদ্ধে। আফগানিস্তানে ভারতের উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে তথ্য পাচার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁকে।
২০১৭-য় ইসলামাবাদে ভারতীয় হাইকমিশনের তিন আধিকারিককে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করেছিল আইএসআই। কিন্তু সে চেষ্টা বিফলে গিয়েছে বলে সূত্রের খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy