Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

আসিয়ান বার্তায় মোদীর মূল্যবোধ

দু’হাজার বছরের আত্মীয়তার সূত্রে ভর করে ভবিষ্যতেও সহযোগিতার পথে হাঁটার অঙ্গীকার। বাণিজ্যিক সম্পর্ক দৃঢ় করার প্রতিশ্রুতি। সমুদ্র-নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের বিষয়টি তুলে নাম না করে ফের বার্তা দেওয়া চিনকে।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:১৯
Share: Save:

দু’হাজার বছরের আত্মীয়তার সূত্রে ভর করে ভবিষ্যতেও সহযোগিতার পথে হাঁটার অঙ্গীকার। বাণিজ্যিক সম্পর্ক দৃঢ় করার প্রতিশ্রুতি। সমুদ্র-নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের বিষয়টি তুলে নাম না করে ফের বার্তা দেওয়া চিনকে।

গত কাল আসিয়ান সম্মেলনে বক্তৃতায় যা বলেছিলেন, প্রজাতন্ত্র দিবসে মোটামুটি তা-ই আরও বিস্তারিত ভাবে জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে মুখে নয়, লিখে। ভারত-আসিয়ান সম্পর্ক নিয়ে মোদীর নিবন্ধ আজ প্রকাশিত হয়েছে আসিয়ান গোষ্ঠীভুক্ত ১০ দেশের ২৭টি সংবাদপত্রে। নয়াদিল্লিতে প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে আজ অতিথি ছিলেন ওই ১০ রাষ্ট্রপ্রধান। ‘এক মূল্যবোধ, এক গন্তব্য’ শীর্ষক ওই নিবন্ধে মোদী লিখেছেন, ‘‘আজ শীতের সকালে ১২৫ কোটি মানুষের দেশ বন্ধুত্বের বাঁধনে জড়িয়ে নিল দশ সম্মাননীয় অতিথিকে। এ এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণ। ভারত-আসিয়ানের মিলিত জনসংখ্যা ১৯০ কোটি, বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় চার ভাগের এক ভাগ। এই দুরন্ত পথচলা বিরাট সম্ভাবনা তৈরি করেছে।’’

প্রধানমন্ত্রীর মতে, ভারত-আসিয়ান সম্পর্কের বয়স ২৫ বছর হলেও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ দু’হাজার বছরেরও বেশি পুরনো। শান্তি, বন্ধুত্ব, ধর্ম, সংস্কৃতি শিল্প, বাণিজ্য, ভাষা, সাহিত্য— দুই অঞ্চলের সবেতেই তাই বৈচিত্রের মধ্যেও এক আত্মীয়তার প্রলেপ দেখা যায়। দশ আসিয়ান দেশে প্রায় ষাট লক্ষ ভারতীয় বংশোদ্ভূত রয়েছেন। নয়ের দশকের আর্থিক সংস্কারের প্রসঙ্গ টেনে মোদী লিখেছেন, ‘‘দু’দশকেরও বেশি আগে ভারত বিশ্বকে তার দরজা খুলে দিয়েছিল। নানা ক্ষেত্রে আদান-প্রদানের পুরনো ঐতিহ্যের সূত্রে স্বাভাবিক ভাবেই পুবের দিকে তাকিয়েছে ভারত। শুরু হয়েছে সম্পর্কের নতুন অধ্যায়। আসিয়ান হোক বা পূর্ব এশিয়া— ভারতের অধিকাংশ বাজার ও বাণিজ্যিক সঙ্গী তো পূর্বেই রয়েছে।

আসিয়ানের প্রতিটি সদস্য দেশের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা বিষয়ক সহযোগিতা রয়েছে বলে মোদীর দাবি। এই সূত্রেই ফের নাম না করে দক্ষিণ চিন সাগরে চিনা আধিপত্যের বিষয়টি টেনেছেন তিনি। বলেছেন, ‘‘নিজেদের সমুদ্রকে নিরাপদ ও সুরক্ষিত রাখতে আমরা একসঙ্গে কাজ করব।’’ তাঁর বক্তব্য, আয়তন যা-ই হোক, সার্বভৌমত্বের নিরিখে সব দেশ সমান।

মোদী জানিয়েছেন, ভারতের চতুর্থ বৃহত্তম বাণিজ্য-সঙ্গী হল আসিয়ান। বিদেশে মোট ভারতীয় লগ্নির ২০ শতাংশেরও বেশি হয়ে থাকে এই দেশগুলিতে। একই ভাবে আসিয়ানের বাণিজ্য-শরিকের তালিকায় সপ্তম স্থানে রয়েছে ভারত। আসিয়ানের সঙ্গেই দিল্লির সবচেয়ে পুরনো মুক্ত-বাণিজ্য চুক্তিটি রয়েছে। সিঙ্গাপুরকে আসিয়ানের ‘দরজা’ বলেছেন মোদী। জানিয়েছেন, ১৬টি ভারতীয় শহর থেকে ২৪০টিরও বেশি উড়ান প্রতি সপ্তাহে সিঙ্গাপুরে যায়। পর্যটনের পাশাপাশি সিঙ্গাপুর ভারতের গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত ও বাণিজ্যিক সঙ্গী। মোদীর কথায়, ‘‘যোগাযোগ বাড়বে। বাণিজ্যও। আমাদের রাজ্যগুলিও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াচ্ছে। ভারত-আসিয়ান নিয়ে আমাদের স্বপ্নের সেতু হয়ে উঠতে পারে উত্তর-পূর্ব ভারত।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE