সালাউদ্দিন সালেহিন।
ভাল ব্যাটসম্যানকে আউট করার সুযোগ এক বার ফস্কালে মুশকিল। বেঁচে গিয়ে সে রানের পাহাড় গড়ে বোলারদের দুশ্চিন্তায় ফেলে দেয়। জঙ্গিদের সন্দেহভাজন মাথা, বাংলাদেশের নাগরিক সালাউদ্দিন সালেহিনকে নিয়ে তেমনই দুশ্চিন্তায় এখন ভারতীয় গোয়েন্দারা।
গত বছর সেপ্টেম্বরে বেঙ্গালুরুতে সে অল্পের জন্য কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাদের হাত ফস্কে পালায়। তার পর থেকে আর সালাউদ্দিনের হদিস পাচ্ছেন না গোয়েন্দারা। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র এক সূত্রের দাবি, সালাউদ্দিন এখন দক্ষিণ ভারতে। কিন্তু কোথায়, সেটা তাঁরা নির্দিষ্ট ভাবে জানতে পারছেন না। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, সালাউদ্দিন সালেহিনই এখন জেএমবি (জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ)-র আমির তথা সর্বময় প্রধান। জুলাইয়ে হাতকাটা নাসিরুল্লা ধরা পড়ার পরে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) ও এনআইএ-র অফিসাররা বাংলাদেশে গেলে সে দেশের পুলিশ জানায়, সালাউদ্দিনকে হাতে পাওয়াটা তাদের পক্ষে জরুরি। বাংলাদেশে সে ফাঁসির আসামি। আবার ভারতে খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলাতেও সে অভিযুক্ত।
জেএমবি-র ছ’জন পাণ্ডা গত বছর সেপ্টেম্বরে কলকাতা পুলিশের এসটিএফের হাতে ধরা পড়ে। তাদের জেরা করে সালাউদ্দিনের বেঙ্গালুরুর একটি ডেরার সন্ধান পাওয়া যায়। তবে গোয়েন্দারা সেখানে পৌঁছনোর ঠিক আগে সালাউদ্দিন পালিয়ে যায়। এনআইএ-র দাবি, সালাউদ্দিনের সঙ্গে রয়েছে খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলার আর এক অভিযুক্ত, বীরভূমের নানুর এলাকার যুবক মুস্তাফিজুর রহমান ওরফে তুহিন এবং সে-ই সালাউদ্দিনের লুকিয়ে থাকার বন্দোবস্ত করে দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: মণিপুরে রাখি নিয়ে ভুয়ো নির্দেশে ভয়
এনআইএ-র এক কর্তার কথায়, ‘‘সালাউদ্দিনকে ধরা না-গেলে ভয় শুধু আমাদেরও।’’ তাঁর ব্যাখ্যা, গত বছর সেপ্টেম্বরে জেএমবি-র ছ’জনকে গ্রেফতার করার পর কলকাতা পুলিশ জেনেছিল, তারা উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ ভারতে নাশকতা ঘটানোর পরিকল্পনা করেছিল। তবে গোয়েন্দাদের দাবি, সালাউদ্দিন অধরা থাকা মানে এখানে নাশকতার ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।
ভারতীয় গোয়েন্দাদের ভাবিয়ে তুলেছে ‘সাহম আল হিন্দ’ নামে সন্ত্রাসবাদী বার্তা প্রচারের একটি ওয়েবসাইট ও চ্যানেলকে দেওয়া সালাউদ্দিনের সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকার।
জুলাইয়ে প্রচারিত ওই সাক্ষাৎকারে সালাউদ্দিনের ইঙ্গিত, ভারতে জেএমবি সাংগঠনিক প্রচার ও একই সঙ্গে বিভিন্ন নাশকতা ঘটানোর পরিকল্পনা করেছে। ভারতকে সে ওই সাক্ষাৎকারে ‘হিন্দুস্থান’ নামে উল্লেখ করেছে। সালাউদ্দিন ওই সাক্ষাৎকারে দাবি করেছে— তাদের কার্যকলাপ বাংলাদেশে শুরু হয় বলে গোড়ায় সংগঠনের নাম ছিল ‘জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ’ বা জেএমবি। পরবর্তী কালে ভারতে সংগঠনের শাখা তৈরি হয় জেএমআই বা ‘জামাতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়া’ নাম দিয়ে। সালাউদ্দিনের দাবি, এখন তাদের সংগঠন আরও কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে যাওয়ায় মূল সংগঠনের নাম বদলে হয়েছে জেএম।
এনআইএ-র এক কর্তার কথায়, ‘‘সালাউদ্দিন এখন তামিলনাড়ু বা কেরলের কোথাও আছে। কর্নাটকের একটি ডেরার হদিস কলকাতা পুলিশ জেনে যাওয়ায় সে আর ওই রাজ্যে যাচ্ছে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy