Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

রিসর্টে হানা আয়করের

গুজরাতে রাজ্যসভার ভোটে আহমেদ পটেলকে হারানোর জন্য মোদী-অমিত শাহ ‘যুদ্ধ’ই ঘোষণা করেছেন বলে মনে করছে কংগ্রেস। গুজরাত বিধায়কদের কাছে পৌঁছতে কী ফন্দি আঁটলেন মোদীরা?

আয়কর বিভাগ। —ফাইল চিত্র।

আয়কর বিভাগ। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৭ ০৫:৩৩
Share: Save:

কংগ্রেস বিধায়কদের গুজরাতে রাখলে অমিত শাহ তাঁদের ভাঙিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ। ‘নিরাপদে’ রাখতে তাঁদের তাই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বেঙ্গালুরুর রিসর্টে। কিন্তু আজ সকালে ওই রিসর্টেই গটগটিয়ে ঢুকে পড়লেন আয়কর দফতরের অফিসারেরা। সঙ্গে একে-৪৭ হাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী।

গুজরাতে রাজ্যসভার ভোটে আহমেদ পটেলকে হারানোর জন্য মোদী-অমিত শাহ ‘যুদ্ধ’ই ঘোষণা করেছেন বলে মনে করছে কংগ্রেস। জয়রাম রমেশ আজ তাই বলে ফেললেন, ‘‘এ তো ‘তানাশাহি’ নয়, দেশে চলছে ‘অমিতশাহি’।’’ আর খোদ আহমেদ পটেলের কটাক্ষ, ‘‘একটি আসন দখল করতে নজিরবিহীন ভাবে ডাইনি খুঁজতে (উইচ-হান্টিং) নেমেছে বিজেপি।’’

গুজরাত বিধায়কদের কাছে পৌঁছতে কী ফন্দি আঁটলেন মোদীরা?

যে রিসর্টে কংগ্রেসের বিধায়কদের রাখা হয়েছে, তার তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে ছিলেন কংগ্রেসশাসিত কর্নাটকের মন্ত্রী ডি কে শিবকুমার। গত ক’দিন ধরে ওই রিসর্টেই গুজরাতের বিধায়কদের সঙ্গে আছেন তিনি।

আজ সকাল থেকে দিল্লি-সহ দেশের ৬০টি জায়গায় শিবকুমারের বিরুদ্ধে আয়কর হানা শুরু হয়। তাঁকে ধরতে সেই রিসর্টে পৌঁছে যান আয়কর অফিসারেরা। রাজ্যকে না জানিয়েই রিসর্ট ঘিরে ফেলে সিআরপি।

কংগ্রেসের অভিযোগ, তাদের চার গুজরাতি বিধায়ককে ঘর থেকে বার করে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রশ্ন করা হয়, তাঁরা এখানে কেন? দলীয় নেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে বলেন, ‘‘এই হানা ১৫ দিন আগেও করা যেত, ১৫ দিন পরে হলেও ক্ষতি ছিল না। বেছে বেছে এই সময়ে এই রিসর্টেই হানা দেওয়ার আসল উদ্দেশ্য স্পষ্ট। যখন বিধায়ক আর ভাঙাতে পারছেন না মোদী-অমিত শাহ, তখন তাঁদের ভয় দেখাতে পৌঁছে গিয়েছেন আয়করের বাহানায়। তাতেও লাভ নেই। আহমেদ পটেল জিতবেনই।’’

এই নিয়ে সংসদের দুই সভায় হল্লা হয় বিস্তর। সংসদ অচলও করে রাখে কংগ্রেস। চাপের মুখে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি (যাঁর অধীনেই আয়কর দফতর) যুক্তি দেন, আয়কর হানা হয়েছে কর্নাটকের মন্ত্রীর বিরুদ্ধে। ঘটনাচক্রে তিনি লুকিয়ে ছিলেন ওই রিসর্টেই। যাঁর বিরুদ্ধে হানা, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই হয়। রিসর্টে গিয়ে দেখা যায়, সেই মন্ত্রী কাগজ ছিঁড়ছেন। তার পরে রিসর্ট থেকে তাঁকে বাড়ি আনা হয়। দিনের শেষে আয়কর দফতর জানায়, এগারো কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে মন্ত্রীর ডেরা থেকে। সংসদীয় মন্ত্রী অনন্ত কুমার দাবি করেন, রিসর্টটি শিবকুমারের পরিবারেরই মালিকানাধীন। কর ফাঁকি দিয়েছে রিসর্টটিও।

জেটলি দাবি করেন, এই হানার সঙ্গে গুজরাতের বিধায়কদের কোনও সম্পর্ক নেই। তাঁদের কারও সঙ্গেই যোগাযোগ করেননি আয়কর অফিসারেরা। জয়রাম বলেন, ‘‘মিথ্যা কথা বলছেন জেটলি। অতীতেও বলেছেন। প্রয়োজনে সংসদে স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ আনা হবে তাঁর বিরুদ্ধে।’’ তাঁর অভিযোগ, একটি আসন জিততে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে শিকেয় তুলেছেন মোদী-অমিত। কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে গণতন্ত্রের। গুলাম নবি আজাদ এ দিন কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘বিধায়ক কেনার অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে আর আয়কর হানা হচ্ছে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে!’’ ভয় দেখানোর অভিযোগ তুলে আজ নির্বাচন কমিশনেও অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। কেন্দ্রের কাছে রিপোর্ট চেয়েছে কমিশন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy