ডি কে শিবকুমার। ছবি: সংগৃহীত।
গুজরাত থেকে উড়িয়ে নিয়ে আসা হয়েছিল ৪৪ জন কংগ্রেস বিধায়ককে। কর্নাটকে সেই বিধায়কদের দায়িত্বে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ডি কে শিবকুমার। এ বার সেই বিদ্যুৎমন্ত্রীর বিরুদ্ধেই অভিযান চালাল আয়কর দফতর। বেঙ্গালুরু, মহীশূর-সহ কর্নাটকের ৩৯টি জায়গাতেই শুধু নয়, শিবকুমারের দিল্লির বাড়িতেও তল্লাশি চালায় তারা। এর পরেই শুরু হয় অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের পালা। কংগ্রেসের দাবি, এর পিছনে রয়েছে বিজেপি-র প্রতিহিংসাপরায়ণতার রাজনীতি। বিজেপি-র যদিও পাল্টা দাবি, দুর্নীতি দমন করতেই এই অভিযান চালানো হয়েছে।
বুধবার সকাল ৭টা নাগাদ আয়কর দফতরের আধিকারিকেরা কর্নাটকের ৩৯টি জায়গায় তল্লাশি অভিযান শুরু করেন। সঙ্গে ছিলেন সিআরপিএফ জওয়ানেরা। মোট ১২০ জনের একটি দল গোটা রাজ্যে অভিযান চালায়। বেঙ্গালুরুর অদূরে যে বেসরকারি রিসর্টে গুজরাতের ৪৪ জন কংগ্রেস বিধায়ককে রাখা হয়েছিল, সেখানেও শিবকুমারের ঘরে তল্লাশি চালান আধিকারিকেরা। সেখান থেকে মন্ত্রীকে তাঁর বাড়িতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, শিবকুমারের দিল্লির বাড়ি থেকে সাড়ে ৭ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে।
আরও পড়ুন
নীতীশের মন্ত্রিসভার ২৯ জন বিধায়কের মধ্যে ২২ জনের বিরুদ্ধেই রয়েছে ফৌজদারি মামলা!
আয়কর দফতরের কর্তারা একে নিয়মমাফিক তদন্তের অঙ্গ হিসেবে দাবি করলেও, তা মানতে নারাজ কংগ্রেস নেতৃত্ব। বরং এই অভিযানকে বিজেপি-র প্রতিহিংসাপরায়ণ মনোভাব দেখছেন তাঁরা। গুজরাত থেকে রাজ্যসভার কংগ্রেস প্রার্থী আহমেদ পটেল টুইটারে দাবি করেন, “রাজ্যসভার একটা আসন জেতার জন্যই এ ধরনের অভূতপূর্ব ‘উইচ-হান্ট’ শুরু করেছে বিজেপি।”
আহমেদ পটেলের টুইট
BJP is on an unprecedented witch-hunt just to win one Rajya Sabha seat
— Ahmed Patel (@ahmedpatel) August 2, 2017
এ দিন গোটা ঘটনা নিয়ে সংসদে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন, ‘‘ওই বিধায়কেরা নন, আয়কর দফতরের নিশানায় আসলে ছিলেন ওই মন্ত্রী। তাঁর বিরুদ্ধেই অভিযান চালানো হয়েছে। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।’’
রাজ্যসভার নির্বাচনের আগে বিজেপি যাতে তাঁদের বিধায়কদের দল ভাঙিয়ে নিয়ে যেতে না পারে সে জন্য গত সপ্তাহেই উদ্যোগী হয় কংগ্রেস। ৩০ জুলাই গুজরাতের ৪৪ জন কংগ্রেস বিধায়ককে উড়িয়ে আনা হয় পাশের রাজ্য কর্নাটকে। সেখানে তাঁদের থাকার বন্দোবস্ত করা হয় বেঙ্গালুরুর ওই রিসর্টে। গুজরাতের কংগ্রেস বিধায়ক শক্তি সিংহ গোহিলের দাবি, রাজ্যসভা নির্বাচনের আগে তাঁদের দেড় কোটি টাকা ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা করে বিজেপি। এমনকী, গুজরাতে তাঁদের বিধায়কদের পরিবারকেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। গোহিলের আরও দাবি, সিবিআই, ইডি-কে দিয়েও চাপ তৈরি করছে বিজেপি।
আরও পড়ুন
অশ্লীল মেসেজ পাঠান ইমরান, অভিযোগে দল ছাড়লেন নেত্রী
বেঙ্গালুরু রিসর্টে বিধায়কদের দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন কর্নাটক কংগ্রেসের প্রভাবশালী নেতা তথা রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শিবকুমার। তিনি বলেন, “এ বিষয়ে আমার সাহায্য চেয়েছিল দল। দলের স্বার্থে আমি তা-ই করেছি। ওই বিধায়কেরা যাতে সুরক্ষিত থাকেন এবং সেই সঙ্গে রাজ্যসভা থেকে যাতে আমাদের প্রার্থীই জেতেন সেটাও নিশ্চিত করব আমরা।” তিনিও এই অভিযানের পিছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধি রয়েছে বলেই দাবি করেছেন।
আরও পড়ুন
সত্য, কী বিচিত্র দল এই সিপিএম!
বিধায়ক ‘চুরি’ করে দল ভাঙানোর অভিযোগ এর আগেই অস্বীকার করেছিলেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। এ দিন বিজেপি নেতা জি ভি এল নরসিংহ রাওয়ের গলাতেও প্রায় একই সুর শোনা গিয়েছে। তিনি বলেন, “দুর্নীতির বিরদ্ধে তদন্তকারী সংস্থাগুলির অভিযানকে বিজেপি-র প্রতিহিংসাপরায়ণতা আখ্যা দেওয়া কংগ্রেসের কাছে ফ্যাশনেবল হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy