Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

ফলের আশা না-করেই অনন্য ফল

প্রথম হওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে নয়। নিজের সেরাটা দেওয়ার সঙ্কল্প করেই পড়াশোনা করেছেন তিনি। কোনও গৃহশিক্ষক রাখেননি। ভরসা করেছেন স্কুলের শিক্ষকদের উপরেই। তাতেই আইএসসি পরীক্ষায় দেশের মধ্যে সেরা হলেন আনন্দপুরের হেরিটেজ স্কুলের ছাত্রী অনন্যা মাইতি।

অনন্যা মাইতি ও দেবশ্রী পাল

অনন্যা মাইতি ও দেবশ্রী পাল

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৭ ০৪:৩৯
Share: Save:

প্রথম হওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে নয়। নিজের সেরাটা দেওয়ার সঙ্কল্প করেই পড়াশোনা করেছেন তিনি। কোনও গৃহশিক্ষক রাখেননি। ভরসা করেছেন স্কুলের শিক্ষকদের উপরেই। তাতেই আইএসসি পরীক্ষায় দেশের মধ্যে সেরা হলেন আনন্দপুরের হেরিটেজ স্কুলের ছাত্রী অনন্যা মাইতি।

সোমবার সন্ধ্যায় স্কুলের কনফারেন্স রুমে গীতার ‘মা ফলেষু’ বাণী মনে পড়িয়ে দিলেন অনন্যা। বললেন, ‘‘পরীক্ষার ফল শুধুই পড়াশোনার উপরে নির্ভর করে না। ভাগ্যও অনেকটা কাজ করে। তাই ফলের আশা না-করে নিজের সেরাটা দিয়ে পড়াশোনা করা উচিত।’’

ইংল্যান্ড থেকে এসে চতুর্থ শ্রেণিতে হেরিটেজ স্কুলে ভর্তি হন অনন্যা। রাজ্যে যখন প্রাইভেট টিউশন ‘স্বাভাবিক’ বিষয় হয়ে গিয়েছে, সেখানে অনন্যা বলছেন, ‘‘স্কুলের শিক্ষকদের কাছ থেকে যা পেয়েছি, তাতে আলাদা করে কোনও গৃহশিক্ষকের প্রয়োজন হয়নি।’’

বাবা চিন্ময় মাইতি পেশায় চিকিৎসক। শান্তিনিকেতনে ছুটি কাটিয়ে থেকে এ দিনই বাড়ি ফিরেছেন। স্কুলের অধ্যক্ষা সীমা সাপ্রু ফোনে সুখবর দেন। সমাজবিজ্ঞান বা মনস্তত্ত্ব নিয়ে পড়তে চান তাঁর মেয়ে।

আরও পড়ুন: মাওবাদীদের রোষে এ বার অক্ষয়-সাইনা

ঘরের দেওয়াল, আলমারির ডালা, জানলার পাল্লা ভরে রয়েছে চকের আঁকিবুকিতে। ছবি নয়। সমীকরণ আর প্রবলেম। আইসিএসই-তে দ্বিতীয় হওয়া দেবশ্রী পালের বাড়ি এমনই অঙ্কে ভরা। অজস্র গৃহশিক্ষক নয়। দিন-রাত পড়াশোনা করাও নয়। শুধু বই পড়তে ভাল লাগার টানে আর মনের মতো পরীক্ষা দিয়ে ৯৯ শতাংশ নম্বর পেয়েছে দেবশ্রী। তার বাবা কল্যাণ পালও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক। বড় হয়ে ‘ডাক্তার’ হতে চায় দেবশ্রী।

আইএসসি পরীক্ষায় সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজিয়েট স্কুল থেকেই শীর্ষ তালিকায় রয়েছেন তিন জন। দেশের মধ্যে অন্যতম দ্বিতীয় এই স্কুলের দেবেশ লাখোটিয়া চান চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হতে। অথবা পড়তে চান এমবিএ। ২০১৫ সালে সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল থেকে আইসিএসই-তে যুগ্ম প্রথম হয়েছিলেন সৌগত চৌধুরী। আইএসসি-তে এ বার তিনি তৃতীয়। সৌগত বললেন, ‘‘দু’বছর আগেকার সেই মান ধরে রাখতে পেরে ভাল লাগছে।’’ আর এক তৃতীয়, সেন্ট জেভিয়ার্সের অনন্ত কোঠারি সেপ্টেম্বরে হারিয়েছেন বাবাকে। এ দিনের আনন্দেও তাই কান্না চেপে রাখতে পারেননি তিনি। বললেন, ‘‘মা আমার অনুপ্রেরণা।’’ চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হওয়াই তাঁর লক্ষ্য, জানালেন অনন্ত।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE