Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

‘কর্তব্য’ করায় মহিলা পুলিশ অফিসার বদলি

ঘটনাটি গত সপ্তাহের। বিনা হেলমেটে মোটরবাইক চালানোয় স্থানীয় বিজেপি নেতা প্রমোদ লোধিকে আটক করেছিলেন বুলন্দশহর জেলার সিয়ানা সার্কেলের অফিসার শ্রেষ্ঠা ঠাকুর। সে দিন সিয়ানা এলাকায় গাড়ি চলাচল পরীক্ষা করছিলেন শ্রেষ্ঠা।

বুলন্দশহর জেলার সিয়ানা সার্কেলের অফিসার শ্রেষ্ঠা ঠাকুর। ছবি: সংগৃহীত।

বুলন্দশহর জেলার সিয়ানা সার্কেলের অফিসার শ্রেষ্ঠা ঠাকুর। ছবি: সংগৃহীত।

সংবাদ সংস্থা
লখনউ শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৭ ০২:৪৮
Share: Save:

বিনা হেলেমেটে বাইকে চড়ে ঘুরে বেড়ানো এক বিজেপি নেতাকে আটক করে জরিমানা করেছিলেন তিনি। সেই ‘অপরাধে’ উত্তরপ্রদেশের এক মহিলা পুলিশ অফিসারকে বদলি করল যোগী আদিত্যনাথের সরকার। রাম-রাজ্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসা যোগী সরকারের এই পদক্ষেপ ঘিরে শুরু হয়েছে তুমুল সমালোচনা।

ঘটনাটি গত সপ্তাহের। বিনা হেলমেটে মোটরবাইক চালানোয় স্থানীয় বিজেপি নেতা প্রমোদ লোধিকে আটক করেছিলেন বুলন্দশহর জেলার সিয়ানা সার্কেলের অফিসার শ্রেষ্ঠা ঠাকুর। সে দিন সিয়ানা এলাকায় গাড়ি চলাচল পরীক্ষা করছিলেন শ্রেষ্ঠা। বিজেপি নেতার কাছে গাড়ির কাগজপত্রও ছিল না। এই সব কারণে প্রমোদকে ২০০ টাকা জরিমানা করতেই সমস্যার শুরু। নিজের রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে জরিমানা দিতে অস্বীকার করেন প্রমোদ। তাঁর স্ত্রী যে বুলন্দশহর জেলা পঞ্চায়েতের সদস্য, পুলিশকে তা-ও জানান। বিষয়টি নিয়ে প্রমোদের সঙ্গে বচসা বেধে যায় শ্রেষ্ঠার। প্রমোদ ফোন করে ডেকে আনেন কিছু বিজেপি কর্মীকে। শুরু হয়ে যায় ধমক-শাসানি। বিজেপি নেতা-কর্মীদের এই দাদাগিরির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান শ্রেষ্ঠা। ঘটনাস্থলে আসেন সিয়ানা শহর শাখার বিজেপি সভাপতি মুকেশ ভরদ্বাজ। তাঁদের সঙ্গে শ্রেষ্ঠা এবং অন্য পুলিশকর্মীদের তীব্র বচসা বেধে যায়।

দু’পক্ষের এই তুমুল বচসার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ভাইরাল’ হয়ে যায়। ভিডিও-তে শ্রেষ্ঠাকে বলতে শোনা যায়, ‘‘যান মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে লিখিত নির্দেশ নিয়ে আসুন, পুলিশের গাড়ি পরীক্ষা করার কোনও অধিকার নেই।’’ অবশেষে প্রমোদের কাছ থেকে ২০০ টাকা জরিমানা আদায়ের পাশাপাশি পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার জন্য পাঁচ জন বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতারও করেন শ্রেষ্ঠা।

সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ছবি ভাইরাল হতেই বিতর্ক শুরু। অনেকেই শ্রেষ্ঠার প্রশংসার পাশাপাশি যোগী-রাজ্যে বিজেপির দাদাগিরির বিরুদ্ধে সরব হন। আঁতে ঘা লাগে বিজেপি নেতা-কর্মীদের। ১১ জন বিধায়ক ও এক সাংসদ-সহ বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে নালিশও করেন। এর পরেই শ্রেষ্ঠাকে বাহরাইচে বদলি করা হয়। প্রশাসন জানিয়েছে, এটি রুটিন বদলি। এর পিছনে কোনও রাজনৈতিক চাপ নেই। কিন্তু দলের নেতাদের ‘মর্যাদা রক্ষার’ জন্যই শ্রেষ্ঠাকে বদলি করা হয়েছে বলে মেনেছেন ভরদ্বাজ।

শ্রেষ্ঠা কী বলছেন? তাঁর কথায়, ‘‘পরিবার থাকে দিল্লিতে। আমাকে বাড়ি থেকে আরও দূরে বদলি করা হলো। তবে এটা কাজের অঙ্গ।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE