Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

রেস্তোরাঁর প্লেটেও কি মোদীর রেশন!

গান বলেছিল, ‘কেউ যদি বেশি খাও, খাবার হিসেব নাও, কেননা অনেক লোক ভাল করে খায় না।’ রেস্তোরাঁ-হোটেলের প্লেটে খাবারের ভাগ বেঁধে দেওয়ার ইঙ্গিত সত্যিই িদল কেন্দ্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৭ ০৪:২৯
Share: Save:

গান বলেছিল, ‘কেউ যদি বেশি খাও, খাবার হিসেব নাও, কেননা অনেক লোক ভাল করে খায় না।’ রেস্তোরাঁ-হোটেলের প্লেটে খাবারের ভাগ বেঁধে দেওয়ার ইঙ্গিত সত্যিই িদল কেন্দ্র।

খাবারের অপচয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী খুবই উদ্বিগ্ন। তাই এই দাওয়াই। যদিও দেশের প্রথম সারির হোটেল-রেস্তোরাঁর কর্তারা এটা অনধিকার চর্চা বলেই মনে করছেন। বড়লোকের রেস্তোরাঁয় খাবার নষ্ট হওয়াটা গরিবের উপরে অবিচার বলে ক’দিন আগেই ‘মন কি বাত’-এ বলেছেন মোদী। তারই সূত্র ধরে মঙ্গলবার খাদ্য ও গণবণ্টন মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ানের ঘোষণা, মেনু প্লেটে খাবারের পরিমাণ বেঁধে দেওয়া নিয়ে কথা বলতে ডাকা হবে হোটেল-রেস্তোরাঁর কর্তাদের। ফ্রান্স, জার্মানি, স্কটল্যান্ডের মতো অনেক জায়গাতেই খাবার নষ্ট রুখতে নির্দিষ্ট ব্যবস্থা আছে। খাবার নষ্ট করলে জরিমানাও নেওয়া হয় কোথাও কোথাও। তবে রেস্তোরাঁগুলো তাদের প্লেটে কতখানি খাবার দেবে, সেটা রেশন করে দেওয়ার ভাবনাটা কিছুটা নতুন। আর বিতর্ক বেধেছে সেখানেই।

রামবিলাসের দাবি, ‘‘লোকের দু’টো চিংড়ি বা ইডলি খেয়েই পেট ভরে। ৬-৭টা করে দেওয়ার কী দরকার? লোকের পকেটেও এতে টান পড়ছে।’’ যুক্তি মানতে নারাজ ন্যাশনাল রেস্তোরাঁ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া’র কর্তারা। তাদের সহ-সভাপতি অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘সরকার খোলসা করে বলার পরেই যা পদক্ষেপ করার করব।’’

সচেতনতার পাঠ।

সরকারি সমীক্ষা বলছে, এ দেশে বছরে ৯২ কোটি ৬৫১ কোটি টাকার খাবার নষ্ট হয়। যা দিয়ে বিহারের মতো রাজ্যকে সারা বছর খাওয়ানো যেতে পারে। টাটা সংস্থার ক্যান্টিনগুলি যেমন মেপে খাওয়াতেই উৎসাহ দেয়। কিন্তু রেস্তোরাঁ-কর্তারা বলছেন, ভোজবাড়িতে অপচয় হয়, রেস্তোরাঁ-হোটেলে নয়। অঞ্জনবাবুর কথায়, ‘‘রেস্তোরাঁয় ক’জন লোক আসতে পারেন তা মেপেজুপেই রান্না হয়। বাড়তি খাবার কর্মচারীদের মধ্যে ভাগাভাগি হয়।’’ তাঁর মতে, রেস্তোরাঁর খাবারের মাপ ঠিক করাটা সরকারের এক্তিয়ারের বাইরে। দক্ষিণ কলকাতার একটি রেস্তোরাঁ ম্যানেজার কল্লোল বন্দ্যোপাধ্যায়ও বললেন, ‘‘মানুষের খাবারের মাপ চাপিয়ে দিলে তো মুশকিল।’’ রামবিলাস অবশ্য বলছেন, ‘থালি’তে হস্তক্ষেপ করা হবে না। যা হবে আ-লা-কার্ট প্লেটেই হবে।

আরও পড়ুন:​ কুলভূষণকে বাঁচাবোই, গর্জন ভারতের

রসিক খাইয়েদের কেউ কেউ ভাবছেন, কমসম করে বেশি পদ চাখা গেলে মন্দ কী! পোড় খাওয়া স্বাদ-সন্ধানী রাম রায় বলছেন, খাবারের ভাগে বাঁধাধরা মাপই যুক্তিসঙ্গত। তাতে কি দাম কমবে? পার্ক স্ট্রিটে স্টেক-রোস্টের জনপ্রিয় ঠিকানার ম্যানেজার আব্দুল মজিদের মতে, ‘‘বেশি খাবার কম দামে দেওয়া যায়, উল্টোটা নয়।’’ কেন? পূর্ব ভারতের হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি সুদেশ পোদ্দার বোঝালেন, ‘‘দু’টুকরো চিকেনের বদলে এক টুকরো দিলে দাম অর্ধেক হবে না। এসি, বিদ্যুৎ, গ্যাসের খরচ তো থাকবেই!’’

অন্য বিষয়গুলি:

food wastage Government
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE