Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
National News

মন ছুঁয়ে গিয়েছে মোদীর শেষ চিঠি, ১০ দিন পেরিয়ে আপ্লুত টুইট প্রণবের

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছ থেকে ২৪ জুলাই যে চিঠি পেয়েছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়, সেই চিঠি তাঁর মন ছুঁয়ে গিয়েছে বলে প্রণব বাবু জানালেন। টুইটারে প্রকাশও করলেন চিঠিটি।

প্রণব-মোদীর ব্যক্তিগত সম্পর্কের উষ্ণতাটা টের পাওয়া গিয়েছিল বিদায়ী রাষ্ট্রপতির সম্মানে হায়দরাবাদ হাউজে প্রধানমন্ত্রীর আয়োজিত সম্বর্ধনাতেও। ছবি: পিটিআই।

প্রণব-মোদীর ব্যক্তিগত সম্পর্কের উষ্ণতাটা টের পাওয়া গিয়েছিল বিদায়ী রাষ্ট্রপতির সম্মানে হায়দরাবাদ হাউজে প্রধানমন্ত্রীর আয়োজিত সম্বর্ধনাতেও। ছবি: পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৭ ১৬:৪৬
Share: Save:

আপ্লুত প্রণব মুখোপাধ্যায়। রাষ্ট্রপতিত্বের শেষ দিনে একটি চিঠি পৌঁছেছিল তাঁর কাছে, দু’পাতার চিঠি। সেই চিঠি এতটাই ছুঁয়ে গিয়েছে প্রণববাবুর মনকে যে অবসর নেওয়ার দিন দশেক পরেও চিঠির বয়ানের অনুরণন রয়ে গিয়েছে ক্ষুরধার রাজনীতিকের মগজে। চিঠিটি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রণব মুখোপাধ্যায়কে নিজের ‘পিতৃসুলভ ব্যক্তিত্ব’ বলে সেখানে উল্লেখ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। দিল্লির রাজনীতি যখন একেবারেই অচেনা ছিল তাঁর কাছে, তখন প্রণব বাবু কী ভাবে অভিভাবকের মতো পথ দেখিয়েছেন, মোদী সে কথা অকপটে লিখেছেন চিঠিতে। অভিভূত প্রণব মুখোপাধ্যায় আজ টুইটারে তুলে ধরেছেন শেষ দিনে পাওয়া সেই চিঠিটি।

‘‘রাষ্ট্রপতিত্বের শেষ দিনে আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছ থেকে একটা চিঠি পেয়েছি, যা আমার হৃদয়কে ছুঁয়ে গিয়েছে!’’ এই কথা লিখেই চিঠিটি টুইট করেছেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। সারা জীবন রাজনীতির অলিন্দে কাটানো কোনও ব্যক্তিত্বের জন্য অবসরের দিনে ওই রকম এক চিঠি পাওয়া যে সত্যিই আপ্লুত হওয়ার মতো বিষয়, তা চিঠির বয়ানে স্পষ্ট।

‘‘তিন বছর আগে আমি দিল্লিতে এসেছিলাম একজন বহিরাগত হিসেবে। আমার সামনে তখন বিপুল এবং চ্যালেঞ্জিং কাজ ছিল। সে সময় আপনি আমার পিতৃসুলভ ব্যক্তিত্ব এবং পরামর্শদাতা হয়ে উঠেছিলেন। আপনার জ্ঞান, পথপ্রদর্শন এবং ব্যক্তিগত উষ্ণতা আমাকে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস ও শক্তি জুগিয়েছিল।’’ লিখেছেন নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী যখন রাষ্ট্রপতিকে লেখা ব্যক্তিগত চিঠিতে তাঁকে ‘পিতৃসুলভ ব্যক্তিত্ব’, ‘পথপ্রদর্শক’ বা ‘পরামর্শদাতা’ হিসেবে আখ্যা দেন, তখন রাজনৈতিক সৌজন্যের অনবদ্য ছবি তো তৈরি হয়ই, দেশের সাংবিধানিক কাঠামোও অসামান্য সার্থকতা পায়। মনে করছেন সংবিধান বিশেষজ্ঞরা।

মোদীর চিঠিতে তাঁর সঙ্গে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত সম্পর্কের উষ্ণতাও কিন্তু ছত্রে ছত্রে ধরা পড়েছে। সেই উষ্ণতার ছাপ রাখতে সম্ভবত কিছুটা সচেতন ভাবেই প্রোটোকলের বেড়া ডিঙিয়ে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। চিঠিতে কোথাও কোথাও রাষ্ট্রপতিকে ‘প্রণবদা’ বলে সম্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। মোদী লিখেছেন, ‘‘প্রণবদা, আমাদের রাজনৈতিক যাত্রা রূপ পেয়েছে ভিন্ন রাজনৈতিক দলে। কখনও কখনও আমাদের মধ্যে আদর্শগত পার্থক্যও দেখা গিয়েছে। আমাদের অভিজ্ঞতাও আলাদা...। কিন্তু আপনার বুদ্ধিমত্তা এবং জ্ঞান এতই প্রখর যে আমরা সহযোগিতার ভিত্তিতেই কাজ করতে পেরেছি।’’

আরও পড়ুন: পানাগড়িয়ার প্রশ্নই চ্যালেঞ্জ প্রধানমন্ত্রীর

রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে যে সম্পর্ক থাকে, প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক শুধু সেটুকুতে সীমাবদ্ধ ছিল না বলে চিঠিতে ইঙ্গিত মোদীর। প্রণবের ‘ব্যক্তিগত উষ্ণতা’র উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন মোদী। স্মৃতিচারণের ঢঙে তিনি লিখেছেন, ‘‘মিটিঙে ঠাসা একটা লম্বা দিনের শেষে বা লম্বা প্রচার কর্মসূচির শেষে যখন আপনি ফোনে বলতেন, ‘আমি আশা করি আপনি আপনার স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখছেন’, তখন আমি নতুন করে শক্তি পেয়ে যেতাম।’’

চিঠির শেষ দিকে মোদী লিখেছেন, ‘‘আপনি এমন একটি প্রজন্মের নেতা, যাঁদের কাছে রাজনীতি হল স্বার্থহীন ভাবে সমাজের জন্য কাজ করার মাধ্যম।’’ যে কোনও রাজনীতিকের পক্ষেই এই রকম প্রশংসা অত্যন্ত শ্লাঘার বিষয়। মোদী লিখেছেন, ‘‘ভারত চিরকাল আপনার জন্য গর্ব করবে, একজন রাষ্ট্রপতি, যিনি ছিলেন একজন বিনম্র জনসেবক এবং একজন ব্যতিক্রমী রাজনৈতিক নেতা।’’

আরও পড়ুন: লালুর পর বিজেপির নিশানায় এ বার মমতা

রাষ্ট্রপতিকে লেখা চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর শেষ কথা— ‘‘রাষ্ট্রপতিজি, আপনার সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আপনার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাওয়া একটা সম্মান।’’

২৪ জুলাই এই চিঠি পৌঁছেছিল রাষ্ট্রপতি ভবনে। ৩ অগস্ট তা টুইটারে প্রকাশ করেছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। প্রণব মুখোপাধ্যায়ের এই টুইটের পর কিন্তু আপ্লুত নরেন্দ্র মোদীও। তিনিও টুইট করলেন। লিখলেন, ‘‘প্রণবদা, আপনার সঙ্গে কাজ করার স্মৃতি আমি চিরকাল লালন করব।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE