কাশ্মীরের জঙ্গলে বা শ্রীনগরের অলিগলিতে জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াই চলছেই। সঙ্গে রয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতাকে সামলানোর কাজও। কিন্তু ভূস্বর্গে গোয়েন্দা সংস্থা ও বাহিনীর অফিসারদের নয়া চিন্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার চালিয়ে উত্তেজনা ছড়ানোর জন্য দায়ী এক দল মানুষ। গোয়েন্দাদের পরিভাষায় এদের নাম ‘বেডরুম জেহাদি’। অর্থাৎ নিজের শোওয়ার ঘরের নিরাপত্তা থেকেই গোটা উপত্যকায় আগুন জ্বেলে দিতে পারে এই দুষ্কৃতীরা। ফলে সোশ্যাল মিডিয়া তথা ইন্টারনেটে একটা নয়া লড়াই লড়তে হচ্ছে প্রশাসনকে।
গোয়েন্দাদের আপাতত সবচেয়ে বড় মাথাব্যথা অমরনাথ যাত্রা। ২৯ জুন যাত্রা শুরু হওয়ার কথা। তার আগেই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে উপত্যকায় গোষ্ঠী সংঘর্ষ করানোর চেষ্টা হতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা। জম্মুতে গুজব ছড়িয়ে যাত্রা পণ্ড করার আশঙ্কাও রয়েছে।
পুলিশ অফিসারদের দাবি, কাশ্মীরে অশান্তির সময়ে অনেক বার হরতালের ডাক দিয়েছেন ক্লাস করতে না চাওয়া ছাত্র বা কাজ করতে না চাওয়া কর্মীরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় তা দাবানলের মতো ছড়িয়ে গিয়েছে। অনেক বার বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারাও বুঝতে পারেননি কবে হরতালের ডাক তাঁরা দিয়েছেন, কবে অন্য কেউ।
আরও পড়ুন: সুষমা-ছোঁয়ায় ভিসা, আপ্লুত পাক বাবা
তবে কেবল জেহাদি নয়, অন্য পক্ষও যে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব, অপপ্রচার ছড়াচ্ছে তা মেনে নিচ্ছেন প্রশাসনের কর্তারা। সম্প্রতি কুপওয়ারায় এক কনস্টেবলের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তিনি কাশ্মীরি পণ্ডিত সম্প্রদায়ের। তার পরে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের কয়েকটি গোষ্ঠী সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করে, জঙ্গিরাই ওই কনস্টেবলকে অপহরণ করে খুন করেছে। সেই প্রচারের জোর এতই ছিল যে জঙ্গিদের হাতে কনস্টেবলের অপহরণ নিয়ে তদন্তও শুরু হয়ে যায়। পরে খোদ জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডিজি এস পি বৈদ্যের তৈরি বিশেষ তদন্তকারী দলের অনুসন্ধানে জানা যায়, নিহত কনস্টেবল এক সহকর্মীকে যৌন নির্যাতন করেছিলেন। সেই সহকর্মীই তাঁকে খুন করেছেন।
অন্য দিকে, শুক্রবারের প্রার্থনার পরে ফের জনতা-পুলিশ সংঘর্ষ হলো কাশ্মীরে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রার্থনার পরে জামিয়া মসজিদের সামনে আজাদির পক্ষে স্লোগান দিতে শুরু করে এক দল যুবক। তার পরেই হঠাৎ শুরু হয় পাথর ছোড়া। বিক্ষোভকারীদের হটাতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাসের শেলও। কেউ হতাহত হয়নি। বিক্ষোভ হয়েছে বারামুলা ও অনন্তনাগেও। এ দিনই কাশ্মীরে বাহিনীর প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy